বাংলাদেশে সরাসরি স্বাস্থ্যখাতে ফার্মাসিস্টদের অবদান রাখার সুযোগ এখনও সীমিত বলে মন্তব্য করেছেন বক্তারা। তারা বলেন, দেশে প্রায় দুই লাখ ওষুধের দোকান রয়েছে। এগুলোকে মডেল ফার্মেসিতে রূপান্তর করতে হলে অন্তত চার লাখ দক্ষ ফার্মাসিস্ট প্রয়োজন। তাই সঠিক স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করতে বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ে ফার্মেসি শিক্ষার মানোন্নয়ন জরুরি।
বৃহস্পতিবার (১৬ অক্টোবর) রাজধানীর সিরডাপ মিলনায়তনে বাংলাদেশ ফার্মেসি কাউন্সিলের উদ্যোগে আয়োজিত এক মতবিনিময় সভায় এসব কথা বলা হয়। দেশে সরকারি ও বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে বি.ফার্ম (Bachelor of Pharmacy) কোর্সের অভিস্বীকৃতি (অ্যাক্রেডিটেশন) ও শিক্ষার্থী ভর্তি নীতিমালা যথাযথভাবে প্রতিপালন বিষয়ক এই সভা অনুষ্ঠিত হয়। শুক্রবার (১৭ অক্টোবর) পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য জানানো হয়।
বিজ্ঞাপন
সভায় সভাপতিত্ব করেন স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের সচিব ও ফার্মেসি কাউন্সিলের সভাপতি মো. সাইদুর রহমান। এতে কাউন্সিল অভিস্বীকৃত বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের ট্রাস্টি বোর্ডের চেয়ারম্যান, উপাচার্য ও ফার্মেসি বিভাগের প্রধানরা অংশ নেন।
স্বাগত বক্তব্যে কাউন্সিলের সচিব মুহাম্মদ মাহবুবুল হক বলেন, ফার্মেসি কাউন্সিল ইতোমধ্যে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভাগীয় প্রধানদের নিয়ে দুটি মতবিনিময় সভা করেছে। এসব সভা থেকে পাওয়া পরামর্শ অ্যাক্রেডিটেশন ও এডুকেশন কমিটির মাধ্যমে অনুমোদন দিয়ে সাধারণ সভায় উপস্থাপন করা হয়েছে। কাউন্সিল সবসময় অংশীজনদের মতামত নিয়ে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে।
মুখ্য আলোচক ও কাউন্সিলের অ্যাক্রেডিটেশন ও এডুকেশন কমিটির সভাপতি মো. নাসের শাহরিয়ার জাহেদী বলেন, বিদেশে ৫ শতাংশ ফার্মাসিস্ট কাজ করেন ওষুধ শিল্পে এবং ৯৫ শতাংশ কাজ করেন হাসপাতাল ও কমিউনিটি ফার্মেসিতে। কিন্তু বাংলাদেশে স্বাস্থ্যখাতে ফার্মাসিস্টদের সরাসরি সম্পৃক্ততা এখনো সীমিত। দক্ষ ফার্মাসিস্ট তৈরিতে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে পর্যাপ্ত ল্যাব স্থাপন ও শিক্ষক নিয়োগের ওপর গুরুত্বারোপ করেন তিনি।
ইস্ট ওয়েস্ট বিশ্ববিদ্যালয়ের ট্রাস্টি বোর্ডের চেয়ারম্যান ড. মোহাম্মদ ফরাসউদ্দিন আহমেদ বলেন, ফার্মেসি কাউন্সিল সিলেবাস প্রণয়ন, ল্যাবরেটরির মান নির্ধারণ, আসনসংখ্যা নিয়ন্ত্রণ ও বিশ্ববিদ্যালয় পরিদর্শনের মাধ্যমে প্রশংসনীয় ভূমিকা রাখছে।
বিজ্ঞাপন
কাউন্সিলের সহসভাপতি চৌধুরী মাহমুদ হাসান বলেন, ফার্মেসি শিক্ষায় সুনির্দিষ্ট মান বজায় রাখা জরুরি। এজন্য অধ্যাপক ড. মো. আবদুর রশীদের নেতৃত্বে সিলেবাস প্রণয়ন কমিটি গঠন করা হয়েছে। খসড়া সিলেবাস তৈরি হলে তা বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে পাঠিয়ে মতামত নেওয়া হবে।
সভাপতির বক্তব্যে স্বাস্থ্য সচিব মো. সাইদুর রহমান বলেন, বিসিএস স্বাস্থ্য ক্যাডারের মতো ‘বিসিএস ফার্মেসি ক্যাডার’ চালুর উদ্যোগ নেওয়া যেতে পারে। ইতোমধ্যে সরকারি হাসপাতালে ফার্মাসিস্টদের জন্য পদ সৃষ্টি করা হয়েছে এবং ভবিষ্যতে তা আরও বাড়ানো হবে।
তিনি আরও প্রস্তাব করেন, ফার্মেসি শিক্ষকদের প্রশিক্ষণের জন্য ফার্মেসি কাউন্সিল নিজস্ব একটি প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউট চালু করতে পারে।
এসএইচ/এএস

