ইসরায়েল-ফিলিস্তিনে যুদ্ধ ইস্যুতে ভাষণ দিচ্ছেন হেজবুল্লাহ প্রধান হাসান নাসরাল্লাহ। শুক্রবার লেবাননের এ শিয়া ইসলামি গোষ্ঠীর প্রধান তার অনুসারীদের উদ্দেশ্যে ভাষণ দেন। ইসরায়েল-হামাস যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর থেকে এটা তার প্রথম জনসম্মুখে ভাষণ।
হাসান নাসরাল্লাহ তার বক্তৃতা শুরু করেন হিজবুল্লাহ এবং ইসরায়েলের সঙ্গে যুদ্ধরত অন্যান্য ফিলিস্তিনপন্থী গ্রুপের "শহীদদের" প্রশংসা করে। এ সময় তিনি নিহত বেসামরিক (ফিলিস্তিনি) লোকদের শহীদ বলে অভিহিত করেন এবং তাদেরও প্রশংসা করেন।
বিজ্ঞাপন
আরও পড়ুন: ইসরায়েল-লেবানন সীমান্তে ব্যাপক গোলাবর্ষণ ও সংঘাত
তিনি বলেন, "আমি এখানে লেবাননে নিহতদের পরিবারগুলোর প্রতি আমার গভীর সমবেদনা জানিয়ে শুরু বক্তব্য করছি। একইসাথে আমরা আপনাদেরকে অভিনন্দন জানাই, কারণ আপনার প্রিয়জনরা শাহাদাতের সম্মান অর্জন করেছেন।"
হিজবুল্লাহ প্রধান গাজা এবং অধিকৃত পশ্চিম তীরে নিহতদের পরিবারকেও "সমবেদনা ও অভিনন্দন" প্রদান করেছেন। এদের মধ্যে ইসরায়েলের অভ্যন্তরে হামাসের ‘আল-আকসা ফ্লাড’ অভিযানের সময় নিহত ব্যক্তিরাও রয়েছে। তিনি বলেছেন, এবার যুদ্ধ অনেকগুলো ফ্রন্টে প্রসারিত হয়েছে।
হিজবুল্লাহ প্রধানের মতে, ইসরায়েলবিরোধী এ যুদ্ধটি একটি মানবিক, নৈতিক এবং ধর্মীয় স্তরের যুদ্ধ। এটার একটি স্পষ্ট, সৎ ও মহৎ উদ্দেশ্য আছে।
বিজ্ঞাপন
তিনি জানান, ইরাক এবং ইয়েমেনের শক্তিশালী ও সাহসী যোদ্ধারা এ পবিত্র যুদ্ধে জড়িত। এ কারণে তাদের অভিবাদন জানাই।
আরও পড়ুন: ‘ফিলিস্তিনিরা প্রমাণ করেছে যে ইসরায়েল মাকড়সার জালের চেয়েও দুর্বল’
হিজবুল্লাহ প্রধান বলেন, হামাসের ‘আল-আকসা ফ্লাড’ অভিযানের ফলে ইসরায়েলে ভূমিকম্প সৃষ্টি হয়েছে। এ অভিযানের কৌশলগত এবং অস্তিত্বগত প্রভাব পড়বে ইসরায়েলের বর্তমান ও ভবিষ্যতের ওপরে।
নাসরাল্লাহ বলেছেন, ইসরায়েলের সঙ্গে হওয়া যুদ্ধে হামাস একটি নতুন ঐতিহাসিক অধ্যায় সৃষ্টি করেছে। তিনি ফিলিস্তিনি সংগঠনটির সিদ্ধান্তকে সঠিক, বুদ্ধিদীপ্ত এবং সাহসী কাজ বলে অভিহিত করেছেন। তার মতে, হামাস এ যুদ্ধে জয়ী হয়েছে। তারা সঠিক সময়ে এ সামরিক অভিযানটি চালিয়েছে।
তিনি বলেন, ইসরায়েল আলোচনার মাধ্যমে গাজায় বন্দী থাকা ইসরায়েলিদের মুক্ত করতে পারে। কিন্তু তারা এখন মূর্খতা এবং অক্ষমতার পরিচয় দিচ্ছে। তারা গাজার শিশু ও নারীদের হত্যা করছে। এভাবে তারা কোনো সামরিক লক্ষ্য অর্জন করতে পারবে না। তিনি এ ফিলিস্তিনিবিরোধী যুদ্ধ বন্ধ করতে বলেছেন।
নাসরাল্লাহ বলেছেন যে গাজার যুদ্ধ বন্ধ করতে আরব ও মুসলিম দেশগুলোর একসঙ্গে কাজ করা উচিত। তিনি আরও জানান, শত্রুরা (ইসরায়েলিরা) লেবানন এবং লেবানিজ নাগরিকদের হুমকি দিচ্ছে, অথচ তারা গাজা উপত্যকার চোরাবালিতে ডুবে যাচ্ছে।
নাসরাল্লাহ বলেছেন যে হিজবুল্লাহ ৮ অক্টোবর ইসরায়েলবিরোধী যুদ্ধে যোগ দিয়েছে। হামাসের অভিযানের পর দিন থেকে তারা ইসরায়েলে হামলা শুরু করে।
সূত্র : আল-জাজিরা
এমইউ