শুক্রবার, ২০ সেপ্টেম্বর, ২০২৪, ঢাকা

বাইডেন-শির বৈঠকের বিষয়ে যা জানা গেল

আন্তর্জাতিক ডেস্ক
প্রকাশিত: ১৬ নভেম্বর ২০২৩, ১২:৫৯ পিএম

শেয়ার করুন:

বাইডেন-শির বৈঠকের বিষয়ে যা জানা গেল
বাইডেন ও শি জিনপিংয়ের বৈঠকের পরেও তাইওয়ান নিয়ে মতভেদ থেকে গেছে। ছবি: এপি

চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং ছয় বছর পর যুক্তরাষ্ট্র সফরে গিয়েছেন। সেখানে তিনি মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের সঙ্গে বৈঠক করেছেন। বৈঠকে চার ঘণ্টা ধরে কথা বলেন তারা। এরপর ঠিক হয়েছে যে দুই দেশের সামরিক পর্যায়ে আলোচনা শুরু হবে।

বাইডেন জানিয়েছিলেন, এই বৈঠকের আসল উদ্দেশ্য হলো, একে অপরকে ভালো করে জানা ও বোঝা। আর তার জন্য মুখোমুখি বৈঠকের কোনো বিকল্প নেই। মার্কিন প্রেসিডেন্ট এটাও জানিয়েছেন, অতীতে তিনি ও শি সবসময় যে সহমত হয়েছেন এমন নয়। এই বৈঠকের পরেও তাইওয়ান নিয়ে মতভেদ থেকে গেছে। তবে দুই দেশ সামরিক পর্যায়ে আলোচনা শুরু করতে সম্মতি দিয়েছে।


বিজ্ঞাপন


সান ফ্রান্সিসকোর ঠিক বাইরে এই বৈঠক হয়। বৈঠকের শেষে বাইডেন বলেছেন, তাদের মধ্যে আলোচনা অনেকটাই এগিয়েছে। এক টুইটে তিনি লিখেছেন, ''শি-এর সঙ্গে যে আলোচনা হয়েছে, তাকে আমি সত্যিকারের মূল্য দেই। আলোচনা অনেকখানি এগিয়েছে।''

আরও পড়ুন: ইসরায়েল-গাজা যুদ্ধ নিয়ে আলোচনা করবেন বাইডেন ও শি

বাইডেনকে সাংবাদিক সম্মেলনে প্রশ্ন করা হয়ছিল, শি কি একজন ডিক্টেটর? বাইডেনের জবাব ছিল, ''আসলে তিনি তাই। মানে আমি বলতে চাইছি, তিনি এই অর্থে ডিক্টেটর যে, তিনি যে দেশটি চালান, সেটা কমিউনিস্ট দেশ। সেখানে সরকারের ধরন আমাদের থেকে একেবারেই আলাদা।''

এর আগেও বাইডেন এই ধরনের মন্তব্য করেছেন এবং বেইজিং তার তীব্র প্রতিবাদও করেছে।


বিজ্ঞাপন


ইসরায়েল নিয়ে আলোচনা

এক মার্কিন কর্মকর্তা সংবাদিকদের বলেছেন, বাইডেন ও শি-এর মধ্যে আলোচনায় ইসরায়েল-হামাস প্রসঙ্গও উঠেছিল। বাইডেন শি-কে অনুরোধ করেছেন, ইরান যেন কোনো রকম উস্কানিমূলক কাজ না করে, তা যেন চীন নিশ্চিত করে।

চীনের সরকারি কর্মকর্তারা আমেরিকার সরকারি কর্মকর্তাদের জানিয়েছেন, তারা ইরানের সঙ্গে আলোচনা করছেন। গাজায় যা হচ্ছে, তা যদি মধ্যপ্রাচ্যে আরও ছড়ায়, তাহলে তার ফল ভালো হবে না বলেও তারা ইরানকে জানিয়েছেন।

সামরিক পর্যায়ে যোগাযোগ বাড়বে

দুই দেশের মধ্যে সামরিক পর্যায়ে যোগাযোগ বাড়ানোর জন্য বাইডেন ও শি একমত হয়েছেন।

শি জানিয়েছেন, তিনি ও বাইডেন উচ্চপর্যায়ে সামরিক আলোচনা শুরু করতে একমত হয়েছেন। এই আলোচনা হবে পারস্পরিক শ্রদ্ধা ও সমতার ভিত্তিতে।

আরও পড়ুন: ৬ বছর পর যুক্তরাষ্ট্রে চীনের প্রেসিডেন্ট

এআই বা কৃত্রিম মেধা নিয়েও একটি যৌথ সরকারি ব্যবস্থাপনা এবং ওয়ার্কিং গ্রুপ গঠন করা হয়েছে।

শি যা বলেছেন

চীনের প্রেসিডেন্ট বাইডেনকে বলেছেন, ''এই বিশ্বটা অনেক বড়। এখানে আমেরিকা ও চীন দু’জনেই সফল হতে পারে।''

তিনি বলেছেন, ''চীন আমেরিকাকে ছাপিয়ে যেতে বা তাদের আসন ছিনিয়ে নিতে চায় না। আমেরিকারও চীনকে দমিয়ে রাখা বা নিয়ন্ত্রণ করার চেষ্টা করা উচিত নয়।''

তাইওয়ান নিয়ে

যুক্তরাষ্ট্রের এক কূটনীতিক সাংবাদিকদের বলেছেন, দুই দেশের সম্পর্কের ক্ষেত্রে সবচেয়ে বড় বিষয় হলো তাইওয়ান। তিনি জানিয়েছেন, শি বলেছেন, চীন চায়, তাইওয়ান শান্তিপূর্ণভাবে তাদের সঙ্গে মিশে যাক। আর যদি জোর করতে হয়, তবে তার শর্ত নিয়ে চীন আলোচনা করতে রাজি।

চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ''শি বাইডেনকে বলেছেন, আমেরিকা যেন তাইওয়ানের হাতে আর অস্ত্র তুলে না দেয়। তারা যেন তাইওয়ানের শান্তিপূর্ণভাবে চীনের সঙ্গে মিশে যাওয়াকে সমর্থন করে।''

মার্কিন কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, ''শি বলেছেন যে তারা তাইওয়ানের ওপর ব্যাপক কোনো অভিযান চালাবেন না। কিন্তু তারপরেও আমেরিকা এই বিষয়ে তাদের মনোভাব বদল করেনি।''

আর কী নিয়ে আলোচনা?

হোয়াইট হাউসের জাতীয় সুরক্ষা উপদেষ্টা জন কিরবি জানিয়েছিলেন, ''তাইওয়ান প্রণালীতে উত্তেজনা নিয়ে কথা হবে। তাছাড়া রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ নিয়েও আলোচনা হবে।''

কিন্তু বৈঠকের আগে বাইডেন জানিয়ে দেন, ''চীনের সঙ্গে আমরা সম্পর্ক ভালো করার চেষ্টা করছি। চীন থেকে বিচ্ছিন্ন হওয়ার চেষ্টা করছি না।''

সূত্র : ডয়চে ভেলে

এমইউ

ঢাকা মেইলের খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

সর্বশেষ
জনপ্রিয়

সব খবর