শনিবার, ২৭ এপ্রিল, ২০২৪, ঢাকা

মাইগ্রেশনের দাবিতে মেডিকেল শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ

নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ১৯ আগস্ট ২০২২, ০৩:১১ এএম

শেয়ার করুন:

মাইগ্রেশনের দাবিতে মেডিকেল শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ

বাংলাদেশ মেডিকেল অ্যান্ড ডেন্টাল কাউন্সিলের (বিএমডিসি) অনুমোদন আছে- এমন মেডিকেল কলেজে মাইগ্রেশনের দাবিতে বিক্ষোভ করেছে রাজধানীর মোহাম্মদপুরের কেয়ার মেডিকেল কলেজ শিক্ষার্থীরা। সেই সঙ্গে অনুমোদন না থাকায় এমবিবিএস কোর্স শেষ করেও ইন্টার্নশিপ করতে না পারার অভিযোগও করেছেন তারা।

বৃহস্পতিবার (১৮ আগস্ট) কলেজ কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে নানা প্রতারণার অভিযোগে মোহাম্মদপুরের ইকবাল রোডের ক্যাম্পাসের সামনে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ করেন শিক্ষার্থীরা।


বিজ্ঞাপন


শিক্ষার্থীদের অভিযোগ- কেয়ার মেডিকেল কলেজের বিএমডিসি’র অনুমোদন নেই। নেই কোনো শিক্ষার পরিবেশও। শিক্ষক সংকটে পাঠদানও প্রায় হয় না। ফলে শিক্ষার্থীদের ইউটিউব দেখে চিকিৎসক হওয়ার পরামর্শ দেয় কলেজ কর্তৃপক্ষ। এছাড়া অনুমোদন না থাকায় এমবিবিএস শেষ করলেও ইন্টার্ন করতে পারছেন না বলেও অভিযোগ করেছেন শিক্ষার্থীরা। এমতাবস্থায় বিএমডিসি’র রেজিস্ট্রেশনভুক্ত অন্য মেডিকেল কলেজে মাইগ্রেশনের দাবি জানিয়েছেন তারা।

মানববন্ধন ও বিক্ষোভে কলেজের নানা অসংগতি ও অনিয়ম তুলে ধরে আন্দোলনকারীরা বলেন, ভর্তি হওয়ার পর থেকে কলেজে কোনো শিক্ষক নেই। পরীক্ষার চার-পাঁচ দিন আগে অতিথি শিক্ষক এনে শুধু পরীক্ষা নিয়ে কোর্স শেষ করে ফেলা হতো। এসব অনিয়ম নিয়ে কলেজ কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলতে গেলে ‘ইউটিউবে ভিডিও দেখে চিকিৎসক হওয়ার পরামর্শ’ দেওয়া হয়।

Human Chain

শিক্ষার্থীরা আরও অভিযোগ করেন, ভর্তি হওয়ার পর তারা জানতে পারেন ২০১৮ সালের পর থেকে এই মেডিকেল কলেজটির বিএমডিসি’র কোনো রেজিস্ট্রেশন নেই। এ বিষয়ে শিক্ষার্থীরা লিখিত আকারে কলেজের অনিয়ম তুলে ধরে স্বাস্থ্য অধিদফতর এবং বিএমডিসি বরাবর অভিযোগও দিয়েছেন বলেও জানান।


বিজ্ঞাপন


নীতিমালা অনুযায়ী কলেজটির হাসপাতালে পর্যাপ্ত শয্যা নেই বলে অভিযোগ করে তারা বলেন, অধিকাংশ সময় সব ওয়ার্ড রোগীশূন্য থাকে। পূর্ণাঙ্গ অপারেশন থিয়েটার ও আইসিইউ নেই। এছাড়া সিসিইউ ও এনআইসিইউ থাকলেও সেখানে অপারেশন ও ভর্তি হওয়া রোগী নেই বললেই চলে। এমনকি কলেজটিতে কোনো ক্লিনিক্যাল ক্লাসও হয় না। পাশাপাশি প্রফেশনাল পরীক্ষার জন্য রোগী ভাড়া করে নিয়ে আসা হয়। সেই সঙ্গে কলেজ ভিজিটের সময় কর্তৃপক্ষ রোগী ভাড়া করে আনেন এবং কেয়ার নার্সিং কলেজের শিক্ষার্থীদের রোগী সাজিয়ে ভিজিটে দেখানো হয়।

