বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে অধ্যক্ষ, উপাধ্যক্ষ, প্রধান ও সহকারী প্রধান শিক্ষক নিয়োগ প্রক্রিয়ায় আসছে নতুন ধারা। এসব পদে নিয়োগ হতে পারে মৌখিক পরীক্ষার মাধ্যমে। প্রার্থীদের আবেদন গ্রহণ ও যাচাই-বাছাইয়ের দায়িত্বে থাকবে বেসরকারি শিক্ষক নিবন্ধন ও প্রত্যয়ন কর্তৃপক্ষ (এনটিআরসিএ)।
রোববার (১৯ অক্টোবর) শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের এক সূত্র জানায়, প্রতিষ্ঠানপ্রধান নিয়োগের জন্য নতুন কোনো আইন প্রণয়নের প্রয়োজন নেই। এনটিআরসিএ’র বিদ্যমান আইন ও বিধিমালার মাধ্যমেই এই নিয়োগ কার্যক্রম পরিচালনা করা সম্ভব। এজন্য শিগগিরই বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হবে।
বিজ্ঞাপন
সূত্র জানায়, আবেদন যাচাই-বাছাই শেষে প্রার্থীদের মৌখিক পরীক্ষায় অংশ নিতে ডাকা হবে। সেই পরীক্ষার ফলাফলের ভিত্তিতেই প্রতিষ্ঠানপ্রধান পদে নিয়োগের সুপারিশ করবে এনটিআরসিএ। তবে প্রার্থীর সংখ্যা বেশি হলে সীমিত পরিসরে এমসিকিউ বা লিখিত পরীক্ষাও নেওয়া হতে পারে।
শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের এক যুগ্ম-সচিব নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, “প্রার্থীদের বয়স ও অভিজ্ঞতা বিবেচনায় নিয়ে মৌখিক পরীক্ষার মাধ্যমেই নিয়োগ সুপারিশ করার পরিকল্পনা রয়েছে। বিষয়টি এখনও চূড়ান্ত নয়, তবে এভাবেই নিয়োগ হওয়ার সম্ভাবনা বেশি।”
তিনি আরও বলেন, “এনটিআরসিএ আইন-২০০৫ এবং বিধিমালা-২০০৬ অনুযায়ী প্রতিষ্ঠানপ্রধান, সহকারী প্রধান, অধ্যক্ষ ও উপাধ্যক্ষ নিয়োগ করা সম্ভব। এজন্য আইন বা বিধিমালা সংশোধনের প্রয়োজন নেই।”
গত ৩ সেপ্টেম্বর শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে আয়োজিত এক সভায় বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের এসব পদে এনটিআরসিএ’র মাধ্যমে নিয়োগ দেওয়ার প্রাথমিক সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। পরে এ বিষয়ে বিজ্ঞপ্তিও জারি করা হয়।
বিজ্ঞাপন
এর আগে এসব পদে নিয়োগে ব্যাপক অনিয়মের অভিযোগ ওঠে। ম্যানেজিং কমিটি বা গভর্নিং বডি থেকে প্রস্তাব পাঠানোর পর শিক্ষা বোর্ড কর্তৃক নিয়োগের প্রক্রিয়ায় ঘুষ ও স্থানীয় প্রভাবশালীদের হস্তক্ষেপের অভিযোগ ছিল নিয়মিত। এ ধরনের অনিয়ম বন্ধে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে চিঠি পাঠায় পরিদর্শন ও নিরীক্ষা অধিদফতর (ডিআইএ)।
গত ২৮ জানুয়ারি ডিআইএ’র তৎকালীন পরিচালক অধ্যাপক সাইফুল ইসলাম শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে পাঠানো এক প্রস্তাবে জানান, বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের অধ্যক্ষ, উপাধ্যক্ষ, প্রধান, সহকারী প্রধান, সুপারিনটেনডেন্ট, সহকারী সুপার ও অশিক্ষক কর্মচারী নিয়োগের ক্ষেত্রে এনটিআরসিএকে প্রার্থী নির্বাচন ও সুপারিশের ক্ষমতা দেওয়ার বিষয়টি বিবেচনা করা যেতে পারে।
প্রস্তাবে আইন সংশোধন, নতুন ধারা সংযোজন ও প্রতিষ্ঠানপ্রধান নিয়োগ পরীক্ষা গ্রহণ সংক্রান্ত বিধিমালা প্রণয়নের কথাও উল্লেখ ছিল। সংসদ কার্যকর না থাকায় বিকল্প হিসেবে অর্ডিন্যান্স জারির প্রস্তাবও দেওয়া হয়। এবার শিক্ষা মন্ত্রণালয় এসব বিষয়ে নীতিগত সিদ্ধান্ত নিয়েছে বলে জানা গেছে।
এম/এফএ

