শনিবার, ২১ সেপ্টেম্বর, ২০২৪, ঢাকা

‘ফিলিস্তিনি যোদ্ধাদের নির্মূল করতে পারবে না ইসরায়েল’

আন্তর্জাতিক ডেস্ক
প্রকাশিত: ১২ নভেম্বর ২০২৩, ১০:৩১ পিএম

শেয়ার করুন:

‘ফিলিস্তিনি যোদ্ধাদের নির্মূল করতে পারবে না ইসরায়েল’
হিজবুল্লাহর নির্বাহী পরিষদের প্রধান সাইয়্যেদ হাশেম সাফিউদ্দিন। ছবি: প্রেস টিভি

ফিলিস্তিনি যোদ্ধাদের নির্মূল করতে পারবে না ইসরায়েল। রোববার লেবাননের প্রতিরোধ আন্দোলন হিজবুল্লাহর নির্বাহী পরিষদের প্রধান সাইয়্যেদ হাশেম সাফিউদ্দিন এ মন্তব্য করেছেন।

তিনি বলেছেন, হামাস ও অন্যান্য ফিলিস্তিনি প্রতিরোধ যোদ্ধাদের নির্মূল করতে পারবে না ইসরায়েল। যদি ইসরায়েলিরা মনে করে যে এটা তারা করতে পারবে, তবে তারা একটি বিভ্রমের মধ্যে আছে।


বিজ্ঞাপন


সাইয়্যেদ হাশেম সাফিউদ্দিন বলেছেন, গাজা উপত্যকার অসহায় মানুষদের হত্যার মাধ্যমে হামাসকে নিশ্চিহ্ন করা যাবে বলে ইসরায়েল যদি ধারণা করে থাকে তাহলে তারা মারাত্মক ভুল করছে। 

তিনি আরও বলেন, গাজায় অসহায় নারী-শিশুসহ সাধারণ মানুষ হত্যার মাধ্যমে ইসরায়েল তার লক্ষ্য হাসিল করতে পারবে না। হামাস-সহ কোনো প্রতিরোধ সংগঠনকে ধ্বংসের ক্ষমতা দখলদার ইসরায়েলের নেই। কারণ, প্রতিরোধ যোদ্ধাদের শক্তি ও সামর্থ্য আগের চেয়ে বেড়েছে।

হিজবুল্লাহর নির্বাহী পরিষদের প্রধান বলেন, গাজায় যা ঘটছে তা থেকে এটা স্পষ্ট যে বিশ্বের কোনো শক্তির ওপর আস্থা রাখা যায় না এবং আমাদের শত্রুরা কোনো নীতি-নৈতিকতা ও মূল্যবোধের ধার ধারে না।

তিনি বলেন, ‘যুক্তরাষ্ট্রের সরাসরি সমর্থন ও সহযোগিতায় ইসরায়েল বেসামরিক নাগরিকদের হত্যা করে যাচ্ছে, গাজার সব স্থাপনায় হামলা চালাচ্ছে।’


বিজ্ঞাপন


হিজবুল্লাহর এই নেতা বলেন, গাজার বীর সংগ্রামীরাই নতুন করে ভবিষ্যৎ রচনা করবে। তারা খুব সাধারণ অস্ত্রের সাহায্যে ট্যাঙ্কের মোকাবেলা করে যাচ্ছে। তারাই টিকে থাকবে, তারাই নতুন করে গাজাকে গড়ে তুলবে।

তিনি বলেন, প্রতিরোধ যোদ্ধারা কখনই তাদের অস্ত্র সমর্পণ করবে না। কারণ তারা এমন শত্রুর বিরুদ্ধে লড়াই করছে - যাকে একেবারেই বিশ্বাস করা যায় না।

অপরদিকে শনিবার হিজবুল্লাহর নেতা সাইয়েদ হাসান নাসরুল্লাহ বলেছেন যে সীমান্তের কাছাকাছি থেকে ইসরায়েলের বিরুদ্ধে লড়াই চালিয়ে যাবে লেবাননের প্রতিরোধ সংগঠনটি।

ইসরায়েলবিরোধী যুদ্ধে ফিলিস্তিনি ও লেবাননি প্রতিরোধ যোদ্ধাদের অবিচলতার ভূয়সী প্রশংসা করে হিজবুল্লাহর মহাসচিব বলেছেন, ইসরায়েলি সেনাদের জন্য আরেকটি অপমানকর পরাজয় অপেক্ষা করছে।

