সোমবার, ১৫ ডিসেম্বর, ২০২৫, ঢাকা

নিকারাগুয়ার এক হাজার রাজনীতিক-কর্মকর্তার ওপর মার্কিন ভিসা নিষেধাজ্ঞা

আন্তর্জাতিক ডেস্ক
প্রকাশিত: ৩০ সেপ্টেম্বর ২০২৩, ০৯:১৬ এএম

শেয়ার করুন:

নিকারাগুয়ার এক হাজার রাজনীতিক-কর্মকর্তার ওপর মার্কিন ভিসা নিষেধাজ্ঞা
প্রেসিডেন্ট ড্যানিয়েল ওর্তেগার সরকারের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ- ফাইল ফটো/রয়টার্স

মধ্য আমেরিকার দেশ নিকারাগুয়ায় মানবাধিকার লঙ্ঘনের দায়ে ভিসা নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। নিকারাগুয়ায় মানবাধিকারকে সংকুচিত ও গণতন্ত্রকে দুর্বল করায় নতুন করে ১০০ কর্মকর্তার ওপর ভিসা নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়েছে। এ নিয়ে দেশটিতে এখন পর্যন্ত যুক্তরাষ্ট্রের ভিসা নিষেধাজ্ঞায় পড়েছে অন্তত এক হাজার রাজনীতিক ও কর্মকর্তা। এক প্রতিবেদনে এমন খবর দিয়েছে রয়টার্স।

শুক্রবার ওয়াশিংটনে এক ব্রিফিংয়ে নতুন করে নিকারাগুয়ার কর্মকর্তাদের ওপর নিষেধাজ্ঞার বিষয়টি নিশ্চিত করেন মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিনকেন।


বিজ্ঞাপন


আন্তর্জাতিক ও নিকারাগুয়ার স্থানীয় বিভিন্ন মানবাধিকার সংস্থা বহুদিন ধরে ওর্তেগা প্রশাসনের বিরুদ্ধে দেশটির বিরোধী রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মী, সংবাদমাধ্যম, ব্যবসায়ী নেতা এবং ক্যাথলিক চার্চের যাজকদের ওপর দমন-পীড়ন চালানোর অভিযোগ জানিয়ে আসছে। 

সেসব অভিযোগ আমলে নিয়েই এই পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন ব্লিনকেন।

আরও পড়ুন: গণতন্ত্র ক্ষুণ্নকারী বাংলাদেশের যে কাউকেই নিষেধাজ্ঞা দেবে যুক্তরাষ্ট্র

এর আগে নিকারাগুয়ার প্রেসিডেন্ট ড্যানিয়েল ওর্তেগা, ভাইস প্রেসিডেন্ট ও ওর্তেগার স্ত্রী রোসারিও মুরিলো, তাদের তিন সন্তান এবং সরকারি প্রশাসন, পুলিশ ও সেনাবাহিনীর উচ্চ পর্যায়ের বেশ কয়েক জন কর্মকর্তার ওপর ভিসা বিধিনিষেধ জারি করেছিল মার্কিন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। এবার যে ১০০ কর্মকর্তাকে এই নিষেধাজ্ঞার আওতায় আনা হলো— তাদের অধিকাংশই ওর্তেগা প্রশাসনের মাঝারি পর্যায়ের কর্মকর্তা।


বিজ্ঞাপন


রয়টার্সের খবরে বলা হয়েছে, নতুন নিষেধাজ্ঞার কবলে পড়া কর্মকর্তারা বেশিরভাগই নিকারাগুয়ান পৌরসভার। এ নিয়ে দেশটিতে নিষেধাজ্ঞার মুখে পড়া কর্মকর্তাদের সংখ্যা এক হাজারের বেশি।

ব্লিংকেন বলেন, আগস্ট থেকে প্রেসিডেন্ট ড্যানিয়েল ওর্তেগা এবং ভাইস প্রেসিডেন্ট রোজারিও মুরিলো সেন্ট্রাল আমেরিকান ইউনিভার্সিটি এবং সেন্ট্রাল আমেরিকান ইনস্টিটিউট অফ বিজনেস অ্যাডমিনিস্ট্রেশন বন্ধ করে দিয়েছেন। দেশের দুটি উচ্চ শিক্ষার সবচেয়ে বিখ্যাত কেন্দ্রের সম্পদ জব্দ করেছেন। ওর্তেগা এবং মুরিলো স্বাধীন একাডেমিক প্রতিষ্ঠানকে লক্ষ্যবস্তু করেছেন। এটি নিকারাগুয়ানদের আশা এবং স্বপ্নকে তাদের স্বদেশে একটি উন্নত ভবিষ্যত গড়ে তোলার জন্য ব্যাহত করেছে।

জাতিসংঘ-নিযুক্ত মানবাধিকার বিশেষজ্ঞদের একটি দল গত মার্চ মাসে অভিযোগ করে যে, নিকারাগুয়ার সরকার গুরুতর এবং নিয়মতান্ত্রিক লঙ্ঘন করেছে যা মানবতার বিরুদ্ধে অপরাধের সমান। দেশটির সরকার ২০১৮ সাল থেকে নির্যাতন, বিচারবহির্ভূত মৃত্যুদণ্ড, নির্বিচারে আটকের কাজ করেছে।

এর আগে নিষেধাজ্ঞার দেয়ার সময় গত আগস্টে ব্লিংকেন নিকারাগুয়ার কারাগারে বন্দী ক্যাথলিক বিশপ রোনান্দো ইভারেজকে নিঃশর্ত মুক্তি দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছিলেন।

বিশপ ইভারেজ নিকারাগুয়া সরকারের কড়া সমালোচক হিসেবে পরিচিত। সরকারবিরোধী বিক্ষোভে সহযোগিতা দেওয়ার অভিযোগ এনে তাকে ২৬ বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। অবশ্য এর আগে চলতি বছরের ফেব্রুয়ারি মাসে তাকে দেশ ছেড়ে যুক্তরাষ্ট্রে নির্বাসনে যাওয়ার কথা বলা হয়েছিল। তবে তাতে তিনি রাজি হননি।

আরও পড়ুন: ‘একতরফা’ নির্বাচন, কম্বোডিয়ায় ভিসা নিষেধাজ্ঞা যুক্তরাষ্ট্রের

২০২১ সালের নির্বাচনে টানা চতুর্থবারের মতো জয় পেয়ে ক্ষমতা ধরে রেখেছেন ওর্তেগা। যদিও ‘কারচুপির’ ওই নির্বাচন নিয়ে দেশ-বিদেশে প্রচুর সমালোচনা রয়েছে। চতুর্থ দফায় ক্ষমতায় বসার পর ওর্তেগা কয়েক ডজন বিরোধী নেতাকে জেলে পুরেছেন। মানবাধিকার সংগঠনগুলোর দাবি, তাদের বিরুদ্ধে নানা ধরনের ‘ভুয়া’ অভিযোগ আনা হয়েছে, যেসব অভিযোগ রাষ্ট্রদ্রোহের সমান অপরাধ হিসেবে গণ্য করা যায়।

একে

ঢাকা মেইলের খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

সর্বশেষ
জনপ্রিয়

সব খবর