শুক্রবার, ১৮ অক্টোবর, ২০২৪, ঢাকা

ডেঙ্গুতে হাসপাতালগুলোর ‘কাহিল’ অবস্থা

নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ১৭ জুলাই ২০২৩, ০৮:০৯ এএম

শেয়ার করুন:

ডেঙ্গুতে হাসপাতালগুলোর ‘কাহিল’ অবস্থা

মহামারি আকার ধারণ করেছে দেশের ডেঙ্গু পরিস্থিতি। এতে কাহিল অবস্থা হাসপাতালগুলোর। হিমশিম খেতে হচ্ছে চিকিৎসা দিতে। শুধু ঢাকা মহানগরীতে বর্তমানে মশাবাহিত রোগটিতে আক্রান্ত রোগী ভর্তি রয়েছে সরকারি-বেসরকারি ৫৩টি হাসপাতালে। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি রোগী চিকিৎসা নিচ্ছে মুগদা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে। 

এছাড়া ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, এসএসএসএমসি ও মিটফোর্ড হাসপাতাল, ডিএনসিসি ডেডিকেটেড কোভিড-১৯ হাসপাতাল, বেসরকারি হলি ফ্যামিলি রেড ক্রিসেন্ট হাসপাতালে অনেক রোগী ভর্তি রয়েছে। বড় হাসপাতালগুলোয় জায়গা না হওয়ায় মেঝেতে থেকেই চিকিৎসা নিতে দেখা গেছে অনেক রোগীকে।


বিজ্ঞাপন


স্বামী আজিম মিয়াকে নিয়ে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন মনোয়ারা বেগম। তিনি বলেন, খাটের ওপরে, নিচে, ডাইনে-বামে সবদিকে ডেঙ্গু রোগী। তিন দিন হইলো স্বামীরে এখানে ভর্তি করছি। ডাক্তার স্যালাইন আর ওষুধ দিছে, জ্বর একটু কমছে।

মনোয়ারা বেগমের কথায় অনেকটা ফুটে উঠছে হাসপাতালগুলোর চিত্র। পরিসংখ্যানও বলছে সে কথাই গত দুই মাস দেশে আশঙ্কাজনকভাবে বেড়েছে ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা। এর মধ্যেই হাসপাতালগুলোয় ভর্তি রোগীর সংখ্যা ২০ হাজার। মৃত্যু ছাড়িয়েছে শতাধিক। ডেঙ্গু ছড়িয়ে পড়েছে দেশের ৬৩টি জেলায়।

স্বাস্থ্য সেবা বিভাগের সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী— গত ২৪ ঘণ্টায় সারাদেশে ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়েছে ১ হাজার ৪২৪ জন। একই সময়ে মৃত্যু হয়েছে ৬ জনের। তাদের বেশিরভাগ আক্রান্ত হয়েছে ঢাকায়। চলতি বছরের এখন পর্যন্ত দেশে মোট আক্রান্ত হয়েছে ২০ হাজার ৮৭৮ জন। এছাড়া মশাবাহিত রোগটিতে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু হয়েছে ১০৬ জনের।

ডা. তৌফিক আহমেদ রাজধানীর একটি হাসপাতালের চিকিৎসক। তিল ধারণের ঠাঁই নেই তার হাসপাতালে। তিনি জানান, প্রতিদিনই জ্বর নিয়ে রোগী আসছে। আমরা কাউকে ফিরিয়ে দিচ্ছি না। অবস্থা ভালো মনে হলে ওষুধ দিয়ে দিচ্ছি। কিন্তু বেশিরভাগ রোগী আসছে কিছুটা খারাপ অবস্থায়।


বিজ্ঞাপন


তিনি জানান, গত কয়েক বছরের তুলনায় এবার ডেঙ্গু রোগীদের ক্ষেত্রে খুব অল্প সময়েই অবস্থার অবনতি হতে দেখা যাচ্ছে। তার আশঙ্কা— সম্প্রতি হওয়া বৃষ্টির পানি জমে ডেঙ্গু সংক্রমণ আরও বেড়ে যেতে পারে। 

জানা যায়, গেল বছর, অর্থাৎ ২০২২ সালে ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন ৬২ হাজার ৩৮২ জন রোগী। একই সময় মৃত্যু হয়েছিল রেকর্ড ২৮১ জনের। সে বছরও জুলাই, আগস্ট মাসে ডেঙ্গুর সংক্রমণ অনেক বেড়ে গিয়েছিল।

স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা মনে করেন— দেশে ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুর প্রকৃত চিত্র এই পরিসংখ্যানে আসছে না। কারণ অনেকেই যেমন ঘরে বসে চিকিৎসা নিচ্ছেন, তাদের তথ্য এখানে যুক্ত হচ্ছে না। আবার দেশের সব সরকারি-বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি রোগীর তথ্য এখানে নিয়মিত আসছে না। বিশেষ করে ঢাকার বাইরের বেসরকারি হাসপাতালগুলোর ডেঙ্গু রোগীদের তথ্য আসে না স্বাস্থ্য বিভাগে।

এইউ

ঢাকা মেইলের খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

সর্বশেষ
জনপ্রিয়

সব খবর