শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল, ২০২৪, ঢাকা

থ্যালাসেমিয়া চিকিৎসায় হ্যাপলো ট্রান্সপ্লান্ট যুগান্তকারী পদ্ধতি

নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ১১ মে ২০২২, ০৪:৩৬ পিএম

শেয়ার করুন:

থ্যালাসেমিয়া চিকিৎসায় হ্যাপলো ট্রান্সপ্লান্ট যুগান্তকারী পদ্ধতি

বাংলাদেশে প্রথমবারের মতো থ্যালাসেমিয়া আক্রান্ত ২ বছরের কম বয়সী শিশুর দেহে হ্যাপলো ট্রান্সপ্লান্ট পদ্ধতিতে চিকিৎসা সম্পন্ন করে এভারকেয়ার হাসপাতাল। থ্যালাসেমিয়া চিকিৎসায় একে এক যুগান্তকারী অধ্যায়ের সূচনা বলে জানিয়েছেন হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। 

আজ বুধবার (১১ মে) রাজধানীর বসুন্ধরায় এভারকেয়ার হাসপাতালে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানানো হয়। 


বিজ্ঞাপন


তারা জানান, বাংলাদেশে প্রথমবারের মতো দুই বছরের কম বয়সী (২১ মাস) শিশুর থ্যালাসেমিয়া রোগের চিকিৎসা সম্পন্ন করেছে দেশের সর্বপ্রথম জেসিআই স্বীকৃত এভারকেয়ার হসপিটাল। থ্যালাসেমিয়া একটি বংশগত রোগ, যা হিমোগ্লোবিন এর জন্মগত ত্রুটির ফলে তৈরি হয়। সম্প্রতি এভারকেয়ার ঢাকার চিকিৎসকবৃন্দ হ্যাপলো ট্রান্সপ্লান্ট প্রক্রিয়ার মাধ্যমে শিশুটির চিকিৎসা সম্পন্ন করে দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে।

এ বিষয়ে হাসপাতালটির হেমাটোলজি ও স্টেম সেল ট্রান্সপ্লান্ট বিভাগের কোঅর্ডিনেটর ও সিনিয়র কনসালটেন্ট ডা. আবু জাফর মোহাম্মদ সালেহ বলেন, ‘থ্যালাসেমিয়া একটি  বংশগত রোগ। জিনগত বিভিন্ন ডিলিশন, মিউটেশনের কারণে থ্যালাসেমিয়া হয়ে থাকে। আমাদের দেশে প্রায় ৮০ লাখ মানুষ থ্যালাসেমিয়ায় আক্রান্ত। যাদের অধিকাংশই এ সম্পর্কে অবগত নয়। কারণ তাদের বেশিরভাগই বাহক বা ক্যারিয়ার যা সহজে ধরা পরে না, ফলে একে সাইলেন্ট কিলারও বলা হয়ে থাকে। এর মধ্যে ৫০ থেকে ৭০ হাজার থ্যালাসেমিয়া রোগী আছেন যাদের চিকিৎসা প্রয়োজন। বর্তমানে এই রোগের একমাত্র কিউরেটিভ ট্রিটমেন্ট বোনম্যারো ট্রান্সপ্লান্ট।’

চিকিৎসার প্রতিবন্ধকতার কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘এক্ষেত্রে সবচেয়ে বড় সমস্যা হয়ে দাঁড়ায় ডোনার পাওয়া, কারণ থ্যালাসেমিয়া রোগীর পরিবার ছোট আকারের হওয়ায় ডোনার পাওয়ার সম্ভাবনা ১০ শতাংশের নিচে। তাই এর বিকল্প পদ্ধতি হিসেবে হ্যাপলো ট্রান্সপ্লান্ট পদ্ধতি ব্যবহার করা হয় অর্থাৎ হাফ-ম্যাচ ডোনার দ্বারা ট্রান্সপ্লান্ট করা হয়। হ্যাপলো ট্রান্সপ্লান্ট বা হাফ ম্যাচ ট্রান্সপ্লান্ট এমন এক পদ্ধতি যেখানে পরিবারের যে কেউ যেমন বাবা, মা, ভাই, বোন ডোনার হিসেবে ভূমিকা পালন করতে পারে। এই প্রক্রিয়ায় থ্যালাসেমিয়া আক্রান্ত রোগীর ডোনার নিয়ে আর ভোগান্তি পোহাতে হয় না।’

‘সাধারণত শিশুর ২ থেকে ৫ বছর বয়সের মধ্যেই এই ট্রান্সপ্লান্ট করতে হয়। তবে ২ বছরের আগেও করা যায়। দেশে প্রথমবারের মতো গত ৫ মে, ২১ মাস বয়সী শিশুর হ্যাপলো ট্রান্সপ্লান্ট সফলভাবে সম্পন্ন করেছি। বাংলাদেশের থ্যালাসেমিয়া আক্রান্তদের জন্য এটি একটি বিশাল সুখবর এবং এর মাধ্যমে এভারকেয়ার হসপিটালের হাত ধরে দেশের চিকিৎসা ব্যবস্থায় একটি যুগান্তকারী অধ্যায়ের সূচনা হয়েছে’, যোগ করেন ডা. আবু জাফর।

এ সময় প্রতিষ্ঠানটির মেডিকেল সার্ভিসেসের ডেপুটি ডিরেক্টর ডা. আরিফ মাহমুদ বলেন, ‘ব্লাড ক্যান্সার রোগীদের জন্য সকল প্রকার চিকিৎসা সাশ্রয়ী মূল্যে এভারকেয়ার হাসপিটাল পাওয়া যাচ্ছে। তাই চিকিৎসার জন্য আর বিদেশ যেতে হবে না, এক ছাদের নিচে আমরা আন্তর্জাতিক মানের চিকিৎসা সেবা দিয়ে যাচ্ছি। এই হ্যাপলো ট্রান্সপ্লান্ট বা হাফ ম্যাচ ট্রান্সপ্লান্ট বাংলাদেশের স্বাস্থ্য সেবা খাতে একটি মাইলফলক।’

অনুষ্ঠানে এভারকেয়ার হসপিটাল, বাংলাদেশের এমডি ও সিইও ডা. রত্নদ্বীপ চাস্কার, চিকিৎসার সাথে সংশ্লিষ্ট চিকিৎসক স্বাস্থ্যকর্মী ও রোগীর স্বজনরা উপস্থিত ছিলেন। 

এমএইচ/ একেবি

ঢাকা মেইলের খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

সর্বশেষ
জনপ্রিয়

সব খবর