শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল, ২০২৪, ঢাকা

বিকল্প উপায়ে হাসপাতালে চিকিৎসাসেবা চালু রাখার চেষ্টা

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ০৪ অক্টোবর ২০২২, ০৫:৪৪ পিএম

শেয়ার করুন:

বিকল্প উপায়ে হাসপাতালে চিকিৎসাসেবা চালু রাখার চেষ্টা
রাজধানীর সেগুনবাগিচার বারডেম হাসপাতাল। ছবি: ঢাকা মেইল

জাতীয় গ্রিডে বিদ্যুৎ বিপর্যয়ের কারণে সর্বত্র অস্থিরতা দেখা দিয়েছে। কতক্ষণে বিদ্যুৎ আসবে তাও নিশ্চিত করে বলতে পারছে না কেউ। এমন অবস্থায় বেশি দুশ্চিন্তা দেখা দিয়েছে হাসপাতালে রোগীদের সেবা অব্যাহত রাখা নিয়ে। বিশেষ করে লম্বা সময় বিদ্যুৎহীন থাকলে আইসিইউ, সিসিইউ ও জরুরি অস্ত্রোপচার স্বাভাবিক রাখা চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়াবে বলে সংশ্লিষ্টরা বলছেন।

মঙ্গলবার (৪ অক্টোবর) বিকেল চারটার দিকে একাধিক সরকারি ও বেসরকারি হাসপাতালের কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, সবাই জেনারেটর দিয়ে এখন পর্যন্ত সবকিছু স্বাভাবিকভাবে পরিচালনা করতে পারছেন। গুরুত্বপূর্ণ জায়গাগুলোতে এখন পর্যন্ত কোনো সমস্যা হয়নি।


বিজ্ঞাপন


তবে কোনো কারণে জেনারেটরে ত্রুটি দেখা দিলে পরিস্থিতি ভয়াবহ আকার ধারণ করতে পারে বলে আশঙ্কা তাদের।

যেসব হাসপাতালে খোঁজ নেয়া হয়েছে, তাদের মধ্যে ঢাকা মেডিকেল, ইনস্টিটিউট বিকল্প সংযোগ দিয়ে কার্যক্রম চলছে। আর বেসরকারি হাসপাতালগুলো জেনারেটর দিয়ে কার্যক্রম চালাচ্ছে। ঢাকা মেডিকেল, ৩৩ কেবির আলাদা বিদ্যুতের সাব স্টেশন আছে। বিদ্যুৎ গেলে স্বয়ংক্রিয়ভাবে হাসপাতালে বিদ্যুৎ চলে আসে বলে জানিয়েছেন হৃদরোগ বিভাগের একজন চিকিৎসক।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে ওই চিকিৎসক ঢাকা মেইলকে বলেন, আমাদের কোনো সমস্যা হয় না। কখনও বিদ্যুৎ গেলে সঙ্গে সঙ্গে সাব স্টেশন থেকে বিদ্যুৎ পাওয়া যায়। আবার জেনারেটরও আছে। এখন পর্যন্ত কোনো সমস্যার কথা শুনিনি।

জাতীয় হৃদরোগ ইনস্টিটিউটের পরিচালক অধ্যাপক মীর জামাল উদ্দিন ঢাকা মেইলকে বলেন, হাসপাতালের জন্য যে বিকল্প লাইন আছে সেখান থেকে আমরা বিদ্যুৎ পাচ্ছি। কোনো সমস্যা নেই।


বিজ্ঞাপন


রাত পর্যন্ত কী চলার মতো পরিস্থিতি আছে- এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, যতক্ষণ জাতীয় গ্রিডের বিদ্যুতের সমস্যার সমাধান না হবে ততক্ষণ চলতে কোনো সমস্যা হবে না আশা করি।

ggg

সেগুনবাগিচার বারডেম হাসপাতাল-২ এ সরেজমিন ঘুরে দেখা গেছে, জেনারেটারের মাধ্যমে এখানে সব কিছু চালু রাখা হয়েছে। হাসপাতালটিতে দুটো পাওয়ারফুল জেনারেটর আছে। যার একটি বন্ধ রেখে অন্যটি চালু রাখা হচ্ছে। আবার কিছু সময় পর আরেকটি চালু করা হচ্ছে। এভাবে করে বিদ্যুৎ না আসা পর্যন্ত চলবে।

