যশোরে আদ-দ্বীনের ৫০০ শয্যার অত্যাধুনিক হাসপাতালের যাত্রা

এছাড়া ইমারজেন্সি এবং অসুস্থ রোগীদের ওপর তলায় ওঠা-নামার জন্য রয়েছে র‌্যাম্প বা ঢালু সিঁড়ি। ইমারজেন্সি এক্সিটের জন্য নির্মাণ করা হয়েছে সাধারণ সিঁড়ি। রাখা হয়েছে অগ্নি-নির্বাপণ ব্যবস্থা।

নিচতলাতেই রয়েছে বৃহৎ এক্সিডেন্ট অ্যান্ড ইমারজেন্সি বিভাগ।  যেখানে দুর্ঘটনায় আহত অথবা অন্য যেকোনো রোগে আক্রান্তদের জরুরি চিকিৎসাসেবা দেওয়ার জন্য ওটি এবং ১০টি অত্যাধুনিক বেড স্থাপন করা হয়েছে। পাশেই রয়েছে ২৪ ঘণ্টা মায়ের ছোঁয়া ক্যাফেটেরিয়ায় স্বল্পমূল্যে সব ধরনের স্বাস্থ্যসম্মত খাবার এবং নাস্তা প্রাপ্তির সুবিধা। এখানে স্থাপন করা হয়েছে এয়ার অ্যাম্বুলেন্স কাউন্টার।

এই হাসপাতালের প্রথম তলায় স্থাপন করা হয়েছে বিজনেস ক্যাশ কাউন্টার এবং ২৪ ঘণ্টা ফার্মেসি। ডান পাশেই গর্ভবতী মায়েদের জন্য চেকআপ কেন্দ্র। সহজলভ্যতার জন্য তার পাশেই রাখা হয়েছে আল্ট্রাসনোগ্রাফি বিভাগ। একই তলায় পশ্চিম পাশে স্থাপিত হয়েছে বৃহৎ শিশু বহির্বিভাগ ওপিডি। যেটা ইনডোর শিশু পার্কের আদলে সাজানো হয়েছে। চিকিৎসাসেবা গ্রহণের সাথে বিনোদনের আধুনিক সুযোগ-সুবিধা পাবে শিশু রোগীরা। হাসপাতালে শিশু রোগীদের জন্য এই ধারণাটি সম্পূর্ণ নতুন এবং ব্যতিক্রমী উদ্যোগ। শিশু বহির্বিভাগের সাথেই রয়েছে টিকাদান কেন্দ্র।

হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ আরও জানিয়েছে, প্রথমতলার পূর্বপাশে রয়েছে প্রশাসনিক বিভাগ। যেখানে হাসপাতালের পরিচালক, ম্যানেজার, ইমারজেন্সি ম্যানেজার, সুপারভাইজার এবং হিসাব বিভাগের কর্মকর্তারা দায়িত্ব পালন করবেন।

দ্বিতীয় তলায় পূর্ব পাশে নির্মাণ করা হয়েছে ফিজিওথেরাপি ক্লিনিক। মহিলা এবং পুরুষের জন্য আলাদাভাবে সাজানো হয়েছে এই বিভাগটি। এই তলায় রয়েছে ডায়াবেটিক বহির্বিভাগ, ইএনটি, অর্থপেডিক্স, চর্ম ও মনোরোগ বিভাগ।

তৃতীয় তলায় পূর্বপাশে বৃহৎ চক্ষু আউটডোর। রোগীদের সুবিধার জন্য তৃতীয় তলায় আরেকটি বিজনেস কাউন্টার ও ওপিডি ম্যানেজার বিভাগ রাখা হয়েছে। পাশেই রয়েছে মেডিসিন ও সার্জারি বহির্বিভাগ, ব্লাড ব্যাংক, প্যাথলজি, এক্স-রে ও ইসিজি রুম।

চতুর্র্থ তলা থেকে শুরু হয়েছে ইনডোরে ভর্তি রোগীদের সেবা কার্যক্রম। পূর্বপাশে আনোয়ারা ফিটাল মেডিসিন ওয়ার্ড, এরপর প্রসূতি মায়েদের জন্য নাসিমা ওয়ার্ড। এই তলায় দুটি লেবার রুমে ৫৪টি বেড এবং পাশেই একটি ওটি। পোস্ট অপারেটিভ ওয়ার্ড। পশ্চিম পাশে রয়েছে ১৩ শয্যার আইসিইউ বিভাগ। চতুর্র্থ তলা থেকে শুরু করে প্রতিটি তলায় একটি করে কাউন্সিলিং রুম রাখা হয়েছে।

পঞ্চম তলায় পূর্ব পাশে ইমারজেন্সিসহ ২৮ শয্যার এনআইসিইউ। কিডনি কেয়ার ইউনিট, মহিলা এবং পুরুষ  রোগীদের ৪৩ শয্যার কিডনি ডায়ালাইসিস এবং মেডিসিন ওয়ার্ড। ৬ষ্ঠ তলা  থেকে অষ্টম তলা পর্যন্ত প্রচলিত আইসিইউ থেকেও উন্নতমানের প্রযুক্তি সমৃদ্ধ সর্বমোট ২৭ শয্যার এইচডিইউ সেবা বিভাগ প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে।

৬ষ্ঠ তলায় পূর্ব পাশে ২৩ শয্যার শিশু ওয়ার্ড স্থাপন করা হয়েছে। এখানে চক্ষু বিভাগে আলাদা মহিলা ও পুরুষ ওয়ার্ড রয়েছে। একই তলায় পশ্চিম পাশে স্থাপন করা হয়েছে এইচডিইউ। সপ্তমতলা পূর্ব পাশে ১৯ শয্যার মহিলা চক্ষু ওয়ার্ড। এই তলায় আরও রয়েছে সার্জারি, অর্থপেডিক্স এবং ইএনটি বিভাগের মহিলা ও পুরুষ ভর্তি রোগীদের জন্য আলাদা ওয়ার্ড। অষ্টম তলায় আটটি জেনারেল অপারেশন থিয়েটার। পশ্চিম পাশে ২১ শয্যার পোস্ট অপারেটিভ ওয়ার্ডে ১৬ বেডের রিকভারি ওয়ার্ড। রয়েছে  পেসেন্ট ওয়েটিং লাউঞ্জ।

নবম তলায় রয়েছে উন্নত কার্ডিয়াক ওটি ও ক্যাথলাব। পাশেই রয়েছে ২১ শয্যার বিশিষ্ট কার্ডিয়াক ইমারজেন্সি বিভাগ। যেখানে এয়ার অ্যাম্বুলেন্সযোগে আসা রোগীরা জরুরি কার্ডিয়াক সেবা পাবেন। এয়ার অ্যাম্বুলেন্স সার্ভিসের জন্য ভবনের ১০ তলায় এবং রুফটপে নির্মাণ করা হয়েছে দুটি হেলিপ্যাড। ১০টি অ্যাম্বুলেন্সের মাধ্যমে সার্বক্ষণিক রোগী যাতায়াত সেবাও বাদ যায়নি।

এছাড়া সবধরনের গাড়ি পার্কিংয়ের জন্য যাবতীয় ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। খুলনা বিভাগ এবং  গোপালগঞ্জ জেলার প্রত্যন্ত গ্রামের মানুষ এয়ার অ্যাম্বুলেন্স সার্ভিসের মাধ্যমে কার্ডিয়াক চিকিৎসাসহ অন্যান্য জরুরি চিকিৎসা সেবা পাবেন। -বাসস

জেবি