শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল, ২০২৪, ঢাকা

অভিবাসনপ্রত্যাশীদের নিজ দেশে ফেরত পাঠাতে চায় ইইউ

অভিবাসন ডেস্ক
প্রকাশিত: ০১ এপ্রিল ২০২৩, ০৪:৫৮ পিএম

শেয়ার করুন:

অভিবাসনপ্রত্যাশীদের নিজ দেশে ফেরত পাঠাতে চায় ইইউ

যেসব আশ্রয়প্রার্থীর আবেদন বাতিল হয়েছে তাদেরকে দেশে ফেরত পাঠানোর মাধ্যমে বর্তমান পরিস্থিতি সামাল দেওয়ার চেষ্টা করা জরুরি বলে জানিয়েছেন ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) অভিবাসন বিষয়ক উচ্চ পর্যায়ের কর্মকর্তারা।

আশ্রয়ের যোগ্য নয় এমন অভিবাসীর ২১ শতাংশ নিজ নিজ দেশে ফেরত পাঠানো হয়েছে জানিয়ে ইইউর স্বরাষ্ট্র কমিশনার ইলভা ইয়োহানসন বলেন, ‘আশ্রয় আবেদনের অধিকারকে সুরক্ষিত করতে আন্তর্জাতিক আইন অনুযায়ী যারা আশ্রয়ের যোগ্য নন, তাদের ক্ষেত্রে যথাযথ পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। আমাদের অভিবাসন দরকার। তবে তা হবে আইনি প্রক্রিয়ায়।’


বিজ্ঞাপন


ফিরতে হবে সাড়ে তিন লাখ অভিবাসনপ্রত্যাশীকে

ইউরোপীয় কমিশনের সর্বশেষ পরিসংখ্যান অনুযায়ী, ২০২১ সালে তিন লাখ ৪০ হাজার বিদেশিকে নিজ নিজ দেশে ফেরত যেতে বলা হয়েছে। কিন্তু তাদের অনেকেই বিভিন্ন কারণে ফেরত যায়নি বলে জানা গেছে।

অর্গানাইজেশন ফর ইকোনোমিক কো-অপারেশন অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট বলেছে, এভাবে দেশে ফেরত যাওয়ার বিষয়টি নানাভাবে হয়ে থাকে। এটি সম্ভবত স্বপ্রণোদিত একটি উদ্যোগ, যা রাষ্ট্রের হস্তক্ষেপ ছাড়া অভিবাসী নিজেই করে থাকেন, অথবা রাষ্ট্র নিজেই এর আয়োজন করে।

এ ধরনের প্রত্যাবাসনে কাউন্সেলিং বেশ জরুরি বলে মনে করে সংস্থাটি। কারণ তারা চান, একজন অভিবাসনপ্রত্যাশী যেন নিজে বুঝে শুনে সিদ্ধান্তটি নিতে পারেন।


বিজ্ঞাপন


অভিবাসন বিষয়ক আন্তর্জাতিক সংস্থা আইওএম এক জরিপে জানিয়েছে, দেশে ফেরত পাঠানো ব্যক্তিদের ৮০ শতাংশ মানুষ নতুন জীবন শুরু করতে যে সহযোগিতা পেয়েছেন, তা নিয়ে তারা সন্তুষ্ট৷ 

এদিকে প্রত্যাবাসন ও নতুন করে জীবন শুরু করার বিষয়ে ইইউর যে নীতিমালা সে বিষয়ে সতর্ক করছে অধিকার সংস্থাগুলো। তাদের দাবি, স্বেচ্ছা প্রত্যাবাসনের জন্য এবং প্রত্যাবাসনের পর সেই সমাজে নিজেকে একীভূত করতে যে সহায়তা দেওয়া হয়, তা আসলে প্রত্যাবাসনের মোড়কে দেওয়া মানবিক সহযোগিতার মতো। সমালোচনা এড়াতে এটি করা হয়ে থাকে।

অভিবাসীদের নিয়ে কাজ করা প্রো অ্যাজাইল নামের একটি সংস্থা জানিয়েছে, ইরাকের এক নারী ইউরোপিয়ান কোর্ট অব হিউম্যান রাইটসের বিরুদ্ধে একটি মামলা দায়ের করেছেন। তার বাবা স্বেচ্ছায় ফিনল্যান্ড থেকে দেশে ফিরে যাওয়ার পর গুলিতে নিহত হন। নিজ দেশে নির্যাতনের মুখে পড়ার আশঙ্কা থাকলেও তার আশ্রয় আবেদন বাতিল করা হয়েছিল। প্রত্যাবাসনের অপেক্ষা না করে তিনি তখন স্বেচ্ছায় দেশে ফেরত চলে গিয়েছিলেন এবং এর একমাস পর নিহত হন৷

এমন প্রেক্ষিতে জার্মানির প্রত্যাবাসন এবং সমাজে একীভূত হওয়ার এই নীতির সমালোচনা করেছে রিটার্ন ওয়াচ নামে একটি সংস্থা৷ তাদের দাবি, এই নীতির মাধ্যমে যত বেশি সম্ভব অভিবাসীকে দেশে ফেরত পাঠাতে চায় জার্মানি। যত দ্রুত সম্ভব এবং যত কম খরচে, কম ঝামেলায় অভিবাসীদের দেশে ফেরত পাঠাতে চান তারা। কারণ, এটি এমন একটি প্রক্রিয়া, যা সাধারণ মানুষ সহজে গ্রহণ করে থাকে বলে দাবি সংস্থাটির।

সংস্থাটির প্রশ্ন, দেশ ছাড়তে বাধ্য হওয়া একজন মানুষ এভাবে ফেরত গিয়ে সমাজে কিভাবে একীভূত হতে পারে?

এর পরিপ্রেক্ষিতে মরক্কো, আফগানিস্তান, ইরাক, নাইজেরিয়া এবং মালিতে ফেরত যাওয়া অভিবাসীদের বর্তমান অবস্থার নিয়ে গবেষণা করে সংস্থাটি। তাদের দাবি, স্বেচ্ছায় ফেরত যাওয়া আসলে প্রত্যাবাসনের চেয়ে তেমন আলাদা কিছু নয়৷ স্বেচ্ছায় ফেরত যাওয়ার এবং ফিরে গিয়ে আবার জীবন শুরু করার জন্য যে সহযোগিতা করা হয় তা আসলে স্বেচ্ছায় হয় না৷ বরং প্রয়োজনের তাগিদে এবং আর কোনো বিকল্প না থাকায় এই পদ্ধতি হাতে নেওয়া হয়৷ 

সুরক্ষাই হলো আশ্রয় প্রক্রিয়ার মূল বিষয়, মনে করিয়ে দেয় সংস্থাটি৷ তবে, এর উত্তরে আইওএম জার্মানির পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, স্বেচ্ছা ফেরত যাওয়ার বিষয়টি যদি বেশি সংখ্যক অভিবাসীকে দেশে ফেরত পাঠানোর চেষ্টা হিসেবে ব্যাখ্যা করা হয়, তাহলে তা হবে পুরো প্রক্রিয়াটির সরলীকরণ৷

সূত্র: ইনফোমাইগ্রেন্টস

এমএইচটি

ঢাকা মেইলের খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

সর্বশেষ
জনপ্রিয়

সব খবর