মঙ্গলবার, ১৬ ডিসেম্বর, ২০২৫, ঢাকা

এত সমস্যার মূলে ভিটামিন ডি?

মাহফুজ উল্লাহ হিমু
প্রকাশিত: ১২ ফেব্রুয়ারি ২০২৩, ০৯:০৮ পিএম

শেয়ার করুন:

এত সমস্যার মূলে ভিটামিন ডি?

অস্থির এই সময়ে দেশের মানুষের সমস্যার যেন শেষ নেই। রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ, দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির পর যোগ হয়েছে তেল-গ্যাস-বিদ্যুতের দামবৃদ্ধি। এসবের বাইরেও রয়েছে ভয়াবহ বায়ুদূষণসহ দৈনন্দিন জীবনের নানা সমস্যা।

এরপরও জীবন থেমে নেই। চারপাশে এত সমস্যার মধ্যেও সাম্প্রতিক সময়ে দেশের অন্যতম আলোচিত একটি বিষয় আত্মহত্যা। গত বছর (২০২২ সালে) স্কুল, কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ের ৫৩২ জন শিক্ষার্থী আত্মহত্যা করেছেন। এরমধ্যে স্কুল পর্যায়ের ৩৪০ জন, পর্যায়ের কলেজ ১০৬ জন, বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ৮৬ জন। আত্মহননকারী শিক্ষার্থীদের মধ্যে ৫৪ জন মাদরাসা পড়ুয়া। তথ্য-উপাত্ত বিশ্লেষণে বলা যায়, ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে আত্মহত্যা। যার অন্যতম কারণ হিসেবে মানসিক অবসাদ বা ডিপ্রেশনকে দায়ী করেছেন বিশেষজ্ঞরা।


বিজ্ঞাপন


অন্যদিকে রাজধানীর বিভিন্ন স্থানের উঁচু ভবনের দিকে তাকালে চোখে পড়বে টাক সমস্যার সমাধান-সংক্রান্ত নানা পোস্টার। অনেকের কাছেই মনে হতে পারে, এই শহরে টাক সমস্যা যেন মহামারির রূপ নিয়েছে।

Vitamin Dউপরোল্লিখিত সমস্যা দুটির বিশ্লেষণ, কারণ ও প্রতিকার নিয়ে নানা পর্যায়ে প্রতিনিয়ত আলোচনা হচ্ছে। এগুলোর পেছনে দৈহিক বা মানসিক সমস্যা কীভাবে অবদান রাখছে তাও আলোচনা বা বিশ্লেষণ করা হয়। তারপরও কিছু বিষয় আড়ালেই থেকে যাচ্ছে। তেমনই একটি বিষয় ভিটামিন ‘ডি’।

স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞদের মতে, ভিটামিন ‘ডি’-এর ঘাটতি একটি মারাত্মক স্বাস্থ্যঝুঁকি। এতে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমে যাওয়া, নানা ধরনের ত্বকের রোগ হওয়া, ক্লান্তিতে ভোগা, ঘুম না হওয়া, চুল পড়া, অবসাদসহ মানসিক স্বাস্থ্যের অবনতি ঘটা, অবসাদ থেকে আত্মহত্যা প্রবণতা এমনকি ক্যানসার, স্ট্রোক, হার্ট অ্যাটাক ও কিডনি জটিলতার মতো জটিল রোগও দেখা দিতে পারে। ফলে ভিটামিন ‘ডি’র ঘাটতিজনিত সমস্যাকে হালকা করে দেখার সুযোগ নেই বলে মনে করেন স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা।

ভিটামিন ‘ডি’ কি সত্যিই এ ধরনের সমস্যার কারণ হতে পারে?


বিজ্ঞাপন


দা জার্নাল অব কসমেটিক ডার্মাটোলজিতে প্রকাশিত গবেষণা থেকে জানা যায়, ভিটামিন ডি চুলের ফলিকল বৃদ্ধি করে। চুল চক্রে ভিটামিন ডি গুরুত্বপূর্ণ ইতিবাচক ভূমিকা রাখে। এটি চুল পড়ার ক্ষেত্রে একটি সম্ভাব্য চিকিৎসা পদ্ধতি হিসেবে কার্যকর ভূমিকা রাখতে পারে। যদিও ভিটামিন ‘ডি’র অভাব থেকে মাথায় টাক পড়ার সমস্যার সঙ্গে কোনো সরাসরি যোগসূত্র পায়নি বলে জানিয়েছে ভারতের ব্যাঙ্গালুরুতে অবস্থিত ‘ভেনকাট সেন্টার ফর স্কিন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি’র গবেষকরা। অবশ্য অতীতের একটা গবেষণার কথা উল্লেখ করে তারা বলেন, ভিটামিন ‘ডি’র স্বল্পতা ‘অ্যালোপিশিয়া’ অর্থাৎ নারী ও পুরুষের এক ধরনের টাক পড়ার সমস্যায় ৩ শতাংশ ভূমিকা রাখে।

