শুক্রবার, ১৮ অক্টোবর, ২০২৪, ঢাকা

প্রতি ১০ নারীর একজন পিসিওএসে ভুগছেন

নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ২৬ সেপ্টেম্বর ২০২৩, ০২:০৫ পিএম

শেয়ার করুন:

প্রতি ১০ নারীর একজন পিসিওএসে ভুগছেন
বিএসএমএমইউ আয়োজিত পিসিওএস সচেতনতা মাস উপলক্ষে শোভাযাত্রাপূর্বক আলোচনা।

প্রজননক্ষম নারীদের হরমোন ও বিপাকজনিত অন্যতম প্রধান সমস্যা পলিসিস্টিক ওভারি সিনড্রোম (পিসিওএস)। প্রতি ১০ জন নারীর মধ্যে অন্তত একজন এ সমস্যায় আক্রান্ত হচ্ছেন বলে জনিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা।

মঙ্গলবার (২৬ সেপ্টেম্বর) বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে (বিএসএমএমইউ) আয়োজিত পলিসিস্টিক ওভারি সিনড্রোম (পিসিওএস) সচেতনতা মাস সেপ্টেম্বর-২০২৩ এর শোভাযাত্রাপূর্বক আলোচনা সভায় বক্তারা এ তথ্য জানান।


বিজ্ঞাপন


আলোচনা সভায় জানানো হয়, পিসিওএস প্রজননক্ষম মহিলাদের একটি অন্যতম প্রধান হরমোন ও বিপাকজনিত সমস্যা। প্রতি ১০ জন নারীর একজন এ সমস্যায় আক্রান্ত হচ্ছেন। মাসিক শুরু হওয়ার পর কিশোর বয়স থেকেই এর লক্ষণগুলো প্রকাশ পেতে শুরু করে। এই রোগে নারীদের গর্ভধারণে জটিলতা, ডায়াবেটিস, মেটাবোলিক সিনড্রোম যেমন হৃদনালি সংক্রান্ত রোগে আক্রান্ত হওয়া, রক্তে ট্রাইগ্লিসারাইড, কোলেস্টেরল বেড়ে যাওয়া, রক্তচাপ বাড়া, বিষণ্বতা অনুভব করা, জরায়ু থেকে রক্তপাত হওয়া, তলপেটে তীব্র ব্যথা হওয়া ও যকৃতে প্রদাহ হতে পারে।

পিসিওএস রোগের লক্ষণ তুলে ধরে আলোচকরা বলেন, হরমোনজনিত এ রোগে আক্রান্ত  নারীদের ওজন বৃদ্ধি পাওয়াসহ বিভিন্ন অংশে অপ্রয়োজনীয় চুল গজানো, প্রতিনিয়ত চুল পড়া বা চুলের ঘনত্ব হালকা হতে থাকা, ত্বক অতিরিক্ত তেলতেলে হওয়া বা ব্রণ হওয়া, শরীরের বিভিন্ন অংশের ত্বক কালো হয়ে যেতে থাকে-যেমন হাত কিংবা স্তনের নিচের ত্বকে, গলার পেছনের অংশে, কুঁচকিতে কালো দাগ ইত্যাদি দেখা দিতে পারে। এছাড়া ঘুমে সমস্যা হওয়া, সারাক্ষণ দুর্বলতা অনুভব করা, মাথাব্যথা, অনিয়মিত পিরিয়ড (মাসিক) হওয়া, পিরিয়ডকালীন সময়ে অতিরিক্ত রক্ত যাওয়ার ফলে গর্ভধারণে সমস্যার সৃষ্টি হতে পারে। 

BSMMU
বিএসএমএমইউ আয়োজিত পিসিওএস সচেতনতা মাস উপলক্ষে শোভাযাত্রাপূর্বক।

রোগটি প্রতিরোধে করণীয় তুলে ধরে বলা হয়, পিসিওএস আক্রান্তদের শরীরচর্চা ও ওজন কমানো জরুরি। ওজন পাঁচ শতাংশ কমাতে পারলে পিরিয়ড নিয়মিত হতে শুরু হতে পারে। আর ওজন ১০ শতাংশ কমাতে পারলে ডিম্বাশয়ের কার্যক্রম স্বাভাবিক হবে এবং বন্ধ্যত্বের সমস্যা দূর হবে। সুষম খাবারসহ প্রচুর পানি বা মিষ্টিহীন জলীয় খাদ্য গ্রহণ করতে হবে। নির্ধারিত সময়ই দৈনন্দিনের খাবার গ্রহণ করা জরুরি। একইসঙ্গে ডায়াবেটিস প্রতিরোধ বা নিয়ন্ত্রণ, উচ্চ রক্তচাপ কমানো, চর্বিতে কোলেস্টেরলের মাত্রা কমানোর মাধ্যমে পিসিওএস প্রতিরোধ করা সম্ভব।


বিজ্ঞাপন


প্রধান অতিথির বক্তব্যে বিএসএমএমইউ উপাচার্য অধ্যাপক ডা. মো. শারফুদ্দিন আহমেদ বলেন, দেশের রোগীরা যেসকল ব্যয়বহুল রোগের চিকিৎসার জন্য বিদেশে যায় তার মধ্যে নারীদের বন্ধ্যাত্ব অন্যতম। এর ফলে দেশের মুদ্রা বিদেশে চলে যায়। ইতোমধ্যেই বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের রিপ্রোডাক্টিভ এন্ডোক্রাইনোলজি অ্যান্ড ইনফাটিলিটি বিভাগে পুরুষ ও নারীদের বন্ধ্যাত্ব রোগের উন্নত চিকিৎসা সেবা শুরু হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার স্বপ্নের সুপার স্পেশালাইজড হাসপাতালে সর্বাধুনিক প্রযুক্তির মাধ্যমে বন্ধ্যাত্ব রোগের বিশ্বমানের চিকিৎসা নিশ্চিত করা হবে। যার ফলে দেশের বন্ধ্যাত্ব নারী-পুরুষ মাতৃত্ব ও পিতৃত্বের অনুভূতি লাভ করতে পারবেন বলে আশা রাখি।

এরপর 'ক্ষমতাপ্রাপ্ত রোগী, ভালো ফলাফল' স্লোগানকে সামনে রেখে বিএসএমএমইউতে একটি বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রা অনুষ্ঠিত হয়। শোভাযাত্রায় বিশ্ববিদ্যালয়ের রিপ্রোডাক্টিভ এন্ডোক্রাইনোলজি অ্যান্ড ইনফার্টিলিটি বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ডা. জেসমিন বানু, বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক ডা. শাকিলা ইসরাত, ডা. ফারজানা দীবা, ডা. নূরজাহান বেগম, ডা. শাহীন আরা আনওয়ারী প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

এমএইচ/এমএইচএম

ঢাকা মেইলের খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

সর্বশেষ
জনপ্রিয়

সব খবর