বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল, ২০২৪, ঢাকা

কাঙ্ক্ষিত হারে বাড়েনি এইডস সচেতনতা

নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ০১ ডিসেম্বর ২০২২, ০৭:৫৩ এএম

শেয়ার করুন:

কাঙ্ক্ষিত হারে বাড়েনি এইডস সচেতনতা
ফাইল ছবি

আজ ১ ডিসেম্বর, বিশ্ব এইডস দিবস। এইডসের বিরুদ্ধে সচেতনতা বৃদ্ধি এবং এ রোগে মারা ব্যক্তিদের প্রতি শোক প্রকাশের লক্ষ্যে সারা বিশ্বে এই দিন পালন করা হয়। দিবসটির এ বছরের প্রতিপাদ্য ‘Putting Ourselves to the Test: Achieving Equity to End HIV’ অর্থাৎ সবাইকে টেস্টের আওতায় আনার মাধ্যমে সমতা অর্জন করে এইচআইভি শেষ বা নির্মূল করতে হবে।

বিশ্বব্যাপী দিবসটি পালনের উদ্দেশ্য হলো এইচআইভি ভাইরাসের সাথে লড়াই করে যারা বেঁচে আছেন তাদের দিকে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দেওয়া। একইসঙ্গে এইডস আক্রান্ত হয়ে যারা মারা গেছেন তাদের স্মরণ করা। মানবাধিকারের বিভাজন, বৈষম্য এবং উপেক্ষা এইচআইভি জয় করার ক্ষেত্রে প্রধান অন্তরায় বলে বিবেচনা করা হয়। এই বাস্তবতাকে সামনে রেখে এ বছর দিবসটির প্রতিপাদ্য নির্ধারণ করা হয়েছে।


বিজ্ঞাপন


বিশ্বের অন্যান্য দেশের মতো ১ ডিসেম্বর বাংলাদেশেও নানা আয়োজনে বিশ্ব এইডস দিবস পালন করে আসছে। দিবসটি উপলক্ষে সরকারি বেসরকারি বিভিন্ন সংস্থা ও সামাজিক সংগঠন নানা আয়োজন করে থাকে। সরকারি-বেসরকারি স্বাস্থ্যকর্মী, বেসরকারি সংস্থা এইডস প্রতিরোধ এবং নিয়ন্ত্রণ নিয়ে সকলকে সচেতন করতে এই দিনটি পালন করে। বিশ্বব্যাপী ১৯৮৮ সাল থেকে বিশ্ব এইডস দিবস পালন করা শুরু হয়। ঠিক তার পরের বছরে দেশে প্রথম এইচআইভি পজিটিভ রোগী শনাক্ত হয়। এ অবস্থায় সরকার টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রার (এসডিজি) এইচআইভি/এইডস-বিষয়ক লক্ষ্য অর্থাৎ ২০৩০ সালের মধ্যে দেশ থেকে এইডস রোগটি নির্মূল করার জন্য জাতিসংঘের কাছে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।

বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) তথ্যমতে, দেশের ২৮ দশমিক ৫ শতাংশ নারীই এইডস বিষয়ে জানেন না। তবে এইডসের অন্তত একটি বাহক সম্পর্কে জানেন শতকরা ৭১ দশমিক ৫ শতাংশ নারী। ৩৬ শতাংশ নারী সবগুলো বাহক সম্পর্কে জানেন। পাঁচ বছর আগে ২০১৬ সালে এ হার ছিল ২৯ শতাংশ। অর্থাৎ বাহক সম্পর্কে নারীদের মধ্যে সচেতনতার হার বেড়েছে ৭ শতাংশ। যদিও পরিকল্পনা ছিল ৮-১০ শতাংশ বাড়ানোর। সরকারের সচেতনতা বাড়ানোর ক্ষেত্রে কাঙ্ক্ষিত হারে প্রবৃদ্ধি না হওয়ায় নারীদের মধ্যে এইডস সংক্রমণের ঝুঁকি বাড়ছে বলে মনে করে সরকারি সংস্থা বিবিএস।

স্বাস্থ্য অধিদফতরের জাতীয় এইডস/এসটিডি কন্ট্রোল (এনএএসসি) প্রোগ্রামের তথ্যানুযায়ী, ২০২০ সালের নভেম্বর থেকে ২০২১ সালের নভেম্বর পর্যন্ত দেশে ১২ লাখ ৯১ হাজার ৬৯ জনের এইচআইভি/এইডস শনাক্তকরণ পরীক্ষা হয়েছে। আগের বছর এ সংখ্যা ছিল প্রায় ১৩ লাখ ৩২ হাজার ৫৮৯।

পরীক্ষায় প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী, দেশে গত বছর নতুনভাবে এইচআইভি সংক্রমিত ৭২৯ জনের মধ্যে পুরুষ ৪২০ জন, নারী ২১০ ও তৃতীয় লিঙ্গের জনগোষ্ঠী ১২ জন। গত এক বছরে নতুন আক্রান্তদের মধ্যে সাধারণ জনগোষ্ঠীর ১৮৬ জন (২৬ শতাংশ), রোহিঙ্গা ১৮৮ জন (২৬ শতাংশ), বিদেশফেরত প্রবাসী ও তাদের পরিবারের সদস্য ১৪৪ জন (২০ শতাংশ), ইনজেকশনের মাধ্যমে শিরায় মাদক গ্রহণকারী ৬১ জন (৮ শতাংশ), নারী যৌনকর্মী ১৭ জন (২ শতাংশ), সমকামী ৬৭ জন (৯ শতাংশ), পুরুষ যৌনকর্মী ৫৩ জন (৭ শতাংশ) ও ট্রান্সজেন্ডার ১৩ জন (২ শতাংশ) রয়েছেন। বিবিএস জরিপ অনুযায়ী, দেশে ১৪ হাজারেরও বেশি এইডস রোগী শনাক্ত হয়েছেন। চিকিৎসার আওতায় এসেছেন ৮৪ শতাংশ।


বিজ্ঞাপন


এইচআইভি সংক্রমণের প্রাথমিক লক্ষণ

১. দ্রুতগতিতে ওজন কমে যাওয়া এবং অনবরত দুর্বলতা অনুভব করা। এটি ওয়াসটিং সিনড্রোম নামে পরিচিত।

২. স্মৃতিশক্তি ধীরে ধীরে নষ্ট হওয়া। ঘুম ঘুম ভাব হতে পারে ব্রেনের সংক্রমণের কারণে। বিভ্রান্তি সৃষ্টি হতে পারে। এটি এইচআইভি এনসেফালোপ্যাথি নামে পরিচিত। ওয়াসটিং সিনড্রোম এবং এইচআইভি এনসেফালোপ্যাথি উভয়ই এইডস সংজ্ঞায়িত বা সংশ্লিষ্ট অসুস্থতা।

৩. রাতের বেলায় শরীর প্রচণ্ড ঘেমে যাওয়া।

৪. কিছু স্থানের লসিকাগ্রন্থি ফুলে যাওয়া।

৫. এক সপ্তাহের বেশি সময় ধরে ডায়রিয়া থাকলে।

৬. জিহ্বা বা মুখের ভিতর ব্যতিক্রমধর্মী দাগ দেখা দিলে।

এমএইচ/জেবি

ঢাকা মেইলের খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

সর্বশেষ
জনপ্রিয়

সব খবর