রোববার, ১৪ ডিসেম্বর, ২০২৫, ঢাকা

‘জুলাই অভ্যুত্থানে আহতদের সেবা দিতে ঢামেকে ছুটে আসেন চিকিৎসক-নার্সরা’

নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ১৪ জুলাই ২০২৫, ০২:৪৫ পিএম

শেয়ার করুন:

shafiq
ডা. মুনাদির সঙ্গে প্রেস সচিব। ছবি: সংগৃহীত

জুলাই গণঅভ্যুত্থানে আহতদের চিকিৎসা সেবায় যুক্ত হওয়া অনেক চিকিৎসক নিজের পরিচয় গোপন করতে বাধ্য হয়েছিলেন বলে জানিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম। সেইসঙ্গে চিকিৎসক ও নার্সরা স্বেচ্ছায় ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে সেবা দিতে ছুটে গিয়েছিলেন বলেও জানিয়েছেন তিনি।

রোববার (১৩ জুলাই) প্রেস সচিব নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব নিউরোসায়েন্সেস (নিন্স) হাসপাতালের চিকিৎসক ডা. মুনাদি আল ইসলামের বরাত দিয়ে এসব তথ্য জানান। ফেসবুক পোস্টে অভ্যুত্থানের সময় রক্ত সংকট মোকাবেলায় রিদম ব্লাড ব্যাংকের সাহসী ভূমিকাও তুলে ধরেন তিনি।


বিজ্ঞাপন


ইংরেজিতে শেয়ার করা পোস্টটিতে প্রেস সচিব শফিকুল আলম লিখেন, ‘আমি সম্প্রতি আমার ছেলেকে নিয়ে গিয়েছিলাম সরকারি নিউরোসায়েন্স হাসপাতালে, সেখানে আমার দেখা হয়েছিল মুনাদি আল ইসলামের সঙ্গে। মুনাদি একজন চিকিৎসক এবং জুলাই অভ্যুত্থানের একজন সক্রিয় অংশগ্রহণকারী। তিনি আমাকে বিপ্লব চলাকালে দেশের বিভিন্ন হাসপাতালে যে যুদ্ধ সংঘটিত হয়েছিল, তার একটি অজানা এবং গুরুত্বপূর্ণ দিক সম্পর্কে বলেছিলেন।’

তিনি বলেন, ‘১৮ জুলাই যখন পুলিশ ও নিরাপত্তা বাহিনী প্রথম বড় ধরনের হত্যাকাণ্ড চালায়, তখন আহত এবং নিহত কর্মীদের অধিকাংশকে নেওয়া হয়েছিল ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে। আহতদের জরুরি বিভাগে চিকিৎসা দেওয়া হয়। অনেককে ব্যক্তিগত ও অন্যান্য সরকারি হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হলেও গুরুতর আহতদের সবাইকে ঢামেক হাসপাতালে পাঠানো হয়, কারণ এই হাসপাতালেই জরুরি চিকিৎসার উপযুক্ত ব্যবস্থা ছিল।’

‘কিন্তু হঠাৎ এত রোগী আসায় ঢামেক হাসপাতাল দ্রুত রক্তের ব্যাগের সংকটে পড়ে যায়, যা জরুরি অস্ত্রোপচারে ব্যবহৃত হয়। তখন রক্তের ব্যাগ খোঁজার জন্য উদ্যোগ নেওয়া হয়। মুনাদি ও আরেকজন চিকিৎসক জানান, তখন দেশের কিছু বড় ব্লাড ব্যাংক রক্ত সরবরাহে অনাগ্রহ দেখিয়েছিল। কেন তারা এগিয়ে এলো না, সেটা পরিষ্কার নয়। আমি তাদের কোনো কর্মকর্তার সাথেও কথা বলতে পারিনি, তাই বিষয়টি আমার কাছেও অস্পষ্ট। তবে মুনাদি জানান, এই সংকটকালে কিছু ব্যক্তিগত রক্তদাতা, এমনকি হিজড়া সম্প্রদায়ের মানুষও এগিয়ে এসে রক্ত দান করেন। তবুও রক্তের ঘাটতি থেকেই যায়। এই সময়ে রিদম নামের একটি ছোট ব্লাড ব্যাংক এগিয়ে আসে। রিদমের একজন কর্মকর্তা জানান, ১৮ থেকে ২২ জুলাইয়ের মধ্যে তারা ১২০০ ব্যাগ রক্ত জোগাড় করে দেন আহতদের চিকিৎসার জন্য’—যোগ করেন প্রেস সচিব।

এছাড়া অনেক চিকিৎসক ও নার্স স্বেচ্ছায় ঢামেক হাসপাতালে রোগীদের চিকিৎসা দিয়েছেন উল্লেখ করে শফিকুল আলম লিখেন, ‘তাদের মধ্যে কেউ কেউ নিজেদের পরিচয় গোপন রেখেছিলেন, কারণ জরুরি বিভাগ ছিল সাদা পোশাকে গোয়েন্দা সংস্থা ও ডিবি পুলিশের সদস্যে পরিপূর্ণ। পুলিশ কোনো চিকিৎসককে সেই সময়কার নৃশংসতার ছবি তুলতে দেয়নি।’


বিজ্ঞাপন


পোস্টে জুলাই গণঅভ্যুত্থানে চিকিৎসক ও রক্তদাতাদের সাহসিকতার বিষয়ে গভীর অনুসন্ধানমূলক প্রতিবেদন দরকার বলেও উল্লেখ করেছেন প্রেস সচিব।

এসএইচ/জেবি

ঢাকা মেইলের খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

সর্বশেষ
জনপ্রিয়

সব খবর