মারাত্মক অর্থনৈতিক সংকটে লেবানন। কয়েক বছর ধরে চলা এই সংকটের এখনও কোনো সমাধান মেলেনি। এমন অবস্থায় দেশটির একাধিক ব্যাংকে হামলা করেছে সাধারণ মানুষ। নিজেদের জমানো অর্থ ফেরত পেতে আগুন জ্বালিয়ে ও জানালার কাচ ভেঙে বিক্ষোভ দেখিয়েছেন তারা।
বৃহস্পতিবার রাজধানী বৈরুতের বাইরের একটি উপশহরে এমন বিক্ষোভ অনুষ্ঠিত হয়। সেখানকার মাউন্ট লেবানন গভর্নরেটের সিন এল-ফিলে, ব্যাংক অডি, ব্যাংক অফ বৈরুত এবং বাইব্লোস ব্যাংকের শাখাগুলোতে হামলা চালায় তারা।
বিজ্ঞাপন
বিক্ষোভকারীরা দেশটির শাসকদের আর্থিক নিয়ন্ত্রণের জন্য ব্যাপক ক্ষুব্ধ। এমন ব্যবস্থা দেশটির সাধারণ মানুষের সঞ্চয় ধ্বংস করেছে।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের গভর্নর রিয়াদ সালামেহসহ দুর্নীতির সাথে জড়িত কর্মকর্তাদের জবাবদিহি করার আহ্বান জানিয়েছে বিক্ষোভকারীরা। এছাড়া তারা তাদের জমানো অর্থ ফেরত চায়।
এক বিক্ষোভকারী বলেন, 'আমাদের ধৈর্য্য শেষ। আমরা খুব দীর্ঘ অপেক্ষা করেছি, এটা যথেষ্ট।'
অন্য একজন বলেছেন যে, তারা ব্যাংকগুলোকে একটি বার্তা পাঠাচ্ছেন। তিনি বলেন, 'আমরা আমাদের অধিকার হারাবো না। আজ নয় এবং ১০০ বছর পরেও নয়। এটি একটি বার্তা যা তাদের বোঝা দরকার।'
বিজ্ঞাপন
২০১৯ সাল থেকে ভয়াবহ অর্থনৈতিক সংকটে রয়েছে লেবানন। বিশ্বব্যাংক এটিকে আধুনিক ইতিহাসের সবচেয়ে খারাপ অবস্থা বলে মনে করছে। দেশটির মুদ্রা লেবানিজ পাউন্ড সংকট শুরু হওয়ার পর থেকে মার্কিন ডলারের বিপরীতে মূল্যের ৯৮ শতাংশেরও বেশি হারিয়েছে।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন যে, দেশটির সংকটের মূলে রয়েছে কয়েক দশকের দুর্নীতি ও অব্যবস্থাপনা। একটি নির্দিষ্ট রাজনৈতিক শ্রেণী ১৯৭৫-৯০ সাল পর্যন্ত গৃহযুদ্ধের পর থেকে লেবানন শাসন করেছে। ব্যাংক অব লেবাননের গভর্নর রিয়াদ সালামেহ রাজনৈতিক শ্রেণীর কর্মকর্তাদের মধ্যে রয়েছেন যারা দুর্নীতি কেলেঙ্কারিতে জড়িয়ে পড়েছেন। তাদেরকে এই সংকটের জন্য দায়ী করা হয়।
গভর্নর সালামেহ জনসাধারণের তহবিল থেকে কয়েক মিলিয়ন ডলার আত্মসাৎ করেছেন কিনা তা তদন্তের অংশ হিসাবে ফ্রান্সে তার বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেছে। এপর গত মাসে তার বিরুদ্ধে একটি ইন্টারপোল নোটিশ জারি করা হয়েছিল।
সালামেহ অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। লেবাননের সংসদ ১২তম বারের মতো রাষ্ট্রপতি নির্বাচন করতে এবং কয়েক মাস ধরে চলার রাজনৈতিক অচলাবস্থার অবসান ঘটাতে ব্যর্থ হয়েছে।
সূত্র: আল জাজিরা
একে

