ওষুধ প্রাপ্যতা ও মূল্য নিয়ন্ত্রণ নিশ্চিত করতে হবে

বাংলাদেশে বিপুল সংখ্যক মানুষ বিভিন্ন স্বাস্থ্যঝুঁকি সৃষ্টিকারী অসংক্রামক রোগ উচ্চ রক্তচাপে ভুগছে। এ দেশে প্রতি ৫ জনে ১ জন প্রাপ্তবয়স্ক ২১ শতাংশ মানুষ উচ্চ রক্তচাপ সমস্যায় ভুগছেন। যাদের অধিকাংশ নারী ও পুরুষ। তারা জানেই না যে তাদের উচ্চ রক্তচাপ রয়েছে। নিরবে এই রোগ শরীরের বিভিন্ন অংশকে ক্ষতিগ্রস্ত করছে। তবে উচ্চ রক্তচাপ ঝুঁকি মোকাবেলায় দেশের সকল কমিউনিটি ক্লিনিকগুলোতে রক্তচাপ পরীক্ষা ও উচ্চ রক্তচাপের ঔষধের প্রাপ্যতা নিশ্চিত এবং মূল্য নিয়ন্ত্রণ জরুরী। 

তবে এই সমস্যা মোকাবেলায় স্বাস্থ্যসম্মত জীবন-যাপনের অংশ হিসেবে অতিরিক্ত লবণ, তামাক ও মদ্যপান পরিহার, ট্রান্স ফ্যাটযুক্ত খাবার এড়িয়ে চলা, বাড়তি ওজন কমানো এবং নিয়মিত ব্যায়াম ও শারীরিকভাবে সক্রিয় থাকার কোনো বিকল্প নেই। 

রাজধানীর বাংলামোটরের প্লানার্স টাওয়ারে ‘হাইপারটেনশন অ্যান্ড হার্ট হেলথ’  শীর্ষক দুই দিনব্যাপী সাংবাদিক কর্মশালায় এসব তথ্য জানান জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা। 

আন্তর্জাতিক সংস্থা গ্লোবাল হেলথ অ্যাডভোকেসি ইনকিউবেটর (জিএইচএআই) এর সহায়তায় গবেষণা ও অ্যাডভোকেসি প্রতিষ্ঠান প্রজ্ঞা (প্রগতির জন্য জ্ঞান) এ কর্মশালার আয়োজন করে। 

বক্তারা বলেন, রক্তচাপ যদি স্বাভাবিক মাত্রার চেয়ে অনেক বেড়ে যায় তাহলে তাকে উচ্চ রক্তচাপ বা হাইপারটেনশন বলে। একজন প্রাপ্তবয়স্ক সুস্থ স্বাভাবিক মানুষের রক্তচাপ থাকে ১২০/৮০ মি.মি. পারদচাপ। রক্তচাপের মাত্রা দুইটি ভিন্ন দিনে ১৪০/৯০ মি.মি. পারদচাপ বা তার বেশি হলে বুঝতে হবে উচ্চ রক্তচাপের সমস্যা রয়েছে। তবে বয়স ভেদে রক্তচাপ কিছুটা কম বা বেশি হতে পারে। অধিকাংশ সময় উচ্চ রক্তচাপের নির্দিষ্ট কোনো লক্ষণ এবং উপসর্গ থাকে না। তবে কোনো কোনো ক্ষেত্রে সকালের দিকে মাথাব্যথা, নাক দিয়ে রক্ত পড়া, হৃৎপিণ্ডের অনিয়মিত ছন্দ, দৃষ্টিতে পরিবর্তন এবং কানে গুঞ্জন অনুভূতি প্রভৃতি উপসর্গ দেখা দিতে পারে। উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে না থাকলে হার্ট, কিডনিসহ শরীরের গুরুত্বপূর্ণ কয়েকটি অঙ্গে জটিলতা তৈরি হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। উচ্চ রক্তচাপের চিকিৎসা করা না হলে বুকে ব্যথা বা অ্যানজাইনা, হার্ট অ্যাটাক, হার্ট ফেইল এবং হার্ট বিট অনিয়মিত হওয়ার পাশাপাশি স্ট্রোক হতে পারে।

উল্লেখ্য, বিশ্বে প্রতিবছর ১ কোটিরও বেশি মানুষ উচ্চ রক্তচাপের কারণে মারা যায়, যা সকল সংক্রামক রোগে মোট মৃত্যুর চেয়েও বেশি।