বাতের ব্যথায় অনেকেই ভুগে থাকেন। বিশেষ করে শীতকালে এই ব্যথা বাড়ে। কেউ কেউ ভাবেন শরীরে বাতের ব্যথা যত কম নড়াচড়া করা যায় ততই ভালো। কিন্তু একটা ভুল ধারণা। আপনি যদি এই সমস্যায় আক্রান্ত হন তবে মনে রাখুন ব্যায়াম করেই বাতের ব্যথা থেকে মুক্তি লাভ করা সম্ভব।
শরীরের বিভিন্ন জায়গায় রিউমেটিক আর্থারাইটিস হতে পারে। এর মধ্যে হাঁটু, কনুই এবং কোমর অন্যতম। এছাড়াও অনেকেই মেরুদণ্ডেও ব্যথা অনুভব করেন।
বিজ্ঞাপন
কী কারণে বাতের ব্যথা হয়?
পারিবারিক রোগের ইতিহাসে যদি আর্থারাইটিস থাকে। তাহলে অনেকসময়েই সেই পরিবারের কোনও সদস্যদের এই রোগে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা থেকে যায়। তা নাহলেও জীবনযাপনের কারণেও আর্থারাইটিস হতে পারে। হাড়ের কোনও সমস্যা থাকলে অথবা কম বয়সে চোটআঘাতজনিত সমস্যা থাকলে বয়স বাড়লে আর্থারাইটিসের প্রকোপ বাড়তে পারে।
ব্যথা থেকে মুক্তির উপায়
জীবনযাপনে সামান্য কিছু বদল আনলেই সুরাহা মিলতে পারে এই সমস্যা থেকে। সেগুলি কী কী? জানুন বিস্তারিত।
বিজ্ঞাপন
লাগামে থাকুক ওজন
ওজন বৃদ্ধির সঙ্গে জড়িয়ে রয়েছে একাধিক রোগের প্রকোপ। শরীরের ওজন বেড়ে গেলে প্রথমেই চাপ বাড়ে হাঁটুর উপর। সেকারণে বাড়তে পারে ব্যথা। যাদের শরীরে ওজন স্বাভাবিকের থেকে অনেকটাই বেশি, তাদের ক্ষেত্রে বাড়তে পারে আর্থারাইটিসের সমস্যা। তাই প্রথম থেকেই ওজন কমানোর দিকে নজর দেওয়া উচিত।
দুর্ঘটনা এড়িয়ে চলুন
অল্পবয়সে শরীরে চোট লাগলে বাড়তে পারে বিপদ। অনেকেই খেলতে গিয়ে চোট পান বা কোনও দুর্ঘটনা থেকে শরীরে আঘাত লাগে। অনেকসময়েই সেগুলো ঠিকমতো খেয়াল করা হয় না। সেই চোট পরে আর্থারাইটিস ডেকে আনতে পারে। ফলে রোগ এড়াতে ডাক্তার দেখিয়ে সম্পূর্ণ সুস্থ হওয়া প্রয়োজন।
নিয়মিত ব্যায়াম
শরীরচর্চার অভ্যাস থাকা খুব জরুরি। নিয়মিত ব্যায়ামের অভ্যাস থাকলে শরীরের মাংসপেশি ভাল থাকে। সুস্থ থাকে হাঁটু, কোমরও। দীর্ঘদিন শরীরচর্চায় অভ্যাস থাকলে দূরে থাকে ব্যাথাবেদনা।
সাবধানে থাকুন
শরীরের খেয়াল রাখতে হবে। অনেকসময় ব্যায়াম করতে গিয়ে চোট লাগে। ভারী ওজন তোলার অভ্যাস রয়েছে অনেকের। এসবের সঙ্গেই আর্থারাইটিসের প্রকোপের যোগ রয়েছে। কাঁধে বা কনুইয়ে সমস্যা হলে এড়াতে হবে ব্যায়াম। হাঁটুর ক্ষমতা বুঝে তবেই ভারী কাজ করা উচিত।
ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে রাখুন
রক্তে শর্করার মাত্রা বাড়তে দেওয়া চলবে না। ডায়াবেটিসের সঙ্গে আর্থারাইটিসের সম্পর্ক রয়েছে। যাদের আর্থারাইটিস রয়েছে তাদের অনেকের মাত্রাছাড়া ডায়াবেটিস হতেও দেখা যায়। এমনিতেও ডায়াবেটিস থাকলে অনেক রোগ এসে জুড়়ে বসে। ফলে সুস্থ থাকতে গেলে নিয়ন্ত্রণে রাখতে হবে রক্তের শর্করার মাত্রা।
নেশা থাকুক দূরে
যে কোনও নেশাদ্রব্য ছেড়ে দেওয়া উচিত। বিশেষ করে ধূমপান ত্যাগ করা অত্যন্ত জরুরি। হার্ট বা ফুসফুসের ক্ষতি ছাড়াও আরও একাধিক সমস্যা তৈরি করে দীর্ঘদিনের ধূমপানের নেশা। আর্থারাইটিস থেকেও মুক্তি মিলতে পারে আগেই ধূমপানের অভ্যাস ছেড়ে দিলে।
আর্থারাইটিস থেকে একেবারে সুস্থ হওয়া সম্ভব নয়। কিন্তু সবদিক ভেবে চললে, নিয়ম মানলে রোগের প্রকোপ কমানো সম্ভব। নিয়ম মেনে চললে এই রোগ থাকলেও সুস্থভাবে কাটানো যায় বহুদিন।
এজেড