Vitamin Dচিকিৎসা-বিষয়ক ওয়েবসাইট ওয়েবএমডি ডটকম জানায়, ভিটামিন ‘ডি’র ঘাটতির ফলে চুলের ফলিকল স্থায়ীভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয় এবং কোষের বিকাশ প্রতিহত হয়।

যুক্তরাষ্ট্রের প্রবীণ জনগোষ্ঠীর উপর ভিটামিন ‘ডি’র প্রভাব নিয়ে গবেষণা করেছেন ড. জিল ল্যাভিগন ও ড. জেসন গিবস। দ্য ভেটেরান্স অ্যাফেয়ার্স সেন্টার অব এক্সিলেন্স ফর সুইসাইড প্রিভেন্স এবং জনস হপকিন্স ব্লুমবার্গ স্কুল অব পাবলিক হেলথের স্বাস্থ্য অর্থনীতিবিদ এবং পোস্ট ডক্টারাল ফেলোর গবেষণায় দেখা গেছে, প্রবীণদের মধ্যে যাদের ভিটামিন ডি সাপ্লিমেন্ট দেওয়া হয়েছে, তাদের আত্মহত্যা বা আত্মক্ষতির ঝুঁকি অন্যদের চেয়ে কম। আত্মহত্যার প্রবণতা বা ইচ্ছাকৃতভাবে নিজের ক্ষতি করার চিন্তা কমিয়ে দেয় ভিটামিন ডি। পুরো গবেষণাটিই ভিটামিন ‘ডি’র অভাবের সঙ্গে হতাশা বা মানসিক অসুস্থতার যোগসূত্র ফুটিয়ে তুলেছে। ভিটামিন ‘ডি’কে বয়স্কদের মধ্যে আত্মক্ষতি ও আত্মহত্যা প্রতিরোধের আরও একটি সম্ভাব্য উপায় হিসেবে দেখছেন তারা।

>> আরও পড়ুন: বিবাহিত পুরুষদের যে ভিটামিন খেতেই হবে

এছাড়া পিএলএস ওয়ান জার্নালে প্রকাশিত এক গবেষণায় জানা গেছে, যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক সামরিক সদস্যের মধ্যে যাদের আত্মহত্যার প্রবণতা ছিল ভিটামিন ডি সাপ্লিমেন্ট গ্রহণের ফলে তা কমে গেছে। আমেরিকান সাইকোলজিক্যাল অ্যাসোসিয়েশনের এ সংক্রান্ত এক গবেষণায় বলা হয়েছে,  প্রাপ্তবয়স্কদের তুলনায় প্রবীণদের আত্মহত্যা করে মারা যাওয়ার শঙ্কা দেড় গুণ বেশি। মানসিক হাসপাতালগুলোতে আত্মহত্যা-সংক্রান্ত প্রবণতায় অপেক্ষাকৃত নিরাপদ, সহজলভ্য ও সাশ্রয়ী ওষুধ হিসেবে ভিটামিন ‘ডি’র ট্রায়ালের প্রস্তাব রেখেছেন তারা।

এ বিষয়ে সেন্ট জন ফিশার কলেজের অধ্যাপক ড. জিল ল্যাভিগন বলেন, ভিটামিন ডি একাধিক সিস্টেমে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। এটি আমাদের হাড়ের স্বাস্থ্য, ত্বক, ইমিউন ফাংশন, নিউরোট্রান্সমিশন এবং ক্যালসিয়াম তৈরিসহ নানা কাজে সহায়তা করে। তাই এটির প্রভাবগুলো দেখা গুরুত্বপূর্ণ।

