বৃহস্পতিবার, ১৮ এপ্রিল, ২০২৪, ঢাকা

দেশে ওমিক্রনের নতুন সাব-ভ্যারিয়েন্ট শনাক্ত

নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ২১ জুন ২০২২, ০৪:৫১ পিএম

শেয়ার করুন:

দেশে ওমিক্রনের নতুন সাব-ভ্যারিয়েন্ট শনাক্ত
করোনা পরীক্ষা করতে আসা কয়েকজন সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বলছেন | ফাইল ছবি

দেশে মহামারি করোনাভাইরাসের ওমিক্রন ভ্যারিয়েন্টের নতুন সাব-ভ্যারিয়েন্ট শনাক্ত হয়েছে। যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (যবিপ্রবি) জিনোম সেন্টারে দুই করোনা রোগীর দেহে ওমিক্রনের নতুন এই সাব-ভ্যারিয়েন্ট BA.4/5 শনাক্ত করা হয়।

মঙ্গলবার (২১ জুন) যবিপ্রবির সহকারী পরিচালক (জনসংযোগ) আব্দুর রশিদ গণমাধ্যমকে এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন।


বিজ্ঞাপন


আব্দুর রশিদ জানান, যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (যবিপ্রবি) জিনোম সেন্টারে বাংলাদেশি দুইজনের শরীরে করোনাভাইরাসের ওমিক্রন ধরনের নতুন সাব-ভ্যারিয়েন্ট BA.4/5 শনাক্ত করা হয়েছে। জিনোম সেন্টারের একদল গবেষক যশোরের দুজন আক্রান্ত ব্যক্তির থেকে সংগৃহীত ভাইরাসের আংশিক (স্পাইক প্রোটিন) জিনোম সিকুয়েন্সের মাধ্যমে করোনার নতুন এই উপধরণটি শনাক্ত করে।

শনাক্ত হওয়া ব্যক্তিদের একজনের বয়স ৪৪ এবং অপরজনের বয়স ৭৯ বছর। এছাড়া আক্রান্তদের একজন করোনা ভ্যাকসিনের বুস্টার ডোজ এবং অপরজন দুই ডোজ ভ্যাকসিন নিয়েছেন। তবে তাদের একজন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন এবং আরেকজন বাসাতেই চিকিৎসা নিচ্ছেন।

ওমিক্রণের নতুন এই ভ্যারিয়েন্টে আক্রান্তদের শরীরে জ্বর, গলাব্যথা, সর্দি-কাশিসহ বিভিন্ন মৃদু উপসর্গ রয়েছে। তারা উভয়েই স্থানীয়ভাবে সংক্রমিত হয়েছেন বলে ধারণা করছেন গবেষকরা।

যবিপ্রবির গবেষক দলটি জানিয়েছে, BA.4/5 সাব-ভ্যারিয়েন্টে স্পাইক প্রোটিনে ওমিক্রনের মতোই মিউটেশন দেখা যায়। তবে তার সঙ্গে এই সাব-ভ্যারিয়েন্টে ডেল্টা ভ্যারিয়েন্টের মতো স্পাইক প্রোটিনের ৪৫২ নম্বর অ্যামাইনো অ্যাসিডে মিউটেশন থাকে। এছাড়া এই সাব-ভ্যারিয়েন্টে স্পাইক প্রোটিনের আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ ৪৮৬ নম্বর অ্যামাইনো অ্যাসিডেও মিউটেশন দেখা যায়।


বিজ্ঞাপন


Coronavirus

ওমিক্রনের এই দুইটি সাব-ভ্যারিয়েন্ট জানুয়ারি এবং ফেব্রুয়ারি মাসে দক্ষিণ আফ্রিকায় প্রথম শনাক্ত হয়েছে। এরপর গত মে মাসের শেষের দিকে দক্ষিণ ভারতে এই সাব-ভ্যারিয়েন্ট শনাক্ত হয়। এই উপধরণটি দক্ষিণ আফ্রিকায় করোনা সংক্রমণের পঞ্চম ঢেউ এবং সাম্প্রতিককালে ভারতে করোনার তৃতীয় ঢেউয়ের জন্য দায়ী বলে বিজ্ঞানীরা মনে করছেন।

ভ্যাকসিন নেওয়া ব্যক্তিরাও এই সাব-ভ্যারিয়েন্ট দ্বারা আক্রান্ত হচ্ছেন। আগামী দিনে এই সাব-ভ্যারিয়েন্ট বর্তমানে সংক্রমণশীল অন্যান্য সাব-ভ্যারিয়েন্টের তুলনায় বেশি সংক্রমণ ঘটাতে পারে বলেও আশঙ্কা করছেন বিজ্ঞানীরা।

এ বিষয়ে যবিপ্রবি উপাচার্য ও জেনোম সেন্টারের পরিচালক অধ্যাপক ড. মো. আনোয়ার হোসেন জানিয়েছেন, এই সাব-ভ্যারিয়েন্টটি মানুষের রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থাকে সহজেই ফাঁকি দিতে সক্ষম। এ জন্য মাস্ক ব্যবহারসহ কঠোরভাবে করোনাকালীন স্বাস্থ্যবিধি মানার কোনো বিকল্প নেই। 

উপাচার্য আরও জানান, অচিরেই পূর্ণাঙ্গ জিনোম সিকুয়েন্স করে এ বিষয়ে আরও তথ্য জানা সম্ভব হবে এবং এই সাব-ভ্যারিয়েন্ট শনাক্তকরণের কাজ জিনোম সেন্টারে অব্যাহত থাকবে।

এর আগে দেশে ওমিক্রনের তিনটি সাব-ভ্যারিয়েন্ট পাওয়া গিয়েছিল। সেগুলো হলো- BA.1, BA.1.1, BA.2। এর মধ্যে BA.2 ধরনটি সর্বাধিক সংক্রামক বলে জানায় বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও)।

চলতি বছরের শুরুতে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিএসএমএমইউ) এক গবেষণায় উঠে আসে- দেশে করোনা আক্রান্ত রোগীদের ৮২ শতাংশই ওমিক্রন ভ্যারিয়েন্টে আক্রান্ত। গত ৯ জানুয়ারি থেকে ৯ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত সর্বমোট ভর্তি রোগী ও বহির্বিভাগে আগত রোগীদের ৯৩৭টি জিনোম সিকোয়েন্স গবেষণায় এই তথ্য পাওয়া যায়।

এমএইচ/আইএইচ

ঢাকা মেইলের খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

সর্বশেষ
জনপ্রিয়

সব খবর