উত্তর আফ্রিকার দেশ লিবিয়ায় প্রতি পাঁচ জন বিদেশি নাগরিকের মধ্যে চার জনই নথিহীন৷ উন্নত জীবনের খোঁজে ইউরোপের বিভিন্ন দেশের পৌঁছানোর চেষ্টায় দেশটিতে জড়ো হয়েছেন তারা৷
ইউরোপমুখী এসব অভিবাসনপ্রত্যাশীদের আর দেশটিতে রাখা সম্ভব হচ্ছে না বলে জানিয়েছে লিবিয়া সরকার৷ অভিবাসন পরিস্থিতি ‘অগ্রহণযোগ্য’ বলেও উল্লেখ করেছে দেশটি৷
বিজ্ঞাপন
ইটালি থেকে তিনশ কিলোমিটার বা ১৮৫ মাইল দূরের দেশ লিবিয়া৷ ফলে ইউরোপে উন্নত জীবনের আশায় সাব-সাহারা আফ্রিকার বিভিন্ন দেশ থেকে আসা অভিবাসনপ্রত্যাশীদের কাছে লিবিয়া হয়ে উঠেছে প্রধানতম ট্রানজিট পয়েন্ট৷
এদিকে, অনিয়মিত অভিবাসন নিয়ন্ত্রণে ইউরোপীয় ইউনিয়ন তাদের প্রচেষ্টা অব্যাহত রেখেছে৷ এমন পরিস্থিতিতে, অনেক অভিবাসনপ্রত্যাশীদের পক্ষে ভূমধ্যসাগর পাড়ি দেয়া কঠিন হয়ে উঠেছে৷ ফলে, তাদের অনেকেই আটকা পড়েছেন লিবিয়ায়৷
১০ জুলাই যুদ্ধবিধ্বস্ত লিবিয়ার ত্রিপোলিভিত্তিক প্রশাসনের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ইমাদ ট্রাবেলসি বলেছেন, ‘বর্তমানে লিবিয়ায় আনুমানিক ২৫ লাখ বিদেশি রয়েছেন৷’
বিজ্ঞাপন
সংবাদ সম্মেলনে এসে দেশটির স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আরো বলেন, এদের মধ্যে ৭০ থেকে ৮০ শতাংশ অনিয়মিতভাবে দেশটিতে বসবাস করছেন৷
‘অভিবাসন ইস্যুটি আমাদের জাতীয় নিরাপত্তার সঙ্গে সম্পৃক্ত’ জানিয়ে ট্রাবেলসি বলেন, ‘এই সমস্যাটি সমাধানের সময় এসেছে৷’
তিনি বলেন, ‘লিবিয়া এটি আর টানতে পারছে না, আর মূল্যও দিতে পারছে না৷’
অভিবাসনপ্রত্যাশীদের কাছে লিবিয়া একটি ট্রানজিট দেশের বদলে স্থায়ী বসবাসের দেশ হয়ে উঠছে বলেও মন্তব্য করেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ট্রাবেলসি৷ তিনি বলেন, অনিয়মিত অভিবাসীরা ‘আমাদের কোনো করও দিচ্ছেন না’।
তাই, ‘লিবিয়ায় অভিবাসীদের পুনর্বাসন অগ্রহণযোগ্য’ বলে জানিয়ে দিয়েছেন তিনি৷
২০১১ সালে দীর্ঘ দিনের স্বৈরশাসক মোয়াম্মার গাদ্দাফির পতনের পর বহু বছর ধরে চলা যুদ্ধ এবং বিশৃঙ্খলা থেকে এখনও উঠে দাঁড়াতে পারেনি লিবিয়া৷ অস্থিতিশীলতা সুযোগ নিয়ে দেশটিতে আধিপত্য বিস্তার করেছে চোরাকারবারি এবং মানবপাচারকারীরা৷
সংবাদ সম্মেলনে ট্রাবেলসি আরো জানিয়েছেন, এ বছরের শুরু থেকে এ পর্যন্ত জাতিসংঘের একটি প্রকল্পের মাধ্যমে বিভিন্ন দেশের ছয় হাজার অভিবাসনপ্রত্যাশীকে নিজ নিজ দেশে ফেরত পাঠিয়েছে লিবিয়া৷
আরও পড়ুন: নিরক্ষর শরণার্থীদের নিয়ে বিপাকে ফ্রান্স
ত্রিপোলিতে ১৭ জুলাই থেকে শুরু হতে যাচ্ছে ট্রান্স-মেডিটারিয়ান মাইগ্রেশন ফোরাম৷ লিবিয়া সরকার জানিয়েছে, আফ্রিকান ও ইউরোপীয় সরকারগুলোকে একত্রিত করে ‘অভিবাসনপ্রত্যাশীদের উৎস দেশগুলোতে উন্নয়ন প্রকল্প গ্রহণে নতুন কৌশল’ নেয়া হবে এই ফোরামের মাধ্যমে৷
অনিয়মিত অভিবাসন নিয়ন্ত্রণে জোরালো পদক্ষেপ গ্রহণে বেশ তৎপর রয়েছে ইউরোপীয় ইউনিয়ন এবং ইটালি৷ তাদের এই প্রচেষ্টার মধ্যেই এমন বৈঠকের আয়োজন করা হচ্ছে৷
তথ্যসূত্র: ইনফো মাইগ্রেন্টস
এজেড