শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল, ২০২৪, ঢাকা

ঢামেক হাসপাতালের ফ্লোর-বারান্দাতেও রোগী

নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ১০ নভেম্বর ২০২২, ০৮:৪০ এএম

শেয়ার করুন:

ঢামেক হাসপাতালের ফ্লোর-বারান্দাতেও রোগী

সারাদেশের রোগীদের শেষ ভরসা ও আশ্রয়স্থল ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল। ফলে হাসপাতালটিতে সবসময় রোগীর চাপ লক্ষ্য করা যায়। সাম্প্রতিক ডেঙ্গুর প্রাদুর্ভাবের পরও তার ব্যতিক্রম হয়নি।

সরেজমিনে দেখা যায়, প্রত্যেক বিভাগে রোগীদের প্রচণ্ড ভিড়। প্রত্যেক ওয়ার্ডের বেড থেকে শুরু করে ফ্লোর ও বারান্দাতেও রোগী। এর মধ্যেই ডেডিকেটেড ডেঙ্গু শয্যাসহ বিভিন্ন ওয়ার্ডে ডেঙ্গু রোগীদের চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। শয্যা না পেয়ে অনেক রোগীকে মশারি টানিয়ে মেঝেতেও শুয়ে থাকতে দেখা গেছে।

নয় বছর বয়সী শিশুকে নিয়ে হাসপাতালে আসা এক অভিভাবকের সাথে কথা হয় এই প্রতিবেদকের। আব্দুল হক নামে ওই অভিভাবক বলেন, আমার বাসা রাজধানীর শনির আখড়ায়। এলাকায় মশা অনেক বেশি থাকায় সবসময় সতর্ক ছিলাম। তবুও মেয়েটা ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়েছে। তিনদিন জ্বর থাকার পর আজ সকালে হাসপাতালে নিয়ে এসেছি। বাসায় স্যালাইনসহ সব চিকিৎসা দেওয়া হলেও গতকাল রাত থেকেই অবস্থা অবনতির দিকে ছিল। তাই আর অপেক্ষা না করে এখানে নিয়ে এসেছি।

হাসপাতালটিতে ভর্তি ডেঙ্গু রোগীদের একটা বড় অংশই শিশু। এর মধ্যে বেশ কয়েকজন বৃদ্ধও রয়েছেন, যারা ডেঙ্গু ছাড়াও বিভিন্ন জটিলতায় ভুগছেন।

রোগীদের সেবা ও পরিস্থিতির বিষয়ে জানতে চাইলে কর্তব্যরত এক চিকিৎসক বলেন, গত মাস থেকে রোগীর চাপ বেড়েছে। হাসপাতালটিতে এমনিতেই সারা দেশ থেকে আসা জটিল রোগীদের চাপ রয়েছে। এর মধ্যে ডেঙ্গু রোগী বাড়ায় পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে হিমশিম খেতে হচ্ছে। রোগীদের বেশিরভাগ সংকটজনক অবস্থায় আসায় তা আরও জটিল হচ্ছে। তবে ডেঙ্গু ওয়ার্ডে প্রশিক্ষিত চিকিৎসক, নার্স ও স্বাস্থ্যকর্মীর ঘাটতি নেই বলে জানান তিনি।

dengue-patients


বিজ্ঞাপন


এ বিষয়ে জানতে চাইলে হাসপাতালটির পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল নাজমুল হক ঢাকা মেইলকে বলেন, আমাদের এখানে সংকটাপন্ন রেফারেল পেশেন্ট বেশি আসে। ফলে কোনো রোগীকে ফেরত পাঠানোর সুযোগ নেই। যারা আসছে তাদের প্রত্যেককেই সেবা দেওয়ার চেষ্টা করি। এখানে বর্তমানে ১৮৮ জন ভর্তি রয়েছে। রোগীর সংখ্যা দিন দিন বাড়ছে। এ অবস্থাতেও আমাদের এখানে কোনো শয্যা সংকট নেই। আরও রোগী আসলেও আমরা তাদের সেবা দিতে পারব। তবে রোগী যেন না বাড়ে সে জন্য সংশ্লিষ্ট সবাইকে কাজ করতে হবে।

সম্প্রতিক সময়ে ডেঙ্গু পরীক্ষার নতুন ফি নির্ধারণের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, সরকারের যা নির্ধারিত আমরা তাই নিচ্ছি। নতুন ফি নির্ধারণের পর থেকে ডেঙ্গু পরীক্ষায় ১০০ টাকা করে নেওয়া হচ্ছে।

ওষুধ ও মশারির বিষয়ে তিনি বলেন, সরকারি নির্দেশনা অনুযায়ী ডেঙ্গু রোগীদের হাসপাতালের পক্ষ থেকে তাদের মশারি দিয়ে দিচ্ছি। এমনকি আমরা অন্য রোগীদের জন্যও মশারির ব্যবস্থা করেছি।

স্বাস্থ্য অধিদফতরের তথ্য মতে, ঢামেক হাসপাতালে এখন পর্যন্ত মোট দুই হাজার ৩২৪ জন রোগী ভর্তি হয়েছেন। তাদের মধ্যে দুই হাজার ১১৭ জন হাসপাতাল থেকে সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন। ১৮৮ জন রোগী বর্তমানে ভর্তি আছেন। এ সময় মশাবাহিত রোগটিতে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালটিতে মৃত্যুবরণ করেছেন ১৯ জন রোগী।

এমএইচ/এএস

ঢাকা মেইলের খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

সর্বশেষ
জনপ্রিয়

সব খবর