মঙ্গলবার, ১৬ ডিসেম্বর, ২০২৫, ঢাকা

সুচিত্রা সেন: আজীবন নায়িকা ছিলেন যিনি

বিনোদন ডেস্ক
প্রকাশিত: ১৭ জানুয়ারি ২০২৩, ০১:৩৫ পিএম

শেয়ার করুন:

সুচিত্রা সেন: আজীবন নায়িকা ছিলেন যিনি

তার হাসিতে দুলে উঠত রুপালি পর্দা, সেলুলয়েডের ফিতা হয়ে উঠত প্রাণবন্ত। এতটাই সম্মোহনী সৌন্দর্যের অধিকারী ছিলেন বাংলা চলচ্চিত্রের কিংবদন্তি অভিনেত্রী সুচিত্রা সেন। বাঙালিরা ভালোবেসে তাকে ডাকতেন মহানায়িকা। আজ ১৭ জানুয়ারি তার চলে যাওয়ার দিন। ২০১৪ সালের এই দিনে জীবনের লেনাদেনা চুকিয়ে অনন্তলোকে যাত্রা করেন তিনি।

জন্ম ও শৈশব:


বিজ্ঞাপন


১৯৩১ সালের ৬ এপ্রিল বংলাদেশের পবনা জেলায় (তৎকালীন ব্রিটিশ ভারতের বাংলা প্রেসিডেন্সি) জন্মগ্রহণ করেন সুচিত্রা সেন। তার পিতা করুণাময় দাশগুপ্ত ও মা ইন্দিরা দেবী। সুচিত্রা সেনের পারিবারিক নাম ছিল রমা রায়। করুণাময়-ইন্দিরা দম্পতির তৃতীয় সন্তান চিলেন তিনি।

ক্যারিয়ার:

সুচিত্রা সেন চলচ্চিত্রে নাম লেখান ১৯৫২ সালে। কিন্তু শেষ কোথায় নামের সেই ছবিটি আলোর মুখ দেখেনি। পরে রুপালি পর্দায় তার আত্মপ্রকাশ ঘটে সাড়ে চুয়াত্তর ছবির মাধ্যমে। এতে তার বিপরীতে ছিলেন উত্তম কুমার। প্রথম ছবিতেই বাজিমাত করেন তিনি। তুমুল জনপ্রিয়তা অর্জন করে এ ছবি। সেইসঙ্গে বাংলা চলচ্চিত্রে পথচলা শুরু হয় সর্বকালের সেরা জুটি উত্তম-সুচিত্রার। এরপর আর পেছন ফিরে তাকাতে হয়নি সুচিত্রাকে। একের পর এক ব্যবসাসফল চলচ্চিত্র দিয়ে সম্মোহিত করেন বাংলা ভাষাভাষীদের। সেইসঙ্গে নিজেও দখল করে নেন রুপালি পর্দার রানির আসন। সুচিত্রা সেন অভিনীত ছবিগুলোর মধ্যে কাজরী, ঢুলি, মরনের পরে, অগ্নিপরীক্ষা, অন্নপূর্ণার মন্দির উল্লেখযোগ্য।

আড়াল যাপন:


বিজ্ঞাপন


সুচিত্রা সেন আজীবন নায়িকা ছিলেন। কখনও কোনো পার্শ্ব চরিত্রে দেখা যায়নি তাকে। জীবনের শেষদিন পর্যন্ত নায়িকা ইমেজ ধরে রাখতে বেছে নিয়েছিলেন স্বেচ্ছা আড়াল জীবন। টানা ২৫ বছর অভিনয়ের পর ১৯৭৮ সালে চলচ্চিত্র থেকে অবসরগ্রহণ করেন। নিজেকে নিয়োজিত করেন রামকৃষ্ণ মিশনের সেবায়। মৃত্যুর আগ পর্যন্ত আর কখনও জনসম্মুখে নিজেকে প্রকশ করেননি তিনি।

জীবনবসান:

২০১৪ সালের ১৭ জানুয়ারি জীবনবসান ঘটে সুচিত্রা সেনের। সেদিন ভারতীয় সময় সকাল ৮টা ২৫ মিনিটে কলকাতার বেল ভিউ হাসপাতালে হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু হয় তার। সেইসঙ্গে সমাপ্তি ঘটে বাংলা চলচ্চিত্র ইতিহাসে সবচেয়ে বড় অধ্যায়ের। এ মহানায়িকাকে গান স্যালুট দিয়ে জানানো হয় শেষ সম্মান। তার প্রয়াণে শোক প্রকাশ করেন ভারতের রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী থেকে শুরু করে বিভিন্ন অঙ্গনের মানুষজন।

অর্জন:

সুচিত্রা সেন তার সৌন্দর্য ও অভিনয় দিয়ে শুধু দর্শকের মনই জয় করেননি, ঝুলি পূর্ণ করেছিলেন অসংখ্য পুরস্কার ও সম্মাননায়। ১৯৬৩ সালে সাত পাকে বাঁধা চলচ্চিত্রে অভিনয়ের জন্য মস্কো চলচ্চিত্র উৎসবে সিলভার প্রাইজ ফর বেস্ট অ্যাকট্রেস জয় করেন তিনি। প্রথম ভারতীয় অভিনেত্রী হিসেবে এই আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবে পুরস্কৃত হয়েছিলেন তিনি। ভারত সরকার ১৯৭২ সালে তাকে পদ্মশ্রী পুরস্কার প্রদান করে। কিন্তু জনসমক্ষে আসতে চান না বলে এই পুরস্কার তিনি গ্রহণ করেননি। ২০১২ সালে তাকে পশ্চিমবঙ্গ সরকারের সর্বোচ্চ সম্মাননা বঙ্গবিভূষণ প্রদান করা হয়।

আরআর

ঢাকা মেইলের খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

সর্বশেষ
জনপ্রিয়

সব খবর