শনিবার, ২০ এপ্রিল, ২০২৪, ঢাকা

নিরাপদ পানি ও স্যানিটেশন খাতে বৈষম্য নিরসনের দাবি

নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ২৩ মে ২০২৩, ১২:১২ পিএম

শেয়ার করুন:

নিরাপদ পানি ও স্যানিটেশন খাতে বৈষম্য নিরসনের দাবি

আসন্ন ২০২৩-২৪ অর্থবছরের জাতীয় বাজেটে ওয়াশ (পানি, স্যানিটেশন ও হাইজিন) খাতে আঞ্চলিক অসমতা হ্রাস ও বৈষম্য নিরসনে অগ্রাধিকার দিয়ে তহবিল বরাদ্দ প্রয়োজন বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা। এ লক্ষ্যে আসন্ন বাজেটে এডিপি বরাদ্দে ৫ দফা প্রস্তাব দিয়েছেন তারা।

মঙ্গলবার (২৩ মে) জাতীয় প্রেসক্লাবের আব্দুস সালাম মিলনায়তনে ওয়াশ সেক্টর নেটওয়ার্ক আয়োজিত ‘২০২৩-২৪ জাতীয় বাজেটে নিরাপদ পানি, স্যানিটেশন ও হাইজিন (ওয়াশ) খাতে বরাদ্দ’ শীর্ষক বাজেট পূর্ব সংবাদ সম্মেলনে এই দাবি জানানো হয়।


বিজ্ঞাপন


সংবাদ সম্মেলনটি যৌথভাবে আয়োজন করে, ওয়াটারএইড, পিপিআরসি, ইউনিসেফ, ফানসা, বাউইন, এফএসএম নেটওয়ার্ক, স্যানিটেশন অ্যান্ড ওয়াটার ফর অল, অ্যান্ড ওয়াটার পোভার্টি, ওয়াশ অ্যালায়েন্স ইন্টারন্যাশনাল এবং এমএইচএম। 

এতে ওয়াশ খাত সংশ্লিষ্ট অংশীজনদের পক্ষ থেকে বিশিষ্ট অর্থনীতিবিদ এবং পিপিআরসি চেয়ারম্যান ড. হোসেন জিল্লুর রহমান মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন।

তিনি বলেন করেন, আসন্ন অর্থবছরের জন্য ওয়াশ খাতের বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচি (এডিপি) বরাদ্দের ক্ষেত্রে আঞ্চলিক বৈষম্য নিরসন এবং সংশ্লিষ্ট সম্প্রদায়ের সম্পৃক্ততাকে অগ্রাধিকার দেওয়া জরুরি। বিশেষ করে চর, হাওর ও পাহাড়ি অঞ্চলসহ জলবায়ুগত ঝুঁকির আওতাধীন সুবিধাবঞ্চিত এলাকা এবং আন্তঃনগর বৈষম্য রয়েছে। এই দুইটি বিষয়ে আঞ্চলিক বৈষম্য নিরসনে গুরুত্ব দিতে হবে।

ড. জিল্লুর রহমান আরও বলেন, শতভাগ নিরাপদ পানীয় এবং স্যানিটেশন সংক্রান্ত জাতীয় ও এসডিজি লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে একটি বহুখাত ভিত্তিক (মাল্টি- এজেন্সি) সমন্বয় নীতি অবলম্বন করতে হবে। এর মাধ্যমে মাঝারি শহর (সেকেন্ডারি টাউন) এবং নগরায়ন প্রক্রিয়ার আওতাধীন গ্রামগুলোতে (আরবানাইজড ভিলেজ), পদ্মাবর্ত (ফিকল রাজ) ব্যবস্থাপনার জন্য তহবিল বরাদ্দে গুরুত্ব দেওয়া উচিত। এটি টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা (এসডিজি) অর্জনের অন্যতম পূর্বশর্ত।


