শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল, ২০২৪, ঢাকা

ফুল ডোজ ছাড়া অ্যান্টিবায়োটিক না কেনার পরামর্শ

নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ২৭ নভেম্বর ২০২২, ০৭:৫৭ পিএম

শেয়ার করুন:

ফুল ডোজ ছাড়া অ্যান্টিবায়োটিক না কেনার পরামর্শ

অ্যান্টিবায়োটিক রেজিস্ট্যান্সের জন্য ওষুধের খুচরা বিক্রি একটা বড় সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে বলে জানিয়েছেন স্বাস্থ্য অধিদফতরের মহাপরিচালক (ডিজি) অধ্যাপক ডা. এবিএম খুরশিদ আলম। এই অবস্থায় অ্যান্টিবায়োটিক কিনলে ফুল ডোজ কেনার নিয়ম করা উচিৎ বলে জানান তিনি।

রোববার (২৭ নভেম্বর) রাজধানীর গুলশানের লেকশোর হোটেলে আয়োজিত এক সেমিনারে এসব কথা বলেন তিনি। ‘অ্যান্টিমাইক্রোবিয়াল রেজিস্ট্যান্স সমস্যা প্রতিরোধ গড়ি সবাই মিলে‘ শীর্ষক এই সেমিনারের আয়োজন করা হয়।


বিজ্ঞাপন


স্বাস্থ্য অধিদফতরের ডিজি বলেন, ‘জ্বর হলেই ফার্মেসি থেকে সাধারণ ওষুধের সঙ্গে ২ -৩টা এন্টিবায়োটিক ট্যাবলেট নিয়ে যাচ্ছে সাধারণ মানুষ। এটি সাধারণ মানুষের মাঝে অ্যান্টিবায়োটিক রেজিস্ট্যান্সের অন্যতম বড় কারণ। এজন্য নিয়ম করা প্রয়োজন যে, কেউ অ্যান্টিবায়োটিক কিনলে ফুল ডোজ কিনতে হবে, না হয় কিনবে না। অ্যান্টিবায়োটিক ব্যবহারে আইন প্রয়োজন, সঙ্গে আইন প্রয়োগকারীও প্রয়োজন। এছাড়া দেখা যায় ফার্মাসিস্ট কোম্পানিরা ইনসেনটিভ তো ডাক্তারকে দিচ্ছে সঙ্গে কোয়াকদেরও দেওয়া হচ্ছে। আমরা ডাক্তারদের বন্ধ করলেও কোয়াককে তো আইনে আনা যাবে না। এজন্য শুধু আইন দিয়েও ব্যবস্থা হবে না।’

হাসপাতালে সংক্রমণ ছড়াচ্ছে জানিয়ে অধ্যাপক খুরশিদ আলম বলেন, ‘রোগীদের পকেটের খরচ বেড়ে যাচ্ছে। এর সঙ্গে যেই স্ট্যান্ডার্ড মেনে হাসপাতালে রোগীদের চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে তা ঠিক হচ্ছে কিনা সেটাও একটা বড় ইস্যু। আমরা যদি আন্তর্জাতিক মানের সঙ্গে তুলনা করি প্রধানত আমাদের অপারেশন থিয়েটার কিংবা বেড থেকে সংক্রমণ হওয়ারই কথা না, এটি আন্তর্জাতিকভাবে গ্রহণযোগ্য নয়। কিন্তু সেটা আমাদের এখানে হচ্ছে। আমাদের লোকজন বেশি আমাদের সুযোগ-সুবিধা কম।

himu-2‘প্রতিদিন আমাদের অপারেশন থিয়েটারগুলো থেকে জীবানুর সংক্রমণ ছড়াচ্ছে। আমরা থিয়েটারের নিয়ম-কানুন আমরা মানছি না। আমাদের ওয়ার্ড বয়, সিস্টার, লোকজন, রোগী এমনকি চিকিৎসকরাও মানছেন না। লোকজন সরাসরি ঢুকে যাচ্ছে গাউন পরছে না, তারা বাইরের কাপড় নিয়ে ঢোকে যাচ্ছে। এই বিষয়গুলো সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে দেখা উচিত।’

স্বাস্থ্য অধিদফতরের মহাপরিচালক আরও বলেন, ‘রোগীদের চিকিৎসায় ব্যবহৃত যন্ত্রপাতি সঠিকভাবে ব্যবহার করা হচ্ছে না। অপারেশনের যন্ত্রপাতি সঠিকভাবে ব্জীবানুমুক্ত না করে বারবার ব্যবহার করা হচ্ছে, এতে সংক্রমণ হয়ে থাকে। রোগীদের গ্যাস নেওয়ার পাইপ থেকে শুরু করে বিভিন্ন সেবা একই জিনিস থেকে ব্যবহার করছে অনেকে। এতে একজনের মুখের জীবানু ছড়াচ্ছে আরেকজনের কাছে। অনেক জীবানু আছে যেটা গরম পানি দিয়ে বয়েল করার পরও মারা যায় না। এ জীবানুও যাতে না থাকে সেটার জন্য ও ব্যবস্থা নিতে হবে।’


বিজ্ঞাপন


ভর্তি রোগীদের মাঝে সংক্রমণ রোধের উপায় তুলে ধরে অধ্যাপক খুরশীদ বলেন, ‘যখন কোনো একটি মেডিকেলে কোনো সংক্রমণ হচ্ছে তখন সেখান থেকে স্যাম্পল নিলাম, যেমন: হাসপাতালের বেড থেকে, অপারেশন থিয়েটার থেকে, সেখান কার টয়লেট থেকে এবং প্রয়োজনীয় জায়গা থেকে স্যাম্পল নিয়ে আমাদের বের করা উচিৎ কোন ধরনের বিষয়গুলো সবচেয়ে বেশি সংক্রমণ ছড়াচ্ছে। তখন আমরা বুঝতে পারব এই হাসপাতালে রোগী আসলে আমরা প্রথমে কোন অ্যান্টিবায়োটিকটা দেব। এটি সব হাসপাতালের জন্য এক ধরনের হবে না। এটি হবে এক হাসপাতালের জন্য এক ধরনের পলিসি।

হাসপাতালের বর্জ্য ব্যবস্থাপনাও বড় সমস্যা জানিয়ে তিনি বলেন, ‘আমরা ময়লা ফেলার জন্য আলাদা আলাদা বিন করে দিয়েছি, যে এখানে সাধারণ বর্জ্য এখানে সংক্রামক ধরনের ময়লা ফেলা হবে। কিন্তু দেখা যায় সব হাসপাতালের এই বিনগুলোর ময়লাকে নিয়ে সব একই জায়গায় ফেলে দেওয়া হয়। এতে সেখান থেকে পরিবেশ, মাটি, পানি এবং শস্য খেতেও জীবাণু সংক্রমিত হচ্ছে। এছাড়া হাসপাতালে ভর্তি রোগীরা একই বিছানায় ৩ জন ও থাকছে। এই রোগীরা যে টয়লেট ব্যবহার করছে কিংবা যেখানে থাকছে সেখান থেকে জীবানুর সংক্রমিত হচ্ছে কিনা সেটাও একটা বড় বিষয়। এই বিষয়গুলো আমাদের চিন্তা করতে হবে।’

এমএইচ/এমআর

ঢাকা মেইলের খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

সর্বশেষ
জনপ্রিয়

সব খবর