শনিবার, ১৯ অক্টোবর, ২০২৪, ঢাকা

টাইটানিকের পাশে সলিলসমাধি টাইটানের

আবুল কাশেম
প্রকাশিত: ২৩ জুন ২০২৩, ০২:৫৪ এএম

শেয়ার করুন:

টাইটানিকের পাশে সলিলসমাধি টাইটানের

১৯১২ সালে ভয়াবহ এক পরিণতি ঘটেছিল সেই সময়ের বিস্ময়কর সৃষ্টি টাইটানিক জাহাজের। ইতিহাসের সাক্ষী হয়ে থাকা টাইটানিকের ধ্বংসাবশেষ দেখতে গিয়ে একই পরিণতি হয়েছে সাবমার্সিবল টাইটানের পাঁচ যাত্রীর। এরই মধ্যে টাইটানের ছিন্নভিন্ন টুকরা শনাক্ত করলেও অভিযাত্রীদের দেহের কোনো চিহ্ন খুঁজে পাওয়া যায়নি।

কানাডার উপকূল থেকে স্থানীয় সময় রোববার সকাল ছয়টায় (বাংলাদেশ সময় বিকেল চারটা) টাইটানিকের ধ্বংসাবশেষের দিকে যাত্রা করে সাবমার্সিবল টাইটান। এর প্রায় দুই ঘণ্টা পর ৩৮০০ মিটার গভীরে গিয়ে ওপরের জাহাজ থেকে সংযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। প্রায় সাড়ে চারদিন তল্লাশির পর বৃহস্পতিবার স্থানীয় সময় দুপুরে (বাংলাদেশ সময় রাত দশটা) টাইটানিকের অদূরে ধ্বংসাবশেষ পাওয়ার কথা জানায় মার্কিন কোস্টগার্ড।


বিজ্ঞাপন


যা বলল মার্কিন কোস্টগার্ড
এরপর স্থানীয় সময় দুপুর তিনটায় (বাংলাদেশ সময় বৃহস্পতিবার দিবাগত রাত একটা) এক সংবাদ সম্মেলেন মার্কিন কোস্টগার্ড খুঁজে পাওয়া ধ্বংসাবশেষটি সাবমার্সিবল টাইটানের বলে জানায়।

মার্কিন কোস্টগার্ড জানিয়েছে, টাইটানিকের ধ্বংসাবশেষের ১৬০০ ফুট (প্রায় ৫০০ মিটার) দূরে পড়েছিল টাইটানের ধ্বংসাবশেষ। এর বেশ কয়েকটি টুকরা শনাক্ত করা গেছে।

titan us
সংবাদ সম্মেলনে কথা বলছেন মার্কিন কোস্টগার্ড কর্মকর্তা রিয়ার অ্যাড. জন মাগার

মার্কিন কোস্টগার্ডের কর্মকর্তা রিয়ার অ্যাড. জন মাগার সংবাদ সম্মেলনে বলেন যে, মহাসাগরের তলদেশে পানির চাপ নিতে না পেরে বিস্ফোরিত হয়েছে টাইটান। এতে থাকা পাঁচ যাত্রীর কেউই বেঁচে নেই।

এই কঠিন পরিস্থিতিতে ধ্বংসাবশেষ খুঁজে পাওয়াকে সান্ত্বনা হিসেবে দেখছেন তিনি। এছাড়া সেখানে আরও তল্লাশি চালিয়ে যাওয়া হবে বলে জানিয়েছেন জন মাগার।

নিহতদের মরদেহ বা দেহের কোনো চিহ্ন থাকলে সেগুলো অনুসদ্ধানের চেষ্টা করা হবে বলে জানিয়েছেন মার্কিন এই কোস্টগার্ড কর্মকর্তা। তবে এ বিষয়ে সম্ভাবনা ক্ষীণ এবং অত্যন্ত চ্যালেঞ্জিং বলে উল্লেখ করেছেন তিনি। মার্কিন এই কর্মকর্তা বলেছেন যে, তাদের লাশ হয়তো খুঁজে পাওয়া যাবে না।

টাইটানের পরিচালনাকারী কোম্পানি ওশানগেটও সাবমেরিনটির ধ্বংসের কথা জানিয়েছে। এ নিয়ে শোক প্রকাশ করেছে তারা।

টাইটানে ছিলেন যে পাঁচ যাত্রী
টাইটানের ক্যাপসুলে ছিলেন পাঁচ পর্যটক। এর মধ্যে ছিলেন ওশানগেটের প্রতিষ্ঠাতা এবং প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা স্টকটন রাশ (৬১)।
এছাড়াও ছিলেন- ব্রিটিশ ধনকুবের, বিমান সংস্থা অ্যাকশন এভিয়েশনের চেয়ারম্যান হামিশ হার্ডিং (৫৮), পাকিস্তানের এংরো করপোরেশনের ভাইস চেয়ারম্যান শাহজাদা দাউদ (৪৮)ও তার ছেলে সুলেমান দাউদ (১৯), ফরাসি পর্যটক পল অঁরি নারজিলে (৭৭)।

কোথায় রয়েছে টাইটানিক
১৯১২ সালে ইংল্যান্ডের নিউ সাউদাম্পটন থেকে নিউ ইয়র্কের উদ্দেশে প্রথম যাত্রায় বিশাল আইসবার্গের ধাক্কায় ডুবে গিয়েছিল তখনকার সবচেয়ে বড় যাত্রীবাহী জাহাজ টাইটানিক, প্রাণ গিয়েছিল দেড় হাজার মানুষের।

দুটুকরো হয়ে যাওয়া টাইটানিকের ধ্বংসাবশেষটি রয়েছে আটলান্টিকের ৩ হাজার ৮০০ মিটার নিচে। ১৯৮৫ সালে ওই ধ্বংসাবশেষ খুঁজে পাওয়া যায়। আটলান্টিক মহাসাগরের এ এলাকাটি কানাডার নিউফাউন্ডল্যান্ডের সেইন্ট জোন্স থেকে ৭০০ কিলোমিটার দক্ষিণে।

একে

ঢাকা মেইলের খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

সর্বশেষ
জনপ্রিয়

সব খবর