মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের স্ত্রী জিল বাইডেনকে চিঠি লিখেছেন ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রীর স্ত্রী সারা নেতানিয়াহু। এ চিঠিতে তিনি গাজা-ইসরায়েল যুদ্ধে বন্দী ইসরায়েলিদের বিষয়ে কথা বলেন।
সেখানে নেতানিয়াহুর স্ত্রী জানিয়েছেন, সামরিক অভিযান চালিয়ে হামাস যাদের বন্দী করেছে - তাদের মধ্যে ৩২ বছরের এক নারী বন্দী অবস্থাতেই এক সন্তানের জন্ম দিয়েছে। শুধু তা-ই নয়, সারা জানিয়েছেন, বন্দীদের মধ্যে ৩২জন বাচ্চা ছেলে-মেয়ে। দ্রুত তাদের মুক্তির জন্য জিল বাইডেনকে আবেদন জানাতে বলেছেন সারা। তাদের যৌথ আবেদনের ভিত্তিতে বন্দীদের যাতে মুক্ত করা যায়, সে কথা চিঠিতে জানিয়েছেন তিনি।
বিজ্ঞাপন
গাজায় আর 'মানবিক প্যাসেজ'-এ রাজি নয় ইসরায়েল
জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদ দ্রুত লড়াই থামিয়ে গাজায় আরও মানবিক প্যাসেজ তৈরির সিদ্ধান্ত নিয়েছিল। ইসরায়েল তা মানতে নারাজ। অর্থাৎ, ফিলিস্তিন-ইসরায়েল যুদ্ধ সহজে থামবে না।
মানবিক প্রয়োজনে দীর্ঘ যুদ্ধ বিরতির সিদ্ধান্তের কথা জানিয়েছিল জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদ। জাতিসংঘের বুধবার নেওয়া সেই সিদ্ধান্তের বিরোধিতা করেছে ইসরায়েল। তাদের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র নিওর হাইয়াত স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছেন, ২৩৯ জন পণবন্দীকে মুক্তি না দেওয়া পর্যন্ত ইসরায়েল লড়াই থামাবে না। আপাতত গাজায় নতুন কোনো করিডোর বা প্যাসেজ তৈরির প্রশ্ন ওঠে না বলেও জানিয়েছেন তিনি।
বিজ্ঞাপন
বস্তুত, জাতিসংঘের প্রস্তাবে বলা হয়েছিল, গাজা থেকে আহত, অসুস্থ মানুষ-সহ বেসামরিক ব্যক্তিদের বের করার জন্য আরও নতুন প্যাসেজ তৈরি করা হোক। এখন কেবলমাত্র মিসরের সীমান্তে একটি করিডোর ব্যবহার করা হচ্ছে। কিন্তু, তা দিয়ে মূলত বিদেশিদের বের করা হচ্ছে।
ইসরায়েল জানিয়েছে, এমন কোনো করিডোর তৈরি করার কোনো প্রশ্নই নেই এখন। প্রথমে পণবন্দীদের মুক্তি দিতে হবে, তারপরেই লড়াই বন্ধ করার বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। শুধু তাই নয়, ইসরায়েলের দাবি, জাতিসংঘের সিদ্ধান্তে হামাসের প্রসঙ্গ উল্লেখ করতে হবে। গাজা স্ট্রিপের নিরাপত্তা বিষয়ে আলোচনা করতে হবে। বিশেষজ্ঞদের বক্তব্য, গাজায় ইসরায়েলের আধিপত্য মেনে নেওয়ার কথাই ঘুরিয়ে বলতে চেয়েছে ইসরায়েল।
জাতিসংঘের প্রস্তাব নিয়েও বিতর্ক
বুধবার জাতিসংঘ যে প্রস্তাব পাশ করেছে, আমেরিকা, রাশিয়া এবং যুক্তরাজ্য-- যাদের হাতে ভেটো দেওয়ার শক্তি আছে, কেউই সেই ভোটে অংশ নেয়নি। মাল্টা এই প্রস্তাব টেবিলে রেখেছিল। বাকি ১২টি দেশ তা সমর্থন করেছে। আমেরিকার বক্তব্য ছিল, 'যুদ্ধবিরতি' শব্দটি ব্যবহার করা যাবে না। প্রস্তাবে হামাসের বিষয়েও কোনো কথা বলা হয়নি।
হাসপাতালে অভিযান
বুধবার ইসরায়েলি ডিফেন্স ফোর্স বা আইডিএফ জানিয়েছে তারা আল শিফা হাসপাতালে সুনির্দিষ্ট লক্ষ্যবস্তুকে কেন্দ্র করে অভিযান চালিয়েছে।
ওই অভিযানের সময় সেখানে থাকা বিবিসির একজন সংবাদদাতা কমান্ডোদের হাসপাতালের জরুরি বিভাগে প্রবেশের খবর নিশ্চিত করেছিলেন।
আরও পড়ুন: ফিলিস্তিনিদের হামলায় আরও ইসরায়েলি সেনা নিহত
এরপর সৈন্যরা প্রতিটি কক্ষে গিয়ে রোগী ও কর্মকর্তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করে এবং তরুণদের অনেককে জিজ্ঞাসাবাদ ও তল্লাশির জন্য পোশাক খুলে ফেলার নির্দেশ দেওয়া হয়।
এর প্রায় চৌদ্দ ঘণ্টা পর সৈন্যদের সেখান থেকে প্রত্যাহারের খবর পায় বিবিসি।
এদিকে জাতিসংঘ জানিয়েছে, বৃষ্টি ও ঠাণ্ডা আবহাওয়ার কারণে বিভিন্ন আশ্রয় শিবিরে থাকা লাখ লাখ বাস্তুচ্যুত মানুষ চরম দুর্ভোগে পড়েছে।
সূত্র : আল-জাজিরা, রয়টার্স, বিবিসি, এপি
এমইউ