শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল, ২০২৪, ঢাকা

‘স্বাস্থ্যব্যবস্থার উন্নতি হলেও সার্বজনীন সেবা থেকে পিছিয়ে’

নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ০২ আগস্ট ২০২২, ১০:০৬ পিএম

শেয়ার করুন:

‘স্বাস্থ্যব্যবস্থার উন্নতি হলেও সার্বজনীন সেবা থেকে পিছিয়ে’

দেশের স্বাস্থ্যব্যবস্থা আগের তুলনায় উন্নতি করলেও সর্বজনীন স্বাস্থ্যসেবা থেকে এখনো বহুদূরে পিছিয়ে রয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন বিশেষজ্ঞরা। সেই সঙ্গে তারা বলেন, স্বাস্থ্য ব্যবস্থায় কোনো রেফারেল সিস্টেম না থাকায় পুরো স্বাস্থ্যসেবা খাতে বিশৃঙ্খলা বিরাজ করছে। শুধুমাত্র প্রাথমিক স্বাস্থ্য ব্যবস্থার উন্নতি করতে পারলেই এই মাধ্যমেই ৮০ ভাগ জনগণকে পূর্ণ স্বাস্থ্যসেবা দেওয়া সম্ভব বলেও জানিয়েছেন তারা।

মঙ্গলবার (২ আগস্ট) ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বাস্থ্য অর্থনীতি ইনস্টিটিউটে আয়োজিত এক সেমিনারে বক্তার এ কথা বলেন।


বিজ্ঞাপন


‘বাংলাদেশের সার্বজনীন স্বাস্থ্য সুরক্ষায় ডিজিটাল ইকোসিস্টেম গঠন’ শীর্ষক ওই সেমিনারের আয়োজন করে হেলথ ইকোনমিক্স স্টাডি অ্যালায়েন্স।

সেমিনারে আলোচকরা বলেন, সর্বজনীন স্বাস্থ্য সুরক্ষার ধারণায় ২০৩০ সালের মধ্যে স্বাস্থ্যসেবার ব্যয় সহনীয় পর্যায়ে ও সাধ্যের মধ্যে নিয়ে আসার কথা বলা হয়েছে। যেখানে চিকিৎসাসেবা নিতে গিয়ে কেউ দরিদ্র হয়ে পড়বে না। যা সবার জন্য সুস্বাস্থ্য নিশ্চিত করা সাসটেইনেবল ডেভেলপমেন্ট গোলের (এসডিজি) ১৭টি উদ্দেশ্যের মধ্যে অন্যতম।

কিন্তু সে অনুযায়ী কাজ কতটুকু হচ্ছে প্রশ্ন তুলে বক্তারা বলেন, এখনও চিকিৎসার মোট ব্যয়ের ৭২ ভাগই যাচ্ছে ব্যক্তির পকেট থেকে। খরচের অর্ধেকই চলে যাচ্ছে ওষুধপত্র ক্রয়ে। এসডিজি অর্জন করতে হলে এই ব্যয় শূন্যের কোটায় নামিয়ে আনতে হবে।

ডিজিটাল স্বাস্থ্যব্যবস্থা চালুর দাবি জানিয়ে তারা বলেন, ২০৩০ সালের মধ্যে এই লক্ষ্যমাত্রা অর্জনের একটি বাধ্যবাধকতা রয়েছে। যদিও এখনও কাজই শুরু হয়নি। তাই অবশিষ্ট বছরে সবার জন্য সুস্বাস্থ্য নিশ্চিত করা সম্ভব কি না সে ব্যাপারে শঙ্কা তৈরি হয়েছে। তাই বাংলাদেশে খুব শিগগিরই ডিজিটাল স্বাস্থ্য ব্যবস্থা চালু করা প্রয়োজন।


বিজ্ঞাপন


খন্দকার আব্দুল্লাহ মামুন বলেন, ‘দেশর স্বাস্থ্য ব্যবস্থায় মূল সমস্যা হলো স্বাস্থ্যে পর্যাপ্ত ডেটার অভাব। যার ফলে একজন রোগীর ব্যাপারে মূল্যায়ন করতে সমস্যা হয় চিকিৎসকদের। এ ক্ষেত্রে রোগীরা হেলথ ট্যুরিজমের (বিদেশে চিকিৎসা) দিকে ধাবিত হচ্ছে। এতে করে খরচ বাড়ছে। এ ধরনের সমস্যা উত্তরণের জন্য এবং একই সঙ্গে সার্বজনীন স্বাস্থ্য সুরক্ষার লক্ষ্য অর্জনে প্রয়োজন ডিজিটাল হেলথ ইকোসিস্টেম।’

এ সময় ডিজিটাল হেলথ ইকোসিস্টেমের ক্ষেত্রে পরিকল্পনা, সেবা প্রদান এবং অর্থ প্রদানের ক্ষেত্রে যে ধরনের সমস্যা রয়েছে তা উত্তরণ করা প্রয়োজন বলেও মন্তব্য করেন তিনি।

এদিকে, অলওয়েল সিস্টেম স্পেসিফিকেশন ইঞ্জিনিয়ারের সহপ্রতিষ্ঠাতা এম এম আফতাব হোসেইন বলেন, ‘বড় ধরনের সমস্যা বা ইমারজেন্সি কেস ব্যতীত রোগীর হাসপাতালে আসার প্রয়োজন নেই বরং এমন একটি সিস্টেম তৈরি করা প্রয়োজন যেখানে চিকিৎসকরা ভিডিও কনফারেন্স করে রোগীর প্রাথমিক অবস্থা শনাক্ত করবেন এবং প্রয়োজনে চিকিৎসক রোগীর বাসায় যাবেন। এছাড়া এই ব্যবস্থার মাধ্যমে বেশকিছু পরীক্ষা-নিরীক্ষা বাসায় গিয়ে করা সম্ভব। এ ধরনের ডিজিটাল ব্যবস্থায় রোগীর তথ্য সংরক্ষণেও সুবিধা হবে।’

এম এম আফতাব হোসেইন বলেন, ‘সার্বজনীন স্বাস্থ্য সুরক্ষার যে লক্ষ্য নির্ধারণ করা হয়েছে, তা অর্জনে ডিজিটাল প্রযুক্তি নির্ভর এবং ডেটা বেইজড স্বাস্থ্য ব্যবস্থার বিকল্প নেই। স্বাস্থ্যক্ষেত্রে সরকারের যে সাফল্য তা চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের যুগে এগিয়ে নিতে প্রয়োজন ডিজিটাল স্বাস্থ্য ব্যবস্থা।’

এ দিন সেমিনারে অন্য আলোচকরা বাংলাদেশের সার্বজনীন স্বাস্থ্যসেবার বর্তমান অবস্থা ছাড়াও এর সীমাবদ্ধতা ও ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা নিয়ে আলোচনা করেন। সেই সঙ্গে সার্বজনীন স্বাস্থ্য সুরক্ষায় ডিজিটাল হেলথ ইকোসিস্টেমের ওপর গুরুত্বারোপ করেন।

এমএইচ/আইএইচ

ঢাকা মেইলের খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

সর্বশেষ
জনপ্রিয়

সব খবর