জেরিন খান এসেছিলেন সালমান খানের শ্যুটিং দেখতে। তখন সুভাষ ঘাইয়ের ‘যুবরাজ’ সিনেমায় কাজ করছিলেন কিং খান। জেরিনের চেহারায় সদ্য প্রাক্তন হওয়া প্রেমিকা ক্যাটরিনার মিল খুঁজে পান তিনি। ব্যস, মনে ধরে যায় তাকে।
দুধের স্বাদ ঘোলে মেটাতে পরবর্তী ‘বীর’ সিনেমায় অভিনয়ের জন্য জেরিনকে অভিনয়ের প্রস্তাব দেন। বলিউড রাজার কাছ থেকে অভিনয়ের সুযোগ পেয়ে লুফে নেন জেরিন।
জেরিনের জন্য বলিউড অভিষেক স্বপ্নের হলেও বক্স অফিস সেই স্বপ্নের অপমৃত্যু ঘটায়। মুখ থুবড়ে পড়েছিল সিনেমাটি। তখন অনেক চলচ্চিত্র সমালোচক জেরিনের অভিনয়ের কঠোর সমালোচনা করেছিলেন। সমালোচক তরণ আদর্শ তো সরাসরি বলেই দিয়েছিলেন, গোটা ছবিতে জেরিনের মুখের অভিব্যক্তি ছিল একই রকম।
প্রথম ছবি ব্যর্থ হলেও থেমে থাকেননি জেরিন। চেষ্টা চালিয়ে গেছেন বলিউডে নিজের অবস্থান তৈরি করে নিতে। পরে ব্লকবাস্টার ‘রেডি’ ছবিতে একটি আইটেম গানে কোমর দুলিয়ে নজর কাড়েন তিনি। সেই সুবাদে ‘হাউজফুল’ ফ্র্যাঞ্চাইজির দ্বিতীয় কিস্তিতে অভিনয়ের সুযোগ পান। নাহ, এবার ব্যর্থ হননি জেরিন। ছবিটির বক্স অফিস রিপোর্ট ভালো ছিল। এরপর বেশ কয়েকটি হিন্দি ছবিতে অভিনয় করেছেন ঠিকই, কিন্তু দাগ কাটতে পারেননি। দক্ষিণী সিনেমাতেও কাজ করেছেন। সেখানেও সফল হননি।
ব্যর্থতার গণ্ডিতে আটকে থাকা জেরিন মনে করেন, বলিউডে সফল হতে হলে নেওয়ার্কিং খুব জরুরি। আর এই কাজটাই করতে পারেননি তিনি।
ভারতীয় গণমাধ্যমকে জেরিন বলেন, ‘আমার বলিউড ব্যর্থতার সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ কারণ হলো, এ ইন্ডাস্ট্রিতে টিকে থাকতে গেলে খুব স্পেশাল হতে হবে। সমস্ত ফিল্মি পার্টিতে যাওয়া বা লোকজনের সঙ্গে নেটওয়ার্কিং করতে জানাও জরুরