বাংলাদেশ শিশু হাসপাতালে কোনো সার্কুলার বা পরীক্ষা ছাড়াই ৬৫ জন চিকিৎসক নিয়োগ দেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ তুলেছেন চিকিৎসক ও বাংলাদেশ ফার্টিলিটি হাসপাতালের চেয়ারম্যান ডা. এস এম খালিদুজ্জামান। তিনি বলেছেন, এই নিয়োগ হয়েছে রাতের অন্ধকারে। এমনকি ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনার আমলেও এমন নিয়োগ হয়নি।
বৃহস্পতিবার (৩ জুলাই) রাজধানীর শ্যামলীতে বাংলাদেশ শিশু হাসপাতালের সামনে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন তিনি। প্রজ্ঞাপন ছাড়া ‘অবৈধ নিয়োগের’ প্রতিবাদে এই সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করেন সাধারণ চিকিৎসকরা।
বিজ্ঞাপন
ডা. খালিদুজ্জামান বলেন, লোকচক্ষুর আড়ালে এই নিয়োগ হয়েছে। কোনো সার্কুলার বা নিয়োগ পরীক্ষার তোয়াক্কা করা হয়নি। এখানে যতজন আবেদন করেছে, ততজনকেই নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। সেটাও হয়েছে অন্ধকারে।
তিনি আরও বলেন, বেসরকারি হাসপাতালে বিশেষ পরিস্থিতিতে সরাসরি নিয়োগ হতে পারে। কিন্তু সরকারি বা স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠানে এমন নিয়োগ আইনসম্মত নয়। এটি পুরোপুরি অনিয়ম।
নিয়োগপ্রাপ্ত চিকিৎসকদের কিছু বক্তব্য নিয়েও মন্তব্য করেন তিনি। বলেন, তারা দাবি করছেন এই নিয়োগ বৈধ। কারণ আওয়ামী লীগ সরকার যেহেতু তাদের নিয়োগকে বৈধ বলেছে, তারাও সেটিকে বৈধ মনে করছে। কিন্তু আমাদের দায়িত্ব হলো জনগণের সামনে বাস্তবতা তুলে ধরা। এমন নিয়োগ ফ্যাসিস্ট সরকারও দেয়নি। এখানে মেধা অনুযায়ী, প্রতিযোগিতার মাধ্যমে নিয়োগ হওয়া উচিত ছিল।
নিয়োগপ্রাপ্তদের যোগ্যতা নিয়ে প্রশ্ন আছে কি না— এমন প্রশ্নের জবাবে ডা. খালিদুজ্জামান বলেন, যদি পেছনের টেবিলে লেনদেনের মাধ্যমে নিয়োগ হয়, তাহলে সেখানে অবশ্যই যোগ্যতা নিয়ে প্রশ্ন থাকবে। যারা যোগ্য, তারা পরীক্ষার মাধ্যমে এই পদে আসবে।
বিজ্ঞাপন
কাদের দায়ী করছেন— এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আমরা পরিচালক প্রশাসনকে দায়ী করছি। নিয়োগপত্রে যারা সাইন করেছেন, তারা দায় এড়াতে পারেন না। আমরা বলবো, আপনারা যেন অসম্মানের অংশীদার না হন।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত অন্যান্য চিকিৎসকরাও অনিয়মের অভিযোগ তুলে ধরেন। তারা বলেন, এই ৬৫ জনকে কোনো পরীক্ষা বা যাচাই-বাছাই ছাড়া নিয়োগ দেওয়া হয়েছে, যা কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়।
তারা আরও বলেন, বাংলাদেশ শিশু হাসপাতালের মতো একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রতিষ্ঠানে স্বচ্ছতা ছাড়া এভাবে নিয়োগ হওয়া খুবই হতাশাজনক। এটি অনেকটা কোটাভিত্তিক নিয়োগের মতো। আমরা চাই, আমাদের সম্মানিত শিক্ষকরা যেন এ বিষয়ে বিবেচনা করেন এবং চিকিৎসক নিয়োগে মেধাকেই গুরুত্ব দেন।
চিকিৎসকরা দাবি করেন, শিশু হাসপাতালের মতো একটি প্রতিষ্ঠানে নিয়োগের ক্ষেত্রে যোগ্যতা, মেধা ও প্রতিযোগিতার ভিত্তিতে স্বচ্ছভাবে চিকিৎসক নিয়োগ হওয়া উচিত। তারা এই নিয়োগ বাতিল করে পুনরায় যথাযথ প্রক্রিয়ায় নতুন নিয়োগের দাবি জানান।
এসএইচ/এইউ