হাসপাতালটির একজন কর্মকর্তা জানান, এখানে বাচ্চাদের জন্য ২৮টি এনআইসিউ আছে। সেগুলোসহ সব সচল আছে। তবে তেল আনা না থাকলে বড় বিপদ হতে পারত।

এদিকে পাওয়ার গ্রিডে ট্রিপ ও বিদ্যুৎ সরবরাহ নিয়ে সবশেষ তথ্য অনুযায়ী, এমন সমস্যা হলে স্বাভাবিক হতে কিছুটা সময় লাগে। সেক্ষেত্রে সন্ধ্যা থেকে রাত ৮টার মধ্যে ঢাকা শহরের সব এলাকা, রাত ৯টার মধ্যে চট্টগ্রামের সব এলাকায় বিদ্যুৎ সরবরাহ স্বাভাবিক বলে আশা করা হচ্ছে।

মুগদা মেডিকেলের পরিচালক অধ্যাপক ডা. নিয়াতুজ্জামান ঢাকা মেইলকে বলেন, ’বিদ্যুতের বিপর্যয়ে সারাদেশের মতো আমাদেরও কিছুটা সমস্যা রয়েছে। তবে আমাদের জেনারেটরের ব্যবস্থা থাকায় জরুরি সেবা দিতে কোনো সমস্যা হচ্ছে না। সকল ধরনের জরুরি সেবা চালু আছে।'

রাত পর্যন্ত সমস্যা থাকলেও জরুরি সেবায় ব্যত্যয় ঘটবে না আশা প্রকাশ করে তিনি বলেন, 'আমাদের যতটা ব্যাকআপ আছে তাতে দীর্ঘ সময় সমস্যা হবে না।'

88

জাতীয় গ্রিডে কাজ করা বিদ্যুৎ বিভাগের ইঞ্জিনিয়ার ও টেকনিশিয়ানরা কাজ করছেন বলে জানা গেছে।

এদিকে সরকারি হাসপাতালের যখন এই অবস্থা তখন বেসরকারি হাসপাতালগুলো জেনারেটর দিয়ে সচল রাখা হচ্ছে।

ল্যাব এইড হাসপাতালের জনসংযোগ বিভাগ থেকে জানানো হয়েছে,  তাদের সাধারণত বিদ্যুৎ বিভাগ থেকে আগে জানানো হয়। সে অনুযায়ী তারা জেনারেটর প্রস্তুত রাখেন। কিন্তু আজকে হঠাৎ করে বিদ্যুতে ঝামেলা হলেও তারা শুরু থেকে জেনারেটর দিয়ে সব ঠিক রাখছেন।

তবে কয়েক দিনের টানা ছুটির কারণে রোগীর চাপ বেশ কম বলে জানিয়েছেন জনসংযোগ বিভাগের একজন কর্মকর্তা।

অন্যদিকে ইউনাইটেড হাসপাতালের একজন চিকিৎসক নাম প্রকাশ না করার শর্তে ঢাকা মেইলকে বলেন, দুপুরের পরে আউটডোর পুরোপুরি বন্ধ। ফলে সেখানকার সব লাইট, ফ্যান বন্ধ করে রাখা হয়েছে। জেনানেটর দিয়ে আইসিইউ, সিসিইউ, ওযার্ড, কেবিন ও অপারেশন থিয়েটার সচল রাখা হয়েছে। সেক্ষেত্রে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে যেখানে বেশি জরুরি সেখানে লাইন, ফ্যান সচল রাখা হচ্ছে। তবে এতে রোগীর খরচের চাপ বাড়তে পারে।

বিইউ/এমএইচ/জেবি

ঢাকা মেইলের খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

সর্বশেষ
জনপ্রিয়

সব খবর