শনিবার, ২০ এপ্রিল, ২০২৪, ঢাকা

‘আইসক্রিম স্বাস্থ্যসম্মত না, কিন্তু এটাই আমার ব্যবসা’

কাজী রফিক
প্রকাশিত: ১২ এপ্রিল ২০২২, ০৫:৫৩ পিএম

শেয়ার করুন:

‘আইসক্রিম স্বাস্থ্যসম্মত না, কিন্তু এটাই আমার ব্যবসা’
উন্নয়নশীল এলাকায় ঘুরে ঘুরে আইসক্রিম বিক্রি করছেন রাশেদ মিয়া | ছবি: ঢাকা মেইল

ঢাকার উন্নয়নশীল এলাকায় ঘুরে ঘুরে আইসক্রিম বিক্রি করেন মো. রাশেদ মিয়া। ১৯ বছর বয়সী এই তরুণ মাদরাসার দাখিলের (১০ম শ্রেণি) শিক্ষার্থী। নিজেও জানেন তার বিক্রিত আইসক্রিম স্বাস্থ্যসম্মত নয়। তবুও বিক্রি করছেন।

রাশেদের ভাষ্য- আইসক্রিম স্বাস্থ্যসম্মত না, কিন্তু এটিই তার জীবিকার পথ।


বিজ্ঞাপন


মঙ্গলবার (১২ এপ্রিল) রাজধানীর মোহাম্মদপুরের বেড়িবাঁধ এলাকায় রাশেদের সঙ্গে কথা হলে ঢাকা মেইলকে তিনি জানান, বসিলার আইসক্রিম কারখানা থেকে এই আইসক্রিম নিয়ে আসেন তিনি। পরে সেগুলো বিভিন্ন এলাকায় ঘুরে ঘুরে বিক্রি করেন।

রাশেদ জানান, মোহাম্মদপুর বেড়িবাঁধ সংলগ্ন কাটাসুর, চাঁদ উদ্যান, সাত মসজিদ হাউজিং, নবীনগর, মোহাম্মদীয়া হাউজিং, ঢাকা উদ্যান, আদাবর, সুনিবিড় হাউজিং এলাকায় ঘুরে ঘুরে এই আইসক্রিম বিক্রি করেন তিনি। তার বিক্রিত আইসক্রিমের নাম ‘কোন আইসক্রিম’।

প্রতিটি আইসক্রিম তিনি বিক্রি করেন পাঁচ টাকা করে। সঙ্গে রয়েছে লটারির ব্যবস্থাও। চরকি ঘুরিয়ে ৫ টাকার বিনিময়ে একাধিক আইসক্রিম পাওয়ার সুযোগও আছে তার কাছে।

এ ধরনের আইসক্রিমে স্বাস্থ্যঝুঁকি রয়েছে- এ বিষয়ে জানেন কি না এমন প্রশ্নে যেন নির্বাক হয়ে যান দাখিলের এই শিক্ষার্থী। একই প্রশ্ন দ্বিতীয়বার করা হলে রাশেদ বলে ওঠেন, ‘আমি জানি, আমার আইসক্রিম স্বাস্থ্যসম্মত না। কিন্তু এটা তো আমার ব্যবসা। আমি এটা করেই চলি।’


বিজ্ঞাপন


Ice Cream
আইসক্রিম কিনতে ছোট ছোট শিশুদের ভিড় | ছবি: ঢাকা মেইল

রাশেদের দাবি, তার কারখানায় বরফ কল থেকে বরফ আনা হয় না। নিজেরাই মেশিনের মাধ্যমে বরফ তৈরি করে আইসক্রিমে পরিণত করেন।

তবে খোলা পরিবেশের কারণে আইসক্রিমে ময়লা পড়ছে। ছোট-ছোট শিশুদের হাতে আইসক্রিম তুলে দেওয়া হচ্ছে নোংরা হাতেই। এ বিষয়ে কথা বলতে নারাজ এই আইসক্রিম বিক্রেতা।

এদিকে, সংশ্লিষ্ট সূত্র জানিয়েছে- রাজধানীর মোহাম্মদপুর, আদাবর ও গাবতলি এলাকাতেই এমন আইসক্রিম বিক্রেতা রয়েছেন পাঁচ শতাধিক। যারা রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় ঘুরে ঘুরে এসব আইসক্রিম বিক্রি করছেন। আর তাদের মূল ক্রেতা শিশুরাই। ফলে ব্যাপক সংখ্যক শিশুদের স্বাস্থ্য হুমকির মুখে রয়েছে।

অন্যদিকে, গরমের সময়ে বরফ কল থেকে আনা বরফ দিয়ে তৈরি যে কোনো ধরনের খাবার এড়িয়ে চলার পরামর্শ দিয়েছেন সংক্রামক রোগ বিশেষজ্ঞ ও স্বাস্থ্য অধিদফতরের রোগ নিয়ন্ত্রণ শাখার সাবেক পরিচালক অধ্যাপক ডা. বেনজির আহমেদ। ঢাকা মেইলকে তিনি বলেন, ‘বরফকলের বরফ শরবত ও পানিতে ব্যবহারে সতর্ক হতে হবে। বরফ কলগুলোতে অধিকাংশ ক্ষেত্রে সাপ্লাইয়ের পানিই ব্যবহার করা হয়, যা নিরাপদ নয়। তাই বরফ কলের ব্যবহৃত পানিটি নিরাপদ কিনা তা নিশ্চিত হওয়া জরুরি। এ বিষয়ে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের নজরদারি বৃদ্ধি করতে হবে।’

কারই/আইএইচ

ঢাকা মেইলের খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

সর্বশেষ
জনপ্রিয়

সব খবর