বিজ্ঞাপন


এ সময় হোসেন জিল্লুর রহমান ওয়াটারএইডের সহযোগিতায় পিপিআরসি পরিচালিত ওয়াশ খাতে বাজেট বরাদ্দ বিষয়ক গবেষণা ফলাফল তুলে ধরেন। এতে দেখা যায়, ওয়াশ খাতে এডিপি বরাদ্দ আপাত ঊর্ধ্বমুখী হলেও বস্তুত পূর্ববর্তী অর্থবছরের তুলনায় এই আনুপাতিক বৃদ্ধির হার (৫.৪৪ শতাংশ) সামগ্রিক বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচির (এডিপি) বৃদ্ধির হারের (৭.৪ শতাংশ) তুলনায় কম। পারিবারিক আয় ও ব্যয় জরিপ ২০২২ (এইচআইইএস ২০২২) অনুযায়ী শতকরা ৯২.৩২ ভাগ জনসংখ্যা উন্নত টয়লেট সুবিধার আওতাভুক্ত, অন্যদিকে ওপেন ডেফিকেশন (উন্মুক্ত স্থানে মলত্যাগ) এর আওতায় এখনো রয়েছে ০.৬৯ ভাগ জনগোষ্ঠী। 

সংবাদ সম্মেলনে ওয়াশ বরাদ্দে আন্তঃনগর বৈষম্যের ফলে বিদ্যমান সমস্যার বিষয়টি তুলে ধরা হয়। একইসঙ্গে ২০২৩-২৪ এডিপি বরাদ্দে আরও যৌক্তিক এবং ন্যায়সঙ্গত তহবিল বন্টনের প্রস্তাব করা হয়। 

এ সময় আলোভকরা ডিপিএইচইর ওয়াশ, ডিআরআর এবং ফিকল স্লাজ অ্যান্ড ওয়েস্ট ম্যানেজমেন্টের (এফএসডব্লিউএম) আওতাধীন প্রকল্পগুলোকে দুর্যোগ ঝুঁকি মোকাবিলায় যোগাযোগ এবং সামাজিক সম্পৃক্ততার মাধ্যমে উন্নত সহনশীলতা গঠনের জন্য ভূয়সী প্রশংসা করা হয়।

এডিপি বরাদ্দে প্রস্তাবনা

  • দুর্গম এলাকা (চর, উপকূল, জলবায়ু ঝুঁকিপূর্ণ এলাকা, হাওর এবং পাহাড়ি অঞ্চল) এবং আন্তঃনগর বৈষম্যের প্রতি আরও গভীর মনোযোগ প্রয়োজন।
  • পরবর্তী এডিপি বাজেটে আধা-শহর, ক্রমঃবর্ধমান অঞ্চল এবং নগরায়ন প্রক্রিয়ার আওতাধীন গ্রামগুলোতে নতুন করে সৃষ্ট ওয়াশ চ্যালেঞ্জগুলো মোকাবিলায় বর্ধিত এফএসএম (ফিকাল স্লাজ ম্যানেজমেন্ট) অর্থায়ন প্রয়োজন।
  • স্বাস্থ্যবিধি সংক্রান্ত আন্তঃখাতগুলোতে প্রচারণা বৃদ্ধির পাশপাশি অর্থ বরাদ্দ বৃদ্ধিও ইতিবাচক ফলাফল আনতে পারে, তবে কেবল স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে এর বাস্তবায়ন আশানুরূপ ফল বয়ে আনবে না। এ লক্ষ্যে একটি মাল্টি-এজেন্সি নীতি গ্রহণে জোর দেওয়া উচিত, সেই সাথে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের হ্যান্ড হাইজিন ফর অল রোডম্যাপের বাস্তবায়ন প্রয়োজন।
  • ওয়াশ খাতে উচ্চতর নীতিগত অগ্রাধিকার নিশ্চিতের লক্ষ্যে এডিপি বরাদ্দের ক্ষেত্রে পরিবেশ, জলবায়ু পরিবর্তন এবং দুর্যোগের কেন্দ্রস্থলের ওপর মনোনিবেশ করা প্রয়োজন।
  • সংশ্লিষ্ট খাতে নতুন নতুন চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় এডিপি বরাদ্দের ক্ষেত্রে জলবায়ু পরিবর্তন ও দুর্যোগ সহনশীলতা সম্পর্কিত বিভিন্ন প্রকল্প এবং কর্মসূচি- যার মধ্যে রয়েছে দুর্যোগ ঝুঁকি সংক্রান্ত যোগাযোগ ও সামাজিক সম্পৃক্ততা বৃদ্ধিসহ (আরসিসিই) দুর্যোগকালীন ওয়াশ, এসএমওএসএস ও এফএসএম- এসব বিষয়ে অগ্রাধিকার দেওয়া প্রয়োজন।

এমএইচ/এইউ 

ঢাকা মেইলের খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

সর্বশেষ
জনপ্রিয়

সব খবর