বাংলাদেশ মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিএমইউ) ২০২৫-২৬ অর্থ বছরের জন্য ৯৭৬ কোটি ১১ লাখ পাঁচ হাজার টাকার বাজেট অনুমোদিত হয়েছে।
গত ২০২৪-২৫ অর্থ বছরে এই বাজেটের পরিমাণ ছিল আটশত কোটি ৯৮ লাখ ৩৫ হাজার টাকা। এ বছর বাজেটের আকার বৃদ্ধি পেয়েছে ১৭৫ কোটি ১২ লক্ষ ৭০ হাজার টাকা। বাজেটে ঘাটতির পরিমাণ ১২৭ কোটি ৮৭ লাখ টাকা।
বিজ্ঞাপন
শনিবার (২৮ জুন) বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ ডা. মিল্টন হলে ভিসি অধ্যাপক ডা. মো. শাহিনুল আলমের সভাপতিত্বে ৯৭তম সিন্ডিকেট সভায় এই বাজেট অনুমোদিত হয়। বাজেট উপস্থাপন করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ডা. নাহরীন আখতার।
অনুমোদিত বাজেটে ২০২৫-২৬ অর্থবছরের জন্য গবেষণা ও প্রশিক্ষণে ৩৮ কোটি ২০ লাখ টাকা বরাদ্দ রাখা হয়েছে, যা মোট বাজেটের প্রায় ৩.৮ শতাংশ। এর মধ্যে গবেষণাখাতে ৩৭ কোটি ১০ লাখ এবং প্রশিক্ষণ খাতে এক কোটি ১০ লাখ বরাদ্দ রয়েছে।
বাজেটে চিকিৎসা ও শৈল্য খাতে (এমএসআর) ৮৭ কোটি টাকা, ছাত্রছাত্রীদের জন্য মেধাবৃত্তি খাতে ২১৭ কোটি ৩২ লাখ ৫০ হাজার টাকা, পূর্ত সংরক্ষণে ৯ কোটি টাকা, পণ্য সেবার উপখাতে ২৫ কোটি দুই লাখ ৫০ হাজার টাকা, যন্ত্রাংশ (মূলধন) উপখাতে ৪০ কোটি দুই লাখ ৫০ হাজার টাকা এবং পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা খাতে ২৩ কোটি টাকা বরাদ্দ রাখা হয়েছে।
বাজেটের ৪৮ শতাংশই বরাদ্দ রাখা হয়েছে বেতন, ভাতা এবং পেনশন মঞ্জুরি খাতে। এর মধ্যে বেতন বাবদ ধরা হয়েছে ২৩৩ কোটি ২৬ লাখ ৩১ হাজার টাকা। এছাড়া ভাতা বাবদ ১৯০ কোটি ২৭ লাখ টাকা এবং পেনশন মঞ্জুরি খাতে ৪৫ কোটি ১৫ লাখ ২৪ হাজার টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে।
বিজ্ঞাপন
এ বছর মন্ত্রণালয়ের স্বাস্থ্য শিক্ষা ও পরিবার কল্যাণ বিভাগ থেকে সম্ভাব্য প্রাপ্য বরাদ্দের পরিমাণ ৫৬৮ কোটি ৩৭ লাখ টাকা। এছাড়া বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন (ইউজিসি) থেকে ১৪৪ কোটি ৮৬ লাখ টাকা এবং নিজস্ব আয় ধরা হয়েছে ১৩৫ কোটি টাকা।
সিন্ডিকেট সভা শেষে এক সংবাদ সম্মেলনে ভিসি অধ্যাপক ডা. মো. শাহিনুল আলম বলেন, বিএমইউর বর্তমান প্রশাসন শিক্ষা এবং গবেষণা কার্যক্রম উন্নয়নের লক্ষ্যে চীনের কুনমিং মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষর করেছে। ৮১ জন শিক্ষক ও ৫৪৯ জন ছাত্রছাত্রীকে গবেষণার জন্য গ্র্যান্ট প্রদান করা হয়েছে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের বাজেট বাস্তবায়ন ও ক্রয় প্রক্রিয়া তরান্বিত করতে ৪৩৭ জনকে প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে। রোগীদের বিনামূল্যে ওষুধ প্রদানের লক্ষ্যে প্রস্তাবিত বাজেটে বরাদ্দ বৃদ্ধি করে ১২ কোটি টাকায় উন্নীত করা হয়েছে। এছাড়া তথ্য ও প্রযুক্তিখাতে, ইনফেকশন কন্ট্রোল এবং বইপত্র ও সাময়িকী উপখাতে বরাদ্দের ব্যবস্থা রাখা হয়েছে।
সিন্ডিকেট সভায় প্রো-ভাইস চ্যান্সেলর (প্রশাসন) অধ্যাপক ডা. মো. আবুল কালাম আজাদ, প্রো-ভাইস চ্যান্সেলর (গবেষণা ও উন্নয়ন) অধ্যাপক ডা. মো. মুজিবুর রহমান হাওলাদার, স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব (চিকিৎসা ও শিক্ষা) মোহাম্মদ নূরে আলম সিদ্দিকী, ইউজিসির সদস্য অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ তানজীম উদ্দিন খান, স্বাস্থ্য অধিদফতরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. মো. আবু জাফর, বাংলাদেশ মেডিকেল অ্যান্ড ডেন্টাল কাউন্সিলের (বিএমডিসি) সভাপতি অধ্যাপক মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম, বাংলাদেশ কলেজ অব ফিজিশিয়ান্স অ্যান্ড সার্জন্সের (বিসিপিএস) সভাপতি অধ্যাপক মোহাম্মদ সহিদুল্লা, মেডিসিন অনুষদের ডিন অধ্যাপক ডা. মো. শামীম আহমেদ, সার্জারি অনুষদের ডিন অধ্যাপক ডা. মো. রুহুল আমীন, বেসিক সাইন্স ও প্যারা ক্লিনিক্যাল সায়েন্স অনুষদের ডিন অধ্যাপক ডা. সাইফ উল্লাহ মুন্সী, রেজিস্ট্রার অধ্যাপক ডা. মো. নজরুল ইসলাম, বাংলাদেশ ফেডারেল ইউনিয়ন অব জার্নালিস্টসের (বিএফইউজে) মহাসচিব কাদের গনি চৌধুরী উপস্থিত ছিলেন।
এছাড়া আমন্ত্রিত সদস্য হিসেবে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর ডা. শেখ ফরহাদ, পরিচালক (হাসপাতাল) ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আবু নোমান মোহাম্মদ মোছলেহ উদ্দিন, পরিচালক (অর্থ ও হিসাব) খন্দকার শফিকুল হাসান রতন, অতিরিক্ত পরিচালক (অর্থ ও হিসাব) নাছির উদ্দিন ভূঁঞা, অতিরিক্ত পরিচালক (অর্থ ও হিসাব) মোহাম্মদ বদরুল হুদা প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
এসএইচ/এএইচ

