শনিবার, ২১ সেপ্টেম্বর, ২০২৪, ঢাকা

ব্রিটেনে ফিলিস্তিনের পক্ষে সমাবেশ ঘিরে সরকার-পুলিশ মতবিরোধ

আন্তর্জাতিক ডেস্ক
প্রকাশিত: ১৩ নভেম্বর ২০২৩, ০১:০১ পিএম

শেয়ার করুন:

ব্রিটেনে ফিলিস্তিনের পক্ষে সমাবেশ ঘিরে সরকার-পুলিশ মতবিরোধ
লন্ডনে ফিলিস্তিনের পক্ষে বিক্ষোভে লাখ লাখ মানুষ। ছবি: গ্লোব এন্ড মেইল

গাজায় ইসরায়েলের হামলার প্রতিবাদে যুক্তরাজ্যের রাজধানী লন্ডনে তিন লাখের বেশি মানুষ ফিলিস্তিনের পক্ষে বিক্ষোভ করেন। স্থানীয় সময় শনিবার দুপুরে এ বিক্ষোভে অংশ নেন বিভিন্ন বয়সী নারী-পুরুষ। এটি দেশটির ইতিহাসে বৃহত্তম বিক্ষোভের একটি। এই বিক্ষোভের অনুমতি দেওয়া নিয়ে বিরোধে জড়িয়ে পড়ে ব্রিটিশ সরকার ও পুলিশ প্রশাসন।

ব্রিটেনের প্রধানমন্ত্রী ঋসি সুনাক এই বিক্ষোভবে অবৈধ বলে উল্লেখ করেন। এছাড়া বিক্ষোভ থেকে সহিংসতা ছড়িয়ে পড়তে পারে বলে তিনি এটির অনুমতি না দিতে পুলিশের প্রতি আহ্বান জানান। এছাড়াও সুনাক ফিলিস্তিনপন্থীদের সমালোচনা করেন। প্রধানমন্ত্রী ঋষি সুনাক ফিলিস্তিনপন্থী এ বিক্ষোভে সহিংসতা উসকে যেতে পারে বলে একে অসম্মানজনক হিসেবে মন্তব্য করেন। 


বিজ্ঞাপন


শনিবার এই বিক্ষোভ যাতে না হয় সেই পদক্ষেপ নেওয়ার অনুরোধ করেছিল সুনাক সরকার। তবে লন্ডন মেট্রোপলিটন পুলিশ সেই অনুরোধ নাকচ করে বলেছিল, বিক্ষোভে বড় ধরনের সহিংসতা হওয়ার কোনো ইঙ্গিত বা আশঙ্কা নেই। তাই সরকারি অনুরোধে এ বিক্ষোভ বন্ধ করার সুযোগ নেই।

আরও পড়ুন: গাজায় পেরে উঠছে না ইসরায়েল, নিহত ৪৫ সেনা

এক বিবৃতিতে ঋষি সুনাক বলেন, ‘আইন অনুযায়ী সব ধরনের অপরাধমূলক তৎপরতা দ্রুত বন্ধ করতে হবে। গত বুধবার লন্ডন পুলিশ কমিশনারকে আমি এ কথাই বলেছি। এর জন্যই তাদের (পুলিশ বাহিনী) রাখা হয়েছে এবং (প্রধানমন্ত্রী হিসেবে) আমিও সেটাই তাদের কাছে চাই।’

বিক্ষোভের বিপক্ষে এবং বিক্ষোভকারীদের তীব্র সমালোচনা করেন ব্রিটিশ স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী। তিনি তাদের বিষয়ে বিতর্কিত মন্তব্য করেন। তিনিও বিক্ষোভ বন্ধের চেষ্টা করেছিলেন। তবে পুলিশ তাদের অবস্থানে অনড় ছিল।


