ঢাকার উত্তরায় মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজে বিমান বিধ্বস্তের ভয়াবহ ঘটনার পর কয়েকদিনের টানা ব্যস্ততা ও উদ্বেগময় পরিস্থিতি ছিল। আজ শুক্রবার (২৫ জুলাই) সকালে এক ভিন্ন চিত্র দেখা গেল জাতীয় বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে। হাসপাতালে ভিড় অনেকটাই কমেছে, পরিবেশে ফিরে এসেছে খানিকটা স্বস্তি, সঙ্গে রয়েছে কঠোর নিরাপত্তা ও নজরদারি।
সকাল ৮টায় ইনস্টিটিউট চত্বরে গিয়ে দেখা যায়, জরুরি বিভাগের প্রবেশমুখে সেনাবাহিনীর সদস্যরা দায়িত্ব পালন করছেন। সেখানে আগতদের যাচাই-বাছাই করে ভেতরে ঢুকতে দেওয়া হচ্ছে। শুধু রোগী, স্বজন এবং চিকিৎসা-সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদেরকেই প্রবেশের অনুমতি দেওয়া হচ্ছে। সাধারণ মানুষ, উৎসুক জনতা কিংবা সাংবাদিকদের প্রবেশেও থাকছে নিয়ন্ত্রণ।
বিজ্ঞাপন
ইনস্টিটিউটের প্রধান ফটক ছাড়াও আশপাশের প্রবেশপথে পুলিশ মোতায়েন রয়েছে। সামনের সড়কে অবস্থান করছে সেনাবাহিনীর গাড়ি। ভেতরে-বাইরে চোখে পড়েছে বিমানবাহিনীর সদস্যদের উপস্থিতিও। গত কয়েকদিনের তুলনায় আজ হাসপাতাল চত্বর ও আশপাশের পরিবেশে শৃঙ্খলা ও নীরবতা স্পষ্টভাবে দৃশ্যমান।
গত সোমবার ভয়াবহ বিমান দুর্ঘটনার পর থেকে কয়েকদিন ধরে জাতীয় বার্ন ইনস্টিটিউটে ছিল অভাবনীয় ভিড়, স্বজনদের আহাজারি, সাধারণ মানুষের কৌতূহল এবং গণমাধ্যমকর্মীদের সরব উপস্থিতিতে হাসপাতালের পরিবেশ ছিল ভারী। তবে শুক্রবার সকাল থেকে সেই চিত্রে পরিবর্তন এসেছে। আজ আর তেমন কোনো জটলা নেই, নেই কোলাহল কিংবা হুড়োহুড়ি। হাসপাতালের করিডোর ও প্রাঙ্গণ বেশ ফাঁকা, কেবল দু-চারজন সংবাদকর্মী দেখা গেছে দায়িত্ব পালনে।
জাতীয় বার্ন ইনস্টিটিউট সূত্রে জানা গেছে, গত সোমবারের দুর্ঘটনায় দগ্ধ হয়ে চিকিৎসাধীন রয়েছেন ৪২ জন। আর সর্বশেষ তথ্যমতে, দুর্ঘটনায় নিহতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৩১ জনে। আহত ও চিকিৎসাধীন আছেন আরও ৫১ জন।
আহতদের চিকিৎসার জন্য এরই মধ্যে বিদেশ থেকে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক দল ঢাকায় এসে পৌঁছেছেন। সিঙ্গাপুর, ভারত ও চীন থেকে আসা এই বিশেষজ্ঞরা জাতীয় বার্ন ইনস্টিটিউটের চিকিৎসকদের সঙ্গে যৌথভাবে কাজ করছেন। সর্বোচ্চ চিকিৎসা নিশ্চিতের পাশাপাশি দুর্ঘটনাকবলিতদের পাশে দাঁড়াতে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ সর্বাত্মক প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।
বিজ্ঞাপন
সব মিলিয়ে, দুর্ঘটনার পর হাসপাতালের উত্তাল পরিবেশ এখন অনেকটাই স্থির। তবে নিরাপত্তা ব্যবস্থার কড়াকড়ি বলছে—পরিস্থিতি এখনও পুরোপুরি স্বাভাবিক হয়নি। আহতদের সুস্থতা এবং হাসপাতালের স্বাভাবিক কার্যক্রম নিশ্চিত করতে কর্তৃপক্ষ এখন আরও বেশি সতর্ক।
এমআই/এএস