আন্দোলনকারীরা আরও বলেন, শিক্ষার্থীদের সুষ্ঠু অ্যাকাডেমিক কার্যক্রম চালানোর জন্য এখানে প্রয়োজনীয় কোনো ব্যবস্থা নেই। ওয়ার্ডে কোনো রোগী নেই, হাতে-কলমে শিক্ষার ব্যবস্থাও নেই। এই ব্যাপারে কর্তৃপক্ষকে বারবার বলা হলে তাঁরা ‘ইউটিউব দেখে শিখে নিতে’ বলেন।

আরও পড়ুন: ফাইজারের আরও ১৫ লাখ ডোজ টিকা ঢাকায়

শিক্ষার্থীদের দাবি- কলেজের ২০১৭-২০১৮ শিক্ষাবর্ষ থেকে ২০২০-২০২১ শিক্ষাবর্ষ পর্যন্ত কলেজটির কোনো বিএমডিসি’র অনুমোদন নেই। ২০১৬-২০১৭ শিক্ষাবর্ষে ভর্তির পর ২০১৭-২০১৮ শিক্ষাবর্ষ থেকে ভর্তি কার্যক্রম বন্ধ করে দেওয়া হয়। পরে হাইকোর্টের রিটের ভিত্তিতে মিথ্যা আশ্বাস দিয়ে ২০১৭-১৮, ২০১৮-১৯, ২০১৯-২০ ও ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষে শিক্ষার্থী ভর্তি করানো হয়। তবে এ বছর ২০২১-২০২২ সেশনে ভর্তি কার্যক্রম পুরোপুরি বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। এছাড়া ২০১৫-২০১৬ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থীরা ২০২১ সালের আগস্টে চূড়ান্ত পেশাগত পরীক্ষায় অংশ নেয়। এরমধ্যে গত নভেম্বর থেকে তাদের ইন্টার্নশিপ শুরু করার কথা থাকলেও বিএমডিসি’র অনুমোদন না থাকায় গত নয় মাসেও তারা ইন্টার্নশিপ শুরু করতে পারেননি।

এই পরিস্থিতিদের নিজেদের ভবিষ্যতের কথা চিন্তা করে বিএমডিসি’র অনুমোদন আছে- এমন মেডিকেল কলেজে তাদের মাইগ্রেশন করার জন্য কর্তৃপক্ষের কাছে অনুরোধ জানিয়েছেন শিক্ষার্থীরা।

উল্লেখ্য, ২০১৩ সালে রাজধানীর ইকবাল রোডে প্রতিষ্ঠিত হয় বেসরকারি কেয়ার মেডিকেল কলেজ হাসপাতালটি। পরের বছর (২০১৪) থেকে এখানে শিক্ষার্থী ভর্তি শুরু হয়। তবে বেসরকারি মেডিকেল কলেজ পরিচালনা নীতিমালা পূরণ করতে ব্যর্থ হওয়ার অভিযোগে ২০১৭-১৮ শিক্ষাবর্ষ থেকে শিক্ষার্থী ভর্তিতে নিষেধাজ্ঞা দেয় স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়। ওই সময় বাতিল হয় কলেজের সনদও। অভিযোগ আছে- এরপরও শিক্ষার্থী ভর্তি বন্ধ করেনি কলেজটি।

এমএইচ/আইএইচ

ঢাকা মেইলের খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

সর্বশেষ
জনপ্রিয়

সব খবর