বৃহস্পতিবার, ২৮ মার্চ, ২০২৪, ঢাকা

যক্ষ্মা নিয়ন্ত্রণ কর্মসূচি: ১০ বছরে প্রাণ বেঁচেছে ২৩ লাখ মানুষের

নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ২২ মার্চ ২০২৩, ০৩:৫৬ পিএম

শেয়ার করুন:

যক্ষ্মা নিয়ন্ত্রণ কর্মসূচি: ১০ বছরে প্রাণ বেঁচেছে ২৩ লাখ মানুষের

বাংলাদেশে যক্ষ্মা নির্মূলের নানাবিধ পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। গত ২০১২ থেকে ২০২১ সাল পর্যন্ত জাতীয় যক্ষ্মা নিয়ন্ত্রণ কর্মসূচি এবং সহযোগী সংস্থাগুলো যক্ষ্মা নিয়ন্ত্রণে উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি অর্জন করেছে। এসব কার্যক্রম প্রায় ২৩ লাখ মানুষের জীবন বাঁচাতে সহায়তা করেছে।

বুধবার (২২ মার্চ) রাজধানীর হোটেল শেরাটনে স্বাস্থ্য অধিদফতরের জাতীয় যক্ষ্মা নিয়ন্ত্রণ কর্মসূচি ও আইসিডিডিআর,বি পরিচালিত ইউএসএআইডি’স অ্যালায়েন্স ফর কমব্যাটিং টিবি ইন বাংলাদেশ (এসিটিবি) আয়োজিত আলোচনা সভায় এসব তথ্য জানানো হয়।


বিজ্ঞাপন


‘হ্যাঁ! আমরা যক্ষ্মা নির্মূল করতে পারি!’ এই প্রতিপদ্যকে সামনে রেখে আয়োজিত অনুষ্ঠানে জানানো হয়, এবারের প্রতিপাদ্যে যক্ষ্মা নির্মূলে নেতৃত্ব, বিনিয়োগ, উদ্ভাবন এবং সহযোগিতার আহ্বান জানানো হয়েছে। ২০২৩ সাল যক্ষ্মা নির্মূল কার্যক্রমের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ বছর। কেননা আগামী সেপ্টেম্বর মাসে বিশ্বের বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্রপ্রধানরা যক্ষ্মা বিষয়ক জাতিসংঘের উচ্চ পর্যায়ের বৈঠকে অংশগ্রহণ করবেন।

প্রতিবছর ২৪ মার্চ বিশ্ব যক্ষ্মা দিবস পালিত হয়। বাংলাদেশে যক্ষ্মা পরিস্থিতি উত্তরণে জনসচেতনতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে আয়োজিত এই দিবস পালনে ইউএসএআইডি যুক্ত থাকতে পেরে গর্বিত।

অনুষ্ঠানে দেশের বর্তমান যক্ষ্মা পরিস্থিতি তুলে ধরেন স্বাস্থ্য অধিদফতরের টিবি-এল ও এএসপি শাখার লাইন পরিচালক ডা. মো. মাহফুজার রহমান সরকার। তিনি জানান, জাতীয় যক্ষ্মা নিয়ন্ত্রণ কর্মসূচি এবং সহযোগী সংস্থাগুলো গত কয়েক দশকে যক্ষ্মা নিয়ন্ত্রণে উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি অর্জন করেছে। ২০১২ থেকে ২০২১ পর্যন্ত প্রায় ২৩ লক্ষ মানুষের জীবন বাঁচাতে সহায়তা করেছে। ২০১৫ সালে প্রতি ১ লাখে প্রায় ৪৫ জন লোকের মৃত্যু হত, সেখানে ২০২১ সালে তা ২৫ জনে নেমে এসেছে।
সেবার পরিধি বাড়ানো হয়েছে জারিয়ে মাহফুজুর রহমান বলেন, ওষুধ-প্রতিরোধী যক্ষ্মার পরিষেবাকে বিকেন্দ্রীকরণের মাধ্যমে যক্ষ্মা বিষয়ক স্বাস্থ্য সেবা জনসাধারণের হাতের নাগালে পৌঁছে দেওয়া হয়েছে। দীর্ঘমেয়াদী ইনজেকশনের মাধ্যমে প্রচলিত কষ্টকর চিকিৎসা পদ্ধতি থেকে সম্পূর্ণ মুখে খাওয়ানো স্বল্পমেয়াদী ওষুধ-প্রতিরোধী চিকিৎসা পদ্ধতি যক্ষ্মা চিকিৎসায় একটি বড় পরিবর্তন এনেছে।

তিনি আরও বলেন, এসব প্রচেষ্টা সত্ত্বেও বাংলাদেশ এখনও যক্ষ্মার উচ্চ ঝুঁকিপূর্ণ দেশগুলোর একটি। দেশে প্রতি মিনিটে একজন ব্যক্তি যক্ষ্মায় আক্রান্ত হচ্ছে। ২০২১ সালে প্রায় ৩ লাখ ৭৫ হাজার মানুষ যক্ষ্মায় আক্রান্ত হয়েছে। এর মধ্যে ৪২ হাজার মানুষ মারা গেছে। অর্থাৎ প্রতি ১২ মিনিটে যক্ষ্মার কারণে একজনের মৃত্যু হয়েছে।


বিজ্ঞাপন


স্বাস্থ্যের এই লাইন ডিরেক্টর ২০৩৫ সালের মধ্যে বাংলাদেশ থেকে যক্ষ্মা নির্মূলে যক্ষ্মা শনাক্তকরন, নোটিফিকেশন, সেবার সহজলভ্যতা, প্রতিরোধমূলক কার্যক্রম, রাজনৈতিক প্রতিশ্রুতি এবং সর্বস্তরের অংশগ্রহণের গুরুত্ব বিষয় তুলে ধরেন।

এছাড়াও অনুষ্ঠানে জাতীয় যক্ষ্মা নিয়ন্ত্রণ কর্মসূচির নেতৃত্বে আইসিডিডিআর, বি পরিচালিত ইউএসএআইডি’স এসিটিবি কার্যক্রম ২০২০ সালের মার্চ মাসে সূচনার পর থেকে স্বাস্থ্য ব্যবস্থার উন্নয়নের মাধ্যমে, যক্ষ্মা রোগ শনাক্তের হার বৃদ্ধি করতে সক্ষম হয়েছে বলে জানানো হয়। এসিটিবি কিভাবে যক্ষ্মা মোকাবেলায় সাফল্য অর্জন করেছে, তার কিছু গল্প অনুষ্ঠানে উপস্থাপন করা হয়।

লোকগান গম্ভীরার তালে তালে পুতুলনাচ প্রদর্শনীর মধ্য দিয়ে যক্ষ্মা বিষয়ক তথ্যনির্ভর একটি পরিবেশনা উপস্থাপন করা হয়। এটি শিশুদের যক্ষা বিষয়ে রাজশাহী বিভাগে জনসচেতনতা বৃদ্ধিতে সাফল্যের সাথে কাজ করেছে।

এমএইচ/এমআর

ঢাকা মেইলের খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

সর্বশেষ
জনপ্রিয়

সব খবর