বাংলাদেশে ভিটামিন ‘ডি’র ঘাটতি পরিস্থিতি

আমাদের দেশে ভিটামিন ‘ডি’র ঘাটতির সমস্যাটি কতটা গুরুত্বের সাথে দেখা হচ্ছে তা নিয়ে প্রশ্ন রয়েছে। এ সংক্রান্ত পর্যাপ্ত গবেষণা ও সচেতনতারও ঘাটতি রয়েছে। একইসঙ্গে ভিটামিন ‘ডি’র পরীক্ষা ও ঘাটতির মান নির্ধারণ এবং এর ফলাফল কতটা বস্তাবসম্মত তা নিয়েও প্রশ্ন রয়েছে। তবে বিষয়টি নিয়ে একেবারেই গবেষণা হয়নি তাও বলা যাবে না। যদিও এসব গবেষণা সামগ্রিক পরিস্থিতি কতটা তুলে ধরে তা ভাবনার বিষয়।

Vitamin D২০২২ সালের জনস্বাস্থ্য পুষ্টি প্রতিষ্ঠানের জাতীয় পুষ্টি সেবা (এনএনএস) এবং আন্তর্জাতিক উদরাময় গবেষণা কেন্দ্র, বাংলাদেশের (আইসিডিডিআরবি) যৌথ জরিপে দেশের ভিটামিন ‘ডি’ ঘাটতি পরিস্থিতিকে উদ্বেগজনক বলে উল্লেখ করা হয়। ২০১৯ থেকে ২০২০ সালে পরিচালিত এই গবেষণায় দৈবচয়নের মাধ্যমে ২৫০টি উপজেলা নির্বাচন করা হয়। এসব উপজেলার ৬৬ শতাংশ গ্রামীণ এবং ৩৪ শতাংশ শহর অঞ্চল ছিল। নির্বাচিত উপজেলাগুলোর ৪ হাজার ৯০টি পরিবারের উপর গবেষণা চালানো হয়। এর মধ্যে এক হাজার ১৪ জন গর্ভবতী নন বা যারা বুকের দুধ খাওয়াচ্ছেন না এমন ১৫-৪৯ বছর বয়সী নারী এবং ৬ থেকে ৫৯ মাস বয়সী এক হাজার ৪১ জন শিশু ছিল।

গবেষণায় দেখা যায়, জরিপে অংশগ্রহণকারী বিভিন্ন বয়স ও লিঙ্গের মানুষদের শতকরা ২১ দশমিক ৯০ শতাংশের দেহে ভিটামিন ‘ডি’র ঘাটতি রয়েছে। এতে বিভিন্ন বিভাগীয় শহর ও গ্রামের মধ্যে বড় তারতম্য দেখা গেছে। তবে ভিটামিন ‘ডি’র ঘাটতি সর্বশেষ ২০১১-১২ সালে অনুষ্ঠিত জরিপের তুলনায় শতকরা ১৭ দশমিক ৭০ শতাংশ কম ছিল। এর মধ্যে সবচেয়ে উদ্বেগজনক চিত্র উঠে এসেছে গর্ভবতী নন বা যারা বুকের দুধ খাওয়াচ্ছেন না এমন নারীদের মধ্যে। এই জনগোষ্ঠীর শতকরা ৬৯ দশমিক ৯০ শতাংশ ভিটামিন ‘ডি’র ঘাটতিতে ভুগছেন। গ্রামাঞ্চলের তুলনায় শহরে ঘাটতির হার বেশি ছিল।

ভিটামিন ‘ডি’ ঘাটতিজনিত সমস্যা ও বাস্তবচিত্র

এ বিষয়ে জানতে চাইলে রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজের মেডিসিন বিভাগের সাবেক প্রধান অধ্যাপক ডা. রেদওয়ান আহমেদ ঢাকা মেইলকে বলেন, ভিটামিন ‘ডি’র ঘাটতির জন্য অনেক ধরনের সমস্যা হতে পারে। বিশেষত যারা তীব্র ভিটামিন ‘ডি’র ঘাটতিতে ভুগছেন তাদের মধ্যে মাসল পেইন, ফ্র্যাকচার, মাসল পুল বা মাংসপেশিতে টানসহ সিভিয়ার ক্ষেত্রে কনভার্সন বা রোগীর সচেতনতার পরিধি কমে যাওয়ার মতো ঘটনা ঘটতে পারে। প্রবীণ জনগণের মধ্যে রিস্ক অব ফ্র্যাক্চার অনেক বেশি হাই থাকে। ফলে তারা পড়ে গেলে বা গুরুতর কোনো আঘাত ছাড়াই তাদের ফ্যাকচার হচ্ছে। তাদের জীবনযাত্রার মান কমে যাচ্ছে। একইসঙ্গে এর কারণে স্ট্রোক, হার্ট ডিজিজ, কিডনি ডিজিজ, ক্যান্সার হচ্ছে। এখন সমস্যা হচ্ছে আমাদের দেশে ভিটামিন ‘ডি’র সঠিক মাত্রাটাই তো ঠিক নেই। এ নিয়ে নানা প্রশ্ন রয়েছে। কিন্তু রোগীদের প্রত্যেকেরই ‘ডি’র ঘাটতি রয়েছে বলে দেখা যায়। যদিও এসব সমস্যায় এর প্রকৃত কন্ট্রিবিউশন কতটুকু তা এখনও বলা যাচ্ছে না।