বিজ্ঞাপন


ফিলিস্তিনের গাজায় ইসরায়েলের হামলার প্রতিবাদে লন্ডনের বিক্ষোভে তিন লাখের বেশি মানুষ অংশ নেন বলে জানিয়েছে লন্ডন পুলিশ। তবে আয়োজকদের দাবি, বিক্ষোভে ৮ লাখ মানুষ ছিল।

ন্যাশনাল মার্চ ফর প্যালেস্টাইন নামে এ বিক্ষোভ শুরু হয় স্থানীয় সময় দুপুর ১২টায়। বিক্ষোভে অনেককে ‘নদী থেকে সমুদ্র, ফিলিস্তিন হবে মুক্ত’ স্লোগান দিতে দেখা যায়। ‘ফিলিস্তিনকে মুক্ত করো’, ‘গণহত্যা বন্ধ করো’, ‘গাজায় বোমাবর্ষণ বন্ধ করো’— লেখা ব্যনার দেখা যায় বিক্ষোভে।

যুক্তরাজ্যসহ পশ্চিমা সরকারগুলোর পক্ষ থেকে ইসরায়েলের প্রতি সমবেদনা ও সমর্থন জানানো হয়েছে। তবে ইসরায়েলের প্রতিক্রিয়া নিয়ে অনেকের মধ্যে ক্ষোভ তৈরি হয়েছে। যুদ্ধবিরতির দাবিতে প্রতি সপ্তাহে লন্ডনে বিক্ষোভ হচ্ছে।

আরও পড়ুন: গাজায় নিহতদের প্রায় ৮ হাজার শিশু ও নারী, বন্ধ ২২ হাসপাতাল

যুক্তরাজ্য ছাড়াও ফিলিস্তিনিদের সমর্থনে শনিবার ফ্রান্সের তুলুজ, জার্মানির বার্লিন এবং শুক্রবার যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্ক সিটির মতো বড় শহরেও বিক্ষোভ অনুষ্ঠিত হয়েছে।

ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা এখন মৃত্যুপুরীতে পরিণত হয়েছে। ছিটমহলটিতে যে গুটিকয়েক হাসপাতাল ও স্বাস্থ্যকেন্দ্র রয়েছে তার মধ্যে ২২টি হাসপাতাল ও ৪৯টি স্বাস্থ্যকেন্দ্র ইসরায়েলের হামলা ও জ্বালানি সংকটে বন্ধ হয়ে গেছে। গাজায় ইসরায়েলের হামলায় ১১ হাজার ১৮০ জনের মৃত্যু হয়েছে। এদের মধ্যে ৮ হাজারই শিশু ও নারী বলে জানিয়েছে সেখানকার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়।

অবরুদ্ধ ছিটমহলের সরকারি মিডিয়া অফিস রোববার বলেছে, ইসরায়েলি আগ্রাসনের কারণে গাজা উপত্যকার মোট ২২টি হাসপাতালের পরিষেবা বন্ধ হয়ে গেছে।

বিবৃতিতে বলা হয়েছে, 'চিকিৎসা কর্মীদের জন্য হুমকিসহ হাসপাতালগুলোকে ইচ্ছাকৃতভাবে টার্গেট করা ও ইসরায়েলি আগ্রাসনের কারণে মোট ২২টি হাসপাতাল এবং ৪৯টি স্বাস্থ্যকেন্দ্র কার্যক্রম বন্ধ করতে বাধ্য হয়েছে। এছাড়া ইসরায়েল এখন পর্যন্ত ৫৩টি অ্যাম্বুলেন্স ধ্বংস করেছে।'

গাজার মিডিয়া অফিস জানিয়েছে, ইসরায়েলের হামলায় নিহতের সংখ্যা বেড়ে ১১ হাজার ১৮০ জনে পৌঁছেছে। এর মধ্যে ৪ হাজার ৬০৯টি শিশু এবং ৩১০০ জন নারী। আহতের সংখ্যা ২৮ হাজার ২০০। আহতদের ৭০ শতাংশ শিশু ও নারী।

একে

ঢাকা মেইলের খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

সর্বশেষ
জনপ্রিয়

সব খবর