মঙ্গলবার, ১৬ এপ্রিল, ২০২৪, ঢাকা

নাক ডাকা: গভীর ঘুম নয়, নীরব ঘাতক

নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ০২ ডিসেম্বর ২০২২, ০৭:২৯ এএম

শেয়ার করুন:

নাক ডাকা: গভীর ঘুম নয়, নীরব ঘাতক

ঘুমের মধ্যে নাক ডাকা আমাদের সমাজে অত্যন্ত পরিচিত একটি বিষয়। ঘুমের মধ্যে নাক ডাকাকে অনেক সমস্যা মনে না করে গভীর ঘুমের লক্ষণ মনে করে থাকেন। তবে বাস্তবিক অর্থে নাক ডাকা প্রশান্তিময় ও তৃপ্তিদায়ক ঘুমের ব্যাঘাত ঘটানোসহ আর নানবিধ স্বাস্থ্যঝুঁকি তৈরি করে বলে জানিয়েছেন অ্যাসোসিয়েশন অব সার্জনস ফর স্লিপ অ্যাপনিয়া বাংলাদেশের প্রতিষ্ঠতা অধ্যাপক ডা. মনিলাল আইচ লিটু।

তিনি জানান, ঘুমের মধ্যে নাক ডাকার হৃদরোগ ও উচ্চ রক্ত চাপের অন্যতম প্রধান কারণ হয়ে উঠতে পারে। ঘুমের মধ্যে নাক ডাকা একটি প্রকট সমস্যা। আমাদের আশপাশের অনেক মানুষকেই এ সমস্যায় ভুগতে দেখি। মধ্যবয়স্ক পুরুষদের ৪০ ভাগ এবং নারীদের ২০ ভাগ জীবনের কোনো না কোনো সময় ঘুমের মধ্যে নাক ডাকা সমস্যায় আক্রান্ত হয়েছেন। এমনকি বাচ্চাদেরও অনেক সময় ঘুমের মধ্যে নাক ডাকতে দেখা গেছে। লক্ষণীয় বিষয় হচ্ছে যিনি ঘুমের মধ্যে নাক ডাকেন তিনি তা টের পান না। কিন্তু তার পাশে যিনি থাকেন তিনি বিরক্ত বোধ করেন।


বিজ্ঞাপন


নাক ডাকা সমস্যার কারণ
১. ঘুমের মধ্যে শ্বাস-প্রশ্বাসের গতিপথে কোনো বাধা পেলে বাতাস শ্বাসযন্ত্রে কাঁপুনি সৃষ্টি করে। এর ফলে নাক ডাকা শব্দ হয়।
২. নাকে পলিপ থাকলে বা সাইনাসের সমস্যা থাকলে নাক ডাকা শুরু হয়। ফলে নাক ডাকার শব্দ হয়।
 ৩. ওজন বেড়ে যাওয়ার সাথে সাথে গলার চার পাশের চর্বি জমা হওয়া।
৪. বাচ্চাদের নাকের পিছনে (Adenoid) বৃদ্ধি পাওয়া। 
৫. বয়সের সঙ্গে নাক ডাকা সম্পর্ক আছে। যত বয়স বাড়ার সাথে সাথে কণ্ঠনালি সরু হতে থাকে । ফলে নাক ডাকা শুরু হয়।
৬. লম্বা টান টান হয়ে শুলে অনেকে নাক ডাকে।
৭. গলার পেশির নমনীয়তা কমে গেলে।
৮. ধূমপান ও অ্যালকোহল এই সমস্যা বাড়ায়।

যে সমস্যা হয়
১. নাক ডাকা রোগীদের সিম্প্যাথেটিক নার্ভাস সিস্টেম উত্তেজিত থাকে। ফলে সিস্টোলিক ব্লাড প্রেশার বেশি থাকে যা পরবর্তীতে স্থায়ী উচ্চ রক্তচাপে পরিণত হতে পারে।
২. নাক ডাকা রোগীদের হার্ট অ্যাটাক বেশি হয়, হার্ট ফেইলিউরের ঝুঁকি বেশি হয়, এমনকি ঘুমের মধ্যে হঠাৎ মৃত্যুর কারণও হতে পারে নাক ডাকা।
৩. নাক ডাকা রোগীদের ডায়াবেটিস এবং স্ট্রোক আক্রান্ত হওয়া আশঙ্কা বেশি।

নাক ডাকা এড়াবেন যেভাবে
১. যারা নাক ডাকেন তারা চিৎ হয়ে না ঘুমিয়ে কাত হয়ে ঘুমাতে পারেন। চিৎ হয়ে ঘুমালে গলার পেশি শিথিল থাকে। ফলে নাক বেশি ডাকার আশঙ্কা থাকে।
২. ওজন কমালে ও অনেক সময় নাক ডাকা থেকে মুক্তি পেতে পারেন।
৩. অ্যালকোহল ও নেশাজাতীয় দ্রব্য পরিহার করতে হবে। 
৪. মাথার নিচে কয়েকটি বালিশ দিয়ে নাক ডাকা কমানো যেতে পারে। মাথার নিচে বালিশ বুকের চেয়ে মাথা বেশি উঁচুতে থাকে। এতে করে নাক ডাকার আশঙ্কা কিছুটা কমে যায়।
 ৫. ধূমপান করলে শরীরের অক্সিজেন ব্যবহার ক্ষমতা কমে যায়। এর ফলে বাতাস বের হওয়ার পথ সঙ্কুচিত হয়ে পড়ে। এর কারণেও নাক বেশি ডাকতে পারেন অনেক। তাই ধূমপানের অভ্যাস ত্যাগ করতে হবে।
৬. নির্দিষ্ট সময়ে ঘুমাতে যেতে হবে। এতে করে ঘুমের সঙ্গে শরীরের এক ধরনের সামঞ্জস্য তৈরি হয় ফলে অভ্যাসের ও পরিবর্তন হয়। 

এমএইচ/এএস

ঢাকা মেইলের খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

সর্বশেষ
জনপ্রিয়

সব খবর