বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল, ২০২৪, ঢাকা

রেটিনায় সমস্যা হতে পারে স্থায়ী অন্ধত্বের কারণ

নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ২৫ সেপ্টেম্বর ২০২২, ০৬:১৪ পিএম

শেয়ার করুন:

রেটিনায় সমস্যা হতে পারে স্থায়ী অন্ধত্বের কারণ

বিভিন্ন রকম শারীরিক ও চোখের সমস্যায় রেটিনা ক্ষতিগ্রস্ত হয়। এ অবস্থায় অবহেলা ও পর্যাপ্ত চিকিৎসা না পেলে তা 
আজীবন অন্ধত্বের কারণ হতে পারে জানিয়েছেন চক্ষু বিশেষজ্ঞরা।

রোববার (২৫ সেপ্টেম্বর) বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিএসএমএমইউ) শহীদ ডা. মিল্টন হলে বিশ্ব রেটিনা দিবস উপলক্ষে আয়োজিত সেমিনারে তারা এসব কথা বলেন।


বিজ্ঞাপন


আলোচকরা বলেন, চোখের ভেতরের খুবই গুরুত্বপূর্ণ অংশ রেটিনা। বিভিন্ন রকম শারীরিক ও চোখের সমস্যায় রেটিনা ক্ষতিগ্রস্ত হয়। ফলে একজন ব্যক্তি আজীবনের জন্য অন্ধ হয়ে যেতে পারে। দেশে রেটিনার সমস্যা বেড়েই চলেছে। কিন্তু এ নিয়ে মানুষের সচেতনতা কম। নানা রকম শারীরিক রোগ ও চোখের সমস্যায় রেটিনা আক্রান্ত হয়। ফলে একজন ব্যক্তি একেবারেই অন্ধ হয়ে যেতে পারে। ডায়াবেটিস বাংলাদেশে এখন মহামারি রূপে আর্বিভূত হয়েছে। ডায়াবেটিস চোখের সব অংশের তুলনায় রেটিনায় বেশী ক্ষতি করে।

এ সংক্রান্ত এক সমীক্ষা তুলে ধরে বলা হয়, অন্ধত্বের সামগ্রিক কারণের মধ্যে ডায়াবেটিক রেটিনোপ্যাথীর জন্য অন্ধত্ববরণ করে শতকরা ১২ দশমিক ৫ ভাগ। ডায়াবেটিস পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণে থাকলেও দীর্ঘদিনের ডায়াবেটিস আক্রান্ত রোগী এই একই সমস্যায় ভুগতে পারেন। ১৫ বৎসর বা আরও বেশি সময় ধরে যারা ডায়াবেটিসে ভুগছেন, তাদের ভেতরে প্রায় ২ শতাংশ মানুষ অন্ধ হয়ে যায়। আরও ১০ শতাংশের দৃষ্টিশক্তির গুরুতর অবনতি ঘটে। ডায়াবেটিস যাদের আছে তাদের উচ্চ রক্তচাপ থাকা খুবই স্বাভাবিক। এই রোগে চোখের রেটিনার নানা সমস্যা হতে পারে। সঠিক চিকিৎসা না হলে এখান থেকেও অন্ধত্ব হতে পারে।

তারা আরও জানান, রেটিনোপ্যাথী অব প্রিম্যাচিউরিটি বা অপরিণত শিশুর রেটিনার রোগ। এটি নতুন সমস্যা আমাদের দেশে। বর্তমানে আমাদের দেশে অপরিণত শিশুদের যত্ম নেওয়ার বিশেষ ইনটেনসিভ কেয়ার ইউনিটের সক্ষমতা বেড়েছে। বাংলাদেশে প্রতি বছর প্রায় ৩০ লাখ শিশু জন্মগ্রহণ করে। এদের মধ্যে প্রায় ৪ লাখ অপরিণত। অপরিণত শিশুর রেটিনা স্বাভাবিকভাবেই অপরিণত থাকে। শতকরা ৭০ ভাগ ক্ষেত্রে সেই রেটিনা ধীরে ধীরে পরিপূর্ণতা পায়। ৩০ ভাগ ক্ষেত্রে দেখা দেয় নানা সমস্যা। এই ৩০ ভাগ শিশুকে খুঁজে বের করতে দরকার চক্ষু বিশেষজ্ঞ দ্বারা পরীক্ষা বা স্ক্রিনিং। এই রোগের চিকিৎসা আছে। লেজার করা হয়, চোখের ভেতর ইনজেকশনও দেওয়া হয়। সঠিক সময়ে যদি এই রোগ ধরা যায়, তাহলে শিশুর দৃষ্টি রক্ষা করা সম্ভব। 

এ অবস্থায় রেটিনায় রোগ প্রতিরোধ করার জন্য  ডায়াবেটিসে আক্রান্ত হয়ে থাকলে বছরে একবার রেটিনা পরীক্ষা করাতে হবে। উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখতেই হবে। একইসঙ্গে বছরে একবার রেটিনা পরীক্ষা করাতে হবে। বয়স ৬০ এর ওপরে হলে বছরে একবার ম্যাকুলা বিষয়ে পরীক্ষা করাতে হবে। অপরিণত শিশু জন্মগ্রহণ করলে অবশ্যই সঠিক সময়ে চোখ পরীক্ষা করাতে হবে বলে জানান চক্ষু বিশেষজ্ঞরা।


বিজ্ঞাপন


এর আগে ‘রেটিনা সম্বন্ধে জানুন, দৃষ্টি সুরক্ষিত রাখুন’ প্রতিপাদ্যকে সামনে রেখে বিএসএমএমইউতে দেশে প্রথমবারের মতো বিশ্ব রেটিনা দিবস পালিত হয়েছে। দিবসটি উপলক্ষে বাংলাদেশ ভিট্রিও রেটিনা সোসাইটি একটি শোভাযাত্রা, একটি সেমিনার ও  রেটিনা নিয়ে উম্মুক্ত আলোচনা আয়োজন করে। শোভাযাত্রাটি বি-ব্লক থেকে শুরু হয়ে গোলচত্বর, বটতলা প্রদক্ষিণ করে শেষ হয়।

সোসাইটির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি ডা. জিয়াউল আহসানের সভাপতিত্বে এসব অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য (শিক্ষা ও গবেষণা) অধ্যাপক মো. জাহিদ হোসেন, এশিয়া প্যাসিফিক একাডেমি অফ অফথালমোলজির সভাপতি (ইলেক্ট) অধ্যাপক আভা হোসেন, বাংলাদেশ চক্ষু চিকিৎসক সমিতির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি অধ্যাপক আশরাফ সাঈদ, বাংলাদেশ ইউভিয়া সোসাইটির সভাপতি অধ্যাপক ডা. মো. শফিকুল ইসলাম, গ্লকোমা সোসাইটির সভাপতি অধ্যাপক হাসান শহীদ সোহরাওয়ার্দী, বাংলাদেশ সোসাইটি অব ক্যাটারেক্ট এন্ড রিফ্রাকটিভ সার্জনসের সভাপতি অধ্যাপক ডা. জাফর খালেদ এবং বাংলাদেশ একাডেমি অব অফথালমোলজির অনারারী সেক্রেটারী অধ্যাপক ডা. মো. শওকত কবীর প্রমুখ।

এমএইচ/একেবি

ঢাকা মেইলের খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

সর্বশেষ
জনপ্রিয়

সব খবর