প্যারিস শহরতলির নান্তেরে ফরাসি পুলিশের গুলিতে নিহত নাহেলের জানাজা অনুষ্ঠিত হচ্ছে। আলজিরীয় বংশোদ্ভূত এই মুসলিম তরুণের হত্যাকাণ্ড নিয়ে গত কয়েক দিন ধরে ফ্রান্সের বিভিন্ন শহরে ব্যাপক দাঙ্গা-হাঙ্গামা চলছে।
ফরাসি দৈনিক ল্য মদ লিখেছে নিহত নাহেলের স্বজন এবং বন্ধু বান্ধব ছাড়াও নান্তের মহল্লার অনেক বাসিন্দা এই জানাজায় অংশ নেয়। দাফনের আগে স্থানীয় ইবনে বাদিস মসজিদেও জানাজা হয়েছে বলে খবর পাওয়া যাচ্ছে।
বিজ্ঞাপন
নাহেলের পরিবার এসব অনুষ্ঠানে সাংবাদিকদের ঢুকতে দেয়নি।
জানা গেছে, স্থানীয় সময় বেলা আড়াইটায় তার দাফন হবে।
ওদিকে মঙ্গলবার থেকে শুরু হওয়া দাঙ্গা গত রাতেও (শুক্রবার) অব্যাহত ছিল।
শুক্রবার রাতে দাঙ্গা উপদ্রুত বিভিন্ন শহরে ৪৫ হাজার পুলিশ সদস্য মোতায়েন করা হয়। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, চার দিনে ২৩০০ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে, তার মধ্যে গত রাতেই গ্রেফতার করা হয়েছে ১৩১১ জনকে।
বিজ্ঞাপন
উদ্বিগ্ন ফরাসি প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাঁক্রো জার্মানিতে তার এক নির্ধারিত সফর স্থগিত করেছেন।
পুলিশের ওপর গুলি
বন্দর নগরী মার্সেইতে দাঙ্গার সময় একটি বন্দুকের দোকানও আক্রান্ত হয়েছে। ফরাসী দৈনিক ল্য প্যারিসিয়েন খবর দিয়েছে ৩০ জনের মত তরুণ-যুবক দোকান ভেঙ্গে ঢুকে পাঁচ থেকে আটটি শিকার করার রাইফেল নিয়ে যায়।
রোন অঞ্চলে গত রাতে তিনজন পুলিশ সদস্য গুলিতে জখম হয়েছে। একটি দেওয়ালের পেছনে ঘাপটি মেরে থাকা এক ব্যক্তি অতর্কিতে ওই পুলিশ সদস্যদের ওপর গুলি চালায়। সম্প্রচার সংস্থা বিএফএমটিভি একজন পুলিশ কর্মকর্তাকে উদ্ধৃত করেছে যিনি বলেছেন, “একটি রেড-লাইন ভেঙ্গে গেছে। এমন ঘটনা এখানে আগে কখনও ঘটেনি। খুবই উদ্বেগের বিষয়।”
লিও শহরে গত রাতের দাঙ্গায় পুলিশের ৩৫জন সদস্য আহত হয়েছে। তাদের দু’জনকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
লিওতে একটি পুলিশ স্টেশনসহ আটটি সরকারি ভবনে হামলা চালিয়ে ব্যাপক ভাংচুর করা হয়।
বন্দর শহর মার্সেইতে শনিবার রাতের সহিংসতা অব্যাহত থাকতে পারে এই আশংকায় কর্তৃপক্ষ সন্ধ্যা ৭টা থেকে সমস্ত গণ-পরিবহন বন্ধ করে দেওয়ার কথা ঘোষণা করেছে। সমস্ত বড় অনুষ্ঠানও বাতিল করেছে। আজ মার্সেইতে সমকামী অধিকার নিয়ে একটি শোভাযাত্রা হওয়ার কথা ছিল।
লিল শহরের রুবাইক্স শহরতলি থেকে একজন সংবাদদাতা জানান যে সেখানে বিভিন্ন অফিস ভবনে ব্যাপক ভাংচুর, অগ্নিকাণ্ড এবং লুটপাট হয়েছে।
তিনি জানান, গত রাতে বিক্ষুব্ধ লোকজন বিশাল একটি অফিস ভবনে – যেখানে কমপক্ষে ৫০০ লোক কাজ করতো- ঢুকে আগুন দেয়। আগুনে ভবনটির একাংশ পুরোপুরি পুড়ে কালো হয়ে গেছে। পর দিন সকালেও সেখান থেকে পোড়া গন্ধ বেরুচ্ছিল। ভবনের সমস্ত অফিসের সবকিছু পুড়ে গেছে।
সূত্র : বিবিসি
এমইউ