Vitamin Dতিনি আরও বলেন, যে সমস্যাগুলোর কথা আলোচনা হয় তা কিন্তু আমরা সেই পরিমাণে দেখি না যতটা ভিটামিন ‘ডি’ ঘাটতির কথা শুনতে পাই। এত বেশিই যদি ঘাটতি থাকতো তাহলে অস্টিওম্যালেসিয়া (অস্টিওপরোসিস এমন একটি রোগ যেখানে হাড় দুর্বল হয়ে যায় এবং হাড় ভাঙার ঝুঁকি বেড়ে যায়) বলে একটি কন্ডিশন আছে, যা মারাত্মক ভিটামিন ‘ডি’র ঘাটতি দীর্ঘসময় থাকলে দেখা যায়। প্রকৃত অর্থে এত ভিটামিন ‘ডি’র ঘাটতি থাকলে এটা ব্যাপকভাবে দেখা যেত, তা কিন্তু হচ্ছে না। এ জন্য ভিটামিন ডি সংক্রান্ত ক্যালসিয়াম ইফেক্টগুলো কোথায় কত তা এখনও নির্ধারণ করা যায়নি। ফলে আমরা বলতে পারছি না এটা ঠিক কতটা সমস্যা তৈরি করছে।

ভিটামিন ‘ডি’র ঘাটতি শনাক্তকরণ নিয়েও প্রশ্ন

অধ্যাপক রেদওয়ান বলেন, এটা এখনও সম্পূর্ণভাবে নিশ্চিত নয় যে ভিটামিন ‘ডি’র প্রভাবটা ঠিক কতটুকু। দেহে ভিটামিন ‘ডি’র মাত্রা নির্ধারণে যে মেজারমেন্টটি করা হয়, তা নিয়ে সারাবিশ্বেই প্রশ্ন রয়েছে। এক গবেষণায় দেখা গেছে, ভারতে যারা মাঠে ৬-৮ ঘণ্টা রোদে কাজ করে তাদের মধ্যে প্রায় ৪০ শতাংশের দেহে ভিটামিন ‘ডি’র ঘাটতি রয়েছে। কিন্তু এটি কোনোভাবেই হওয়ার কথা না। কারণ ভিটামিন ‘ডি’র প্রধান উৎস সূর্যের আলো আর তারা রোদের মধ্যেই কাজ করে। তখন একটি হাইপোথেসিস হয়েছিল যে, ভিটামিন ‘ডি’র যে কাট অব লেভেল আমরা ব্যবহার করছি, তা ডিফেক্টিভ হওয়ায় এত বেশি ঘাটতি দেখাচ্ছে। পাশাপাশি এটিও হতে পারে- লোকগুলোর কোনো একটি জেনেটিক এবনরমালিটি আছে, যে কারণে ভিটামিন ‘ডি’র পরিমাণে কিছুটা কম দেখাচ্ছে। কিন্তু তাদের ক্যালসিয়াম, ফসফেট, এলকালাইন ফসফাটেজ এবং প্যারাথাইরয়েড হরমোন স্বাভাবিক আছে। তাই এটি এখনও সঠিকভাবে বলা যাচ্ছে না যে এশিয়ান বিশেষত সাউথ-ইস্ট রিজিওনের জন্য আসলে কারা ভিটামিন ডি ডেফিসিয়েন্ট।