তিনি বলেন, “ইসরায়েলের সময় ভালো যাচ্ছে না। ফিলিস্তিনি যোদ্ধাদের হাতে বন্দীদের মুক্ত করার জন্য তেল আবিবের ওপর চাপ বাড়ছে। আমাদেরকে ওই চাপ অব্যাহত রাখতে হবে। তবে এক্ষেত্রে সংঘাতের মূল বোঝাটি বহন করতে হবে গাজাবাসীকে।”

সাইয়েদ হাসান নাসরুল্লাহ বলেন, ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর পরস্পরবিরোধী কথাবার্তায় শত্রু সেনারা যুদ্ধক্ষেত্রে বিভ্রান্ত হয়ে পড়েছে। গত ৩ নভেম্বর তার আগের ভাষণের পর থেকে হিজবুল্লাহ যোদ্ধারা দক্ষিণ লেবানন থেকে ইসরায়েলি সেনাদের বিরুদ্ধে প্রতিদিন হামলা চালিয়ে যাচ্ছে বলে জানান হিজবুল্লাহ নেতা। গত এক সপ্তাহে হিজবুল্লাহ যোদ্ধাদের হামলার মাত্রা ও পরিমাণ বৃদ্ধি পেয়েছে বলে তিনি ঘোষণা করেন।

হিজবুল্লাহর মহাসচিব বলেন, “আমরা লেবাননের ইতিহাসে প্রথমবারের মতো যুদ্ধ ড্রোন ব্যবহার করছি। এছাড়া আমরা হেভি-ক্যালিবারের বুরকান (আগ্নেয়গিরি) ক্ষেপণাস্ত্র দিয়ে শত্রুসেনাদের বিরুদ্ধে হামলা করছি যা ৫০০ কেজি ওজনের ওয়ারহেড বহন করতে পারে।”

৭ অক্টোবর গাজার ওপর ইসরায়েলি আগ্রসন শুরু হওয়ার পর থেকে নিজের দ্বিতীয় ভাষণে হিজবুল্লাহ নেতা বলেন, “ইসরায়েলিরা যুদ্ধক্ষেত্রে তাদের ক্ষয়-ক্ষতি ঢেকে রাখার আপ্রাণ চেষ্টা করছে। কিন্তু আমরা ক্ষয়-ক্ষতির বিবরণ পেয়ে যাচ্ছি। আমরা ইসরায়েলের অভ্যন্তরে গোয়েন্দা ড্রোন পাঠাচ্ছি যেগুলো হাইফা বা তার চেয়েও দূরে পৌঁছে আমাদেরকে তথ্য ও ছবি পাঠাচ্ছে।”

তিনি বলেন, গাজা আগ্রাসন বন্ধ করার জন্য লেবানন ফ্রন্ট থেকে ইসরায়েলের ওপর প্রতিনিয়ত চাপ বাড়তে থাকবে।

সাইয়েদ হাসান নাসরুল্লাহ বলেন, ইসরায়েলি সেনাবাহিনী গাজায় ভয়াবহ অপরাধযজ্ঞ চালিয়ে ফিলিস্তিনিদেরকে তাদের মাতৃভূমির স্বপ্ন ভুলিয়ে দিতে চায়। তারা আরও চায়, লেবাননবাসী পায়ের ওপর পা তুলে গাজায় তাদের ধ্বংসযজ্ঞ চেয়ে চেয়ে দেখুক। কিন্তু তা আর হবার নয় - বলে তিনি মন্তব্য করেন।

হিজবুল্লাহ নেতা জানান, ১৯৪৮ সাল থেকে গণহত্যা চালিয়ে ফিলিস্তিনিদেরকে তাদের ন্যায়সঙ্গত অধিকার আদায়ের আকাঙ্ক্ষা থেকে বিরত রাখতে পারেনি ইসরায়েল। 

তিনি বলেন, ১৯৮২ সালে দক্ষিণ লেবাননে আগ্রাসন চালিয়ে ইসরায়েলিরা হাজার হাজার ঘর-বাড়ি ধ্বংস এবং হাজার হাজার মানুষকে হত্যা করেছিল। ২০০৬ সালেও তারা হাজার হাজার লেবাননিকে হত্যা করেছে। কিন্তু তাতে লেবাননের জনগণ তাদের প্রতিরোধ বন্ধ করে দেয়নি। বর্তমান প্রতিরোধ যুদ্ধেও গাজার ফিলিস্তিনিরা জয়ী হবে বলে তিনি মন্তব্য করেন।

সূত্র : বিবিসি, প্রেস টিভি, আল-জাজিরা

এমইউ

ঢাকা মেইলের খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

সর্বশেষ
জনপ্রিয়

সব খবর