ডেঙ্গু প্রতিরোধে জনগণের মধ্যে সচেতনতা তৈরিতে মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করেছে বাংলাদেশ মহিলা পরিষদ। এ সময় পরিষদের পক্ষ থেকে ২৩ দফা সুপারিশ তুলে ধরা হয়।
মঙ্গলবার (৮ আগস্ট) বিকেলে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে বাংলাদেশ মহিলা পরিষদ, ঢাকা মহানগর কমিটির উদ্যোগে 'আসুন, ডেঙ্গুর ভয়াবহতা প্রতিরোধে মশকমুক্ত পরিবেশ তৈরি করি' এই স্লোগানকে সামনে রেখে মানববন্ধন কর্মসূচি অনুষ্ঠিত হয়।
বিজ্ঞাপন
এতে বক্তারা বলেন, বাংলাদেশ মহিলা পরিষদ একটি অসাম্প্রদায়িক স্বেচ্ছাসেবী গণনারী সংগঠন। এ সংগঠন দীর্ঘ ৫৩ বছর যাবৎ নারীর অধিকার প্রতিষ্ঠায় নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে। এই সংগঠন বহুমাত্রিক আন্দোলনের সাথে জড়িত। ডেঙ্গু রোগবাহিত এডিস মশা নিধনে প্রতি বছর ঢাকা মহানগর পাড়ায় পাড়ায় সচেতনতামূলক কর্মসূচি গ্রহণ করে। এই ধারাবাহিকতায় আজকের কর্মসূচি।
এতে সভাপতিত্ব করেন পরিষদের ঢাকা মহানগর কমিটির সদস্য সারা আলম। এ সময় অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন ঢাকা মহানগর কমিটির সদস্য নুসরাত এশা, সাংগঠনিক সম্পাদক কানিজ ফাতেমা টগর, আন্দোলন সম্পাদক জুয়েলা জেবুননেসা খান, সহ-সাধারণ সম্পাদক মঞ্জু ধর প্রমুখ।
এসময় সংস্থাটির পক্ষ থেকে প্রস্তাব পাঠ করেন ঢাকা মহানগর কমিটির অর্থ সম্পাদিক ফেরদৌস জাহান রত্না। তিনি ২০ দফা পরামর্শ তুলে ধরেন।
পরামর্শগুলো হলো:
বিজ্ঞাপন
১. মশার প্রজনন স্থল ধ্বংস করতে হবে।
২. আপনার ঘর এবং আশেপাশে যেকোনো পাত্রে জমে থাকা পানি তিন দিন পরপর পরিষ্কার করুন, তাহলে এডিস মশার লার্ভা মরে যাবে।
৩. ফুলের টব, প্লাস্টিকের পাত্র, পরিত্যক্ত আসবাব ইত্যাদি পরিষ্কার রাখুন।
৪. ব্যবহৃত পাত্রে লেগে থাকা মশার ডিম অপসারণে পাত্রটি ঘসে পরিবর্তন করতে হবে।
৫. অব্যবহৃত পানির পাত্র উল্টে রাখুন।
৬. রাতে বা দিনে ঘুমানোর সময় মশারি ব্যবহার করুন।
৭. পরিবারে ও আশেপাশের পরিবেশে স্বাস্থ্যকর অবস্থা বজায় রাখুন।
৮. প্লাস্টিক পণ্য ব্যবহার বর্জন করুন।
৯. হাত পা ঢাকা পোশাক পরতে হবে।
১০. পাড়া এবং মহল্লায় নিয়মিতভাবে পরিচ্ছন্নতা অভিযান চালাতে ওয়ার্ড কমিশনারদের অনুরোধ করুন।
১১. বর্ষার শুরুতেই রাস্তাঘাট, খানা-খন্দ, ডোবা-নালা, ঝিল পরিষ্কার করে পর্যাপ্ত পরিমাণ কীটনাশক ওষুধ ছিটিয়ে দিতে হবে।
১২. ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত রোগীর রক্ত সংগ্রহ, স্যালাইন, সরবরাহ ও পরীক্ষাগুলো স্বল্পমূল্যে বা নামমাত্র মূল্যে এবং যথাযথ চিকিৎসার ব্যবস্থা করতে হবে।
১৩. দেশের সব চিকিৎসালয়ে আক্রান্ত রোগীদের রক্তের প্রাপ্ততা নিশ্চিত করার পদক্ষেপ নিতে হবে।
১৪. এলাকাভিত্তিক পর্যাপ্ত লোকবলের ব্যবস্থা করে, প্রয়োজনে টিম গঠন করে আক্রান্ত রোগীর পরিবারকে সহযোগিতা করতে হবে।
১৫. ‘৯৯৯’ এ ফোন করে পাওয়া যায় না অভিযোগ আসছে, সেক্ষেত্রে হেল্প লাইন খুলে আরও কয়েকটি নাম্বার প্রচার করে, আক্রান্ত ব্যক্তিকে দ্রুত চিকিৎসার আওতায় আনতে হবে।
১৬. পরিবারের প্রত্যেকেসহ নিজে সর্তক থাকুন এবং আশেপাশের সকলকে পরিষ্কার, পরিচ্ছন্ন ও সর্তক থাকতে উৎসাহিত করুন।
১৭. আক্রান্ত রোগীকে প্রচুর পরিমাণে তরল খাবার খেতে দিতে হবে।
১৮. রেডজোন ঘোষণাকৃত এলাকাগুলোতে অস্থায়ী হাসপাতালের ব্যবস্থা করতে হবে।
১৯. বেসরকারি সকল হাসপাতালে আক্রান্ত রোগীদের চিকিৎসার সুব্যবস্থা রাখতে হবে।
২০. শরীরের তাপমাত্রা ১০৪ ডিগ্রি হওয়ার পাশাপাশি কিছু লক্ষণ দেখা দিলে ডেঙ্গু সন্দেহে নিকটস্থ হাসপাতালে গিয়ে চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে।
২১. সরকারি বেসরকারি হাসপাতালগুলোতে ডেঙ্গু রোগের পরীক্ষার জন্য জরুরি বিভাগ খোলা হয়েছে। তাই জ্বর হলে অবহেলা না করে জরুরি ভিত্তিতে ডাক্তারের শরণাপন্ন হতে হবে।
২২. বিশেষজ্ঞরা পরামর্শ দেন, মশার লার্ভা মেরে ফেলতে প্রাকৃতিক ব্যাকটেরিয়া বিটিআই (ব্যসিলাস থুরেঞ্জিয়েনসিস ইসরাইলেন্সিস) স্পে করা উচিত। পানিতে বিটিআই পেলে মশার লার্ভা সেটা খায় এবং মারা যায়।
২৩. ডেঙ্গু সম্পর্কে সচেতনতা বাড়াতে হবে।
এমএইচ/জেবি