Vitamin Dএক্ষেত্রে নানা ষড়যন্ত্র তত্ত্ব রয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, ভিটামিন ‘ডি’র ঘাটতির ক্ষেত্রে ইন্ডাস্ট্রি ট্রিলিয়নের অভিযোগও রয়েছে। অর্থাৎ শিল্প খাত লাভবান হচ্ছে এমন একটি কনসেপ্টকে প্রোগ্রেস করা হয়েছে, যাতে অনেক বেশি ভিটামিন ডি সাপ্লিমেন্ট বিক্রি হচ্ছে। একইসঙ্গে ভিটামিন ডি মাপার মেশিন বিক্রি হচ্ছে। যিনি এই পরামর্শ দেওয়ার ব্যাপারে নেতৃত্ব দিয়েছিলেন সেই অস্টিওপরোসিস অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতির সব ক্রেডিবিলিটিসহ তার রেজিস্ট্রেশনও কেড়ে নেওয়া হয়েছে। কারণ তার বিরুদ্ধে ভিটামিন ডি সাপ্লিমেন্ট  উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান ও এটি পরীক্ষা করার মেশিন উৎপাদনকারীদের থেকে লভ্যাংশ নেওয়ার অভিযোগ উঠেছিল। যদিও এর কোনো প্রমাণ নেই। এটি একটি আলোচনা মাত্র।

তবে এটা সত্য যে ভিটামিন ‘ডি’র ঘাটতির কারণে মানসিক সমস্যা থেকে শুরু করে ক্যান্সার পর্যন্ত হতে পারে। তবে এটি সেভাবে হচ্ছে না। তাই এক্ষেত্রে অনেক জায়গা রয়েছে জানার এবং বড় পরিসরে গবেষণা করার। কিছু প্রশ্নের উত্তর জানা প্রয়োজন। কেন নির্ধারিত পরীক্ষা ও মানে সাউথ এশিয়ান জনগণের ভিটামিন ‘ডি’র ঘাটতি থাকলেও ক্যালসিয়াম, ফসফেট, এলকালাইন ফসফাটেজ এবং প্যারাথাইরয়েড হরমোন স্বাভাবিক রয়েছে? কারণ ভিটামিন ‘ডি’র ঘাটতি থাকলে এগুলো ঠিক থাকার কথা না। এক্ষেত্রে লক্ষণ হিসেবে প্রাথমিকভাবে সিভিয়ার ভিটামিন ডি ঘাটতিতে ভোগা রোগীদের অস্টিওম্যালেসিয়া আছে কিনা তা দেখা হয়, যোগ করেন অধ্যাপক রেদওয়ান আহমেদ।

যুক্তরাষ্ট্রের গবেষণা ও বাংলাদেশ

যুক্তরাষ্ট্রের গবেষণা প্রসঙ্গে প্রখ্যাত এই মেডিসিন বিশেষজ্ঞ বলেন, এক্ষেত্রে সর্বজন স্বীকৃত কোনো কোনো রিকমেন্ডেশন নেই। ফলে বলা যাবে না যে, এ ধরনের সমস্যায় এটা করতে হবে, না করলে এই সমস্যাগুলো হতে পারে। এ অবস্থায় সবার আগে আমাদের এটা নির্ধারণ করতে হবে কোন রোগীকে ভিটামিন ‘ডি’র চিকিৎসা দেব, কাকে দেব না। কারণ এই গবেষণাগুলো সামগ্রিকভাবে স্বয়ংসম্পূর্ণ বলে আমার কাছে মনে হয় না। সব রোগীকে এর চিকিৎসা রিকমেন্ডেশন করলে আমার গরিব দেশের লোকেদের দ্বারা তা করা সম্ভব নয়। এর শনাক্তকরণ পরীক্ষাটিও ব্যয়বহুল। ফলে ঢালাওভাবে স্ক্রিনিং করাটা কঠিন। এমনকি অনেক সময় আমেরিকাতেও এর চিকিৎসা ইন্স্যুরেন্স কাভার করছে না। এ অবস্থায় আমার দেশে কোনো রোগীর এ ধরনের লক্ষণ থাকলে পরীক্ষা ও চিকিৎসা করতে হবে। কিন্তু ঘর-বাড়ি, জমি-গরু বিক্রয় করে পরীক্ষা করানোটা কতটুকু যৌক্তিক তা নিয়ে আমার মনে প্রশ্ন আছে। এটি এড়াতে আমাদের আরও তথ্যের প্রয়োজন যে, কার জন্য এই চিকিৎসা জরুরি।

এমএইচ/জেএম

ঢাকা মেইলের খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

সর্বশেষ
জনপ্রিয়

সব খবর