শনিবার, ২৭ জুলাই, ২০২৪, ঢাকা

গাজায় শিশু হত্যা বিশ্বের নৈতিক ব্যর্থতা: রেডক্রস

আন্তর্জাতিক ডেস্ক
প্রকাশিত: ০৮ নভেম্বর ২০২৩, ১২:১৬ পিএম

শেয়ার করুন:

গাজায় শিশু হত্যা বিশ্বের নৈতিক ব্যর্থতা: রেডক্রস
গাজার নুসেইরাত শরণার্থী শিবিরে ইসরায়েলি হামলায় ধ্বংসপ্রাপ্ত ভবনের নিচে পাওয়া মৃত শিশুকে নিয়ে কান্নায় ভেঙে পড়েন এক ব্যক্তি। ছবি: এপি

ইসরায়েল ও হামাসের মধ্যকার যুদ্ধের এক মাস পেরিয়ে গেছে। গাজার মানবিক পরিস্থিতি ভয়াবহ থেকে আরো ভয়াবহের দিকে যাচ্ছে। গাজায় নিহত হয়েছে চার হাজার ২০০ জনের বেশি শিশু। এমন ঘটনাকে বিশ্বের নৈতিক ব্যর্থতা বলে উল্লেখ করেছে স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা রেডক্রস।

ইন্টারন্যাশনাল কমিটি অব দ্য রেডক্রস (আইসিআরসি) মঙ্গলবার এক বিবৃতিতে ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজায় বেসামরিক নাগরিক, বিশেষ করে শিশুদের ভয়াবহ দুর্ভোগ অবসানের আহ্বান জানিয়েছে। একই সঙ্গে সংস্থাটি এই পরিস্থিতিকে ‘নৈতিক ব্যর্থতা’ হিসেবে উল্লেখ করেছে। খবর এএফপির


বিজ্ঞাপন


রেডক্রস বলেছে, গত এক মাস ধরে গাজা ও ইসরায়েলের বেসামরিক নাগরিকদের অসহ্য কষ্ট ও ক্ষতি সহ্য করতে হচ্ছে। এটি বন্ধ হওয়া প্রয়োজন। গাজাজুড়ে ব্যাপক বোমা হামলার কারণে বেসামরিক অবকাঠামো ধ্বংস হচ্ছে। এতে আগামী প্রজন্মের জন্যে রোপিত হচ্ছে কষ্টের বীজ।

আরও পড়ুন: গাজা ‘শিশুদের কবরস্থানে’ পরিণত হচ্ছে: জাতিসংঘ

সংস্থাটির প্রেসিডেন্ট মির্জানা স্পোলজারিক বলেছেন, হতাহত শিশুদের ছবি আমাদের তাড়িয়ে ফিরবে। এটি একটি ‘নৈতিক ব্যর্থতা’।

গত ৭ অক্টোবর ইসরায়েলের নিরাপত্তাবাহিনী লক্ষ্য করে হামলা চালায় গাজার শাসকগোষ্ঠী হামাস। ইসরায়েল দাবি করে হামাসের হামলায় ১৪০০ এর বেশি ইসরায়েলি নিহত হয়েছে। তাদের মধ্যে চার শতাধিক নিরাপত্তাবাহিনীর সদস্য। তবে হামাসের শীর্ষ নেতারা বারবার বলেছেন যে, তারা কোনো বেসামরিক মানুষকে লক্ষ্য করেনি এবং হত্যা করেনি। সংঘাতের শুরুর দিকে মার্কিন প্রেসিডেন্ট দাবি করেছিলেন যে, হামাস নির্মমভাবে ইসরায়েলে ৪০ শিশুকে হত্যা করেছে। যদিও পরে এর পক্ষে কোনো প্রমাণ দিতে না পারায় তার বক্তব্যের জন্য দু:খ প্রকাশ করে হোয়াইট হাউজ।


বিজ্ঞাপন


হামাসের হামলার জবাবে অবরুদ্ধ গাজায় নির্বিচারে হামলা শুরু করে ইসরায়েল। এছাড়া গাজায় সর্বাত্মক অবরোধ আরোপ করে নেতানিয়াহু প্রশাসন। এর ফলে গাজার প্রায় ২৩ লাখ মানুষের জীবন অনিশ্চয়তার মধ্যে পড়েছে। জ্বালানি, খাদ্য, ওষুধসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের তীব্র সংকটে পড়েছে গাজাবাসী।

আবাসিক এলাকা, শরণার্থী শিবির, হাসপাতাল, মসজিদ, গির্জা, জাতিসংঘ পরিচালিত স্কুল, খাদ্যের গুদাম, ব্যাকারি, অ্যাম্বুলেন্স, পানির টাংকি, জ্বালানি স্থাপনাসহ প্রায় সকল স্থানে বোমা ফেলেছে ইসরায়েল। ইসরায়েলের হামলা ও জ্বালানি সংকটে বন্ধ হয়ে গেছে বেশিরভাগ হাসপাতাল ও স্বাস্থ্যকেন্দ্র।

আরও পড়ুন: অকাতরে মানুষ মারছে ইসরায়েল, অন্ধ বিশ্ব

৭ অক্টোবর থেকে গাজায় ইসরায়েলের নির্বিচারে হামলায় ১০ হাজার ৩২৮ জনের মৃত্যু হয়েছে। গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় বলছে যে, গাজায় নিহত ১০,৩২৮ জনের মধ্যে ৪,২৩৭টি শিশু এবং ২,৭১৯ জন নারী। আহত মানুষের সংখ্যা প্রায় ৩০ হাজার। শত শত ঘরবাড়ি বিধ্বস্ত হয়েছে। লাখ লাখ মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়ে আশ্রয়কেন্দ্র বা খোলা আকাশের নিচে রাত কাটাচ্ছেন।

কাতার, ইসরায়েল ও মিশরের মধ্যস্ততায় ২১ অক্টোবর থেকে সামান্য পরিমাণে সাহায্য রাফাহ সীমান্ত দিয়ে গাজায় প্রবেশ করছে। তবে জাতিসংঘ জানিয়েছে যে, গাজায় যে নির্মম মানবিক পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে সেখানে আরও সাহায্য এবং জ্বালানি প্রয়োজন। তা না হলে লাখ লাখ মানুষের জীবনহানির শঙ্কা রয়েছে।

একে

ঢাকা মেইলের খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

সর্বশেষ
জনপ্রিয়

সব খবর