বৃহস্পতিবার, ১৮ ডিসেম্বর, ২০২৫, ঢাকা

নাগর্নো-কারাবাখে আজারবাইজানের উগ্রবাদবিরোধী অভিযান শুরু 

আন্তর্জাতিক ডেস্ক
প্রকাশিত: ১৯ সেপ্টেম্বর ২০২৩, ০৬:১১ পিএম

শেয়ার করুন:

নাগর্নো-কারাবাখে আজারবাইজানের উগ্রবাদবিরোধী অভিযান শুরু 
প্রতীকী ছবি। - আল-জাজিরা

নাগর্নো-কারাবাখে উগ্রবাদবিরোধী অভিযান শুরু করেছে আজারবাইজান। দেশটির প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় বলেছে, তাদের এ সেনা অভিযানে শুধুমাত্র (উগ্রবাদীদের) সামরিক অবকাঠামোকে লক্ষ্য করে হামলা করা হবে।

মঙ্গলবার প্রকাশিত একটি বিবৃতিতে আজারবাইজানের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় বলেছে, ‘আজারবাইজানের কারাবাখ অঞ্চলে দেশটির সশস্ত্র বাহিনীর উগ্রবাদবিরোধী কার্যক্রম চলমান রয়েছে।’


বিজ্ঞাপন


তারা জানান, এ সেনা অভিযানে শুধুমাত্র অবৈধ সামরিক স্থাপনা এবং অবকাঠামোগুলোকে লক্ষ্যবস্তু করা হয়েছে। এছাড়া উচ্চ-নির্ভুল অস্ত্র ব্যবহার করে শত্রুদের ধ্বংস করা হয়েছে।

আরও পড়ুন: রাশিয়া থেকে কী বার্তা নিয়ে ফিরলেন কিম?

আজারবাইজানের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় বলেছে, বেসামরিক লোকদের সরিয়ে নেওয়ার জন্য তারা মানবিক করিডোরও তৈরি করেছে।

 এএফপি বার্তা সংস্থার একজন প্রতিবেদক বলেছেন, নাগর্নো-কারাবাখ অঞ্চলের কার্যত রাজধানীতে বিস্ফোরণের শব্দ শোনা গেছে। এ রাজধানী শহরটি আর্মেনীয়দের কাছে স্টেপানাকার্ট এবং আজারবাইজানের খানকেন্দি নামে পরিচিত।


বিজ্ঞাপন


এদিকে আর্মেনিয়া বলেছে যে কারাবাখে তাদের কোনো সামরিক কর্মী বা সরঞ্জাম নেই। দেশটির প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ও এ বিষয়টি নিশ্চিত করেছে।

আজারবাইজানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বলেছে, ‘আর্মেনিয়ার নিরাপত্তা বাহিনীর দ্বারা স্থাপিত ল্যান্ডমাইনগুলোর কারণে আজারবাইজানের খোজাভেন্দ জেলায় দু’টি ভিন্ন দুর্ঘটনায় কমপক্ষে ছয়জন মারা যাওয়ার কয়েক ঘন্টা পরে দেশটি এ উগ্রবাদবিরোধী অভিযানের ঘোষণা দিয়েছে।’

নাগর্নো-কারাবাখে এ ধরনের সংঘাত বৃদ্ধির কারণে গভীরভাবে উদ্বেগ জানিয়েছে রাশিয়া। রুশ পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র মারিয়া জাখারোভাকে উদ্ধৃত করে সংবাদ সংস্থা তাস এ তথ্য দিয়েছে।

আরও পড়ুন: ফ্যাশন রাজ্য হতে পোশাকে কাটছাঁট করছে সৌদি!

জাতিসংঘের মুখপাত্র স্টিফেন ডুজারিকও নাগর্নো-কারাবাখের চলমান পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। তিনি সংঘাত বন্ধ করে টেকসই সংলাপে ফিরে যাওয়ার কথা বলেছেন।

দক্ষিণ ককেশাস অঞ্চলের বিতর্কিত নাগর্নো-কারাবাখ অঞ্চল নিয়ে কয়েক দশক ধরে আজারবাইজান ও আর্মেনিয়ার মধ্যে দ্বন্দ্ব-সঙ্ঘাত চলে আসছে। আন্তর্জাতিক আইন অনুসারে অঞ্চলটি আজারবাইজানের বলে স্বীকৃত হলেও ১৯৯০ এর দিকে সোভিয়েত ইউনিয়নের পতনের পর গেরিলা গোষ্ঠীর সহায়তায় আর্মেনিয়া তা দখল করে নেয়। 

এ নাগর্নো-কারাবাখ অঞ্চল নিয়ে দুই প্রতিবেশী দেশ আজারবাইজান ও আর্মেনিয়া অন্তত দু’বার যুদ্ধে জড়িয়েছে। ১৯৯০ এর দশকের গোড়ার দিকে সোভিয়েত ইউনিয়নের পতনের পর প্রথমবার যুদ্ধে জড়ায় দেশ দু’টি।

সাবেক সোভিয়েত ইউনিয়নভুক্ত এ দুই রাষ্ট্র বিতর্কিত নাগর্নো-কারাবাখ অঞ্চলকে কেন্দ্র করে ২০২০ সালে ফের প্রাণঘাতী যুদ্ধে জড়িয়ে পড়ে। দুই দেশের সৈন্যদের হামলা-পাল্টা হামলায় সেই যুদ্ধে উভয়পক্ষের সাড়ে ছয় হাজারের বেশি মানুষের প্রাণহানি ঘটে।

যুদ্ধের পর আর্মেনিয়ার ঘনিষ্ঠ মিত্র রাশিয়া নাগর্নো-কারাবাখে কয়েক হাজার শান্তিরক্ষী মোতায়েন করে। কিন্তু ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে সেখান থেকে শান্তিরক্ষীদের পরে প্রত্যাহার করে নেয় দেশটি।

গত বছরের ডিসেম্বর থেকে লাচিন করিডোর নামে পরিচিত নাগর্নো-কারাবাখ ছিটমহলে প্রবেশের একমাত্র পথ অবরোধ করে রেখেছে আজারবাইজান। মঙ্গলবার বাকুতে আজারবাইজানের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় আর্মেনিয়ার বাহিনীর বিরুদ্ধে আজারি সৈন্যদের অবস্থান লক্ষ্য করে ‘পরিকল্পিত গোলাবর্ষণের’ অভিযোগ করেছে।

সূত্র : আল-জাজিরা

এমইউ

ঢাকা মেইলের খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

সর্বশেষ
জনপ্রিয়

সব খবর