সোমবার, ১৫ ডিসেম্বর, ২০২৫, ঢাকা

২৪-এ বিএমইউতে ৩৩ হাজার ব্যাগ রক্ত সংগ্রহ, প্রাণে বেঁচেছে অসংখ্য রোগী

নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ১৮ জুন ২০২৫, ০৭:৩০ পিএম

শেয়ার করুন:

B
বিশ্ব রক্তদাতা দিবস উপলক্ষে ট্রান্সফিউশন মেডিসিন বিভাগের উদ্যোগে আয়োজিত সেমিনার।

গত বছর অর্থাৎ ২০২৪ সালে মোট ৩৩ হাজার ৫৯৩ ব্যাগ রক্ত সংগ্রহ করেছে বাংলাদেশ মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিএমইউ) ট্রান্সফিউশন মেডিসিন বিভাগ। ৩৭৯ জন স্বেচ্ছা রক্তদাতা ছাড়াও রোগীর স্বজনদের থেকে এসব সংগ্রহ করা হয়েছে। 

সংগ্রহকৃত এসব রক্তে প্রাণে রক্ষা পেয়েছে অসংখ্য রোগী। এর মধ্যে ডে কেয়ার সেন্টারেই এসব রক্তে চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে ১১ হাজার ৫০২ জন রোগীকে।


বিজ্ঞাপন


বুধবার (১৮ জুন) বিশ্ব রক্তদাতা দিবস উপলক্ষে ট্রান্সফিউশন মেডিসিন বিভাগের উদ্যোগে আয়োজিত এক সেমিনারে এসব তথ্য জানানো হয়। 

এতে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিএমইউ ভাইস চ্যান্সেলর অধ্যাপক ডা. মো. শাহিনুল আলম। এ সময় স্বেচ্ছায় রক্তদান কর্মসূচি এবং রক্তদাতাদের সম্মাননা সনদ প্রদান করা হয়েছে।

সেমিনারে জানানো হয়, সংগ্রহকৃত এসব রক্ত যথাযথভাবে স্ক্রিনিং করে ১১৬ জনের রক্তে হেপাটাইটিস বি, সাতজনের হেপাটাইটিস সি, ছয়জনের এইচআইভি এবং ৪৩ জনের সিফিলিস পাওয়া যায়। আক্রান্ত এসব রক্ত ফেলে দিয়ে নিরাপদ রক্ত রোগীদের জন্য ব্যবহার করা হয়েছে।

এ সময় আরও জানানো হয়, সংগ্রহকৃত রক্ত থেকে ১৩ হাজার ৫৯৫ ব্যাগ লোহিত কণিকা, ১২ হাজার ৭১০ ব্যাগ প্লাটিলেট এবং একই সংখ্যক ব্যাগ প্ল্যাজমা তৈরি করে রোগীদের জীবন বাঁচাতে ব্যবহার করা হয়। এছাড়া রোগীদের রক্তে এন্টিবডি রয়েছে কিনা— সে বিষয়ে স্পেশালইজড ল্যাবরেটরিতে প্রায় পাঁচ হাজার ব্যাগ রক্ত পরীক্ষা করা হয়। ওই বছরে ডে-কেয়ার সেন্টারে ১১ হাজার পাঁচশত দুইজন রোগীকে নিরাপদ রক্তের মাধ্যমে চিকিৎসাসেবা দেওয়া হয়।


বিজ্ঞাপন


সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে ভিসি অধ্যাপক ডা. শাহিনুল আলম বলেন, রক্তের মাধ্যমে রোগীদের সেবা দেওয়ার গুণগত মান অতীতের তুলনায় অনেক বৃদ্ধি পেয়েছে। নিরাপদ রক্ত পরিসঞ্চালনে দেশ অনেক এগিয়েছে। বাংলাদেশ মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের ট্রান্সফিউশন মেডিসিন বিভাগের মাধ্যমে নিরাপদভাবে রক্ত সংগ্রহ করে রোগীদের সেবাদান, ছাত্রছাত্রীদের উন্নত উচ্চশিক্ষা প্রদানে বিরাট অবদান রাখছে।

বিশেষ অতিথির বক্তব্যে বিএমইউর প্রো-ভাইস চ্যান্সেলর (গবেষণা ও উন্নয়ন) অধ্যাপক ডা. মো. মুজিবুর রহমান হাওলাদার বলেন, রক্তের বিকল্প রক্ত। রক্তদাতাদের ঋণ কোনো কিছুর বিনিময়ে শোধ করা যায় না। তাদের রক্তের বিনিময়ে মুমূর্ষু রোগীর জীবন বাঁচে। দেশব্যাপী নিরাপদ রক্ত পরিসঞ্চালন নিশ্চিতকরণে আরো জোর দিতে হবে। এই বিষয়ে জনসচেতনতা আরও বৃদ্ধি করতে হবে।

কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ডা. নাহরীন আখতার স্বেচ্ছায় রক্তদাতাদের সম্মান জানিয়ে বলেন, অনেক সময় এমন রোগীও থাকে যে, ১০ ব্যাগ নিরাপদ রক্তের ব্যবস্থা করে রোগীর অস্ত্রোপচার শুরু করতে হয়। চিকিৎসা সেবায় নিরাপদ রক্ত যে কতটা প্রয়োজনীয়, তা সহজেই অনুধাবন করা যায়।

এ সময় ট্রান্সফিউশন মেডিসিন বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ডা. আয়েশা খাতুন রক্তদানে সক্ষম ব্যক্তিদের জন্মদিনসহ বিভিন্ন উপলক্ষে বছরে কমপক্ষে একবার রক্তদানের আহ্বান জানান।

সেমিনারে প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ডা. সোনিয়া শরমিন মিয়া ও ডা. নাদিয়া শারমিন তৃষা। এটি সঞ্চালনা করেন সহকারী অধ্যাপক ডা. ফারাহ আনজুম সোনিয়া।

এ সময় পরিচালক (হাসপাতাল) ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আবু নোমান মোহাম্মদ মোছলেহ উদ্দিন, নিউরোসার্জারি বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ডা. মো. রুহুল কদ্দুস বিপ্লব, ট্রান্সফিউশন মেডিসিন বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ডা. শেখ সাইফুল ইসলাম শাহিন, সহকারী অধ্যাপক ডা. সুবর্ণা সাহা উপস্থিত ছিলেন।

এসএইচ/এএইচ

ঢাকা মেইলের খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

সর্বশেষ
জনপ্রিয়

সব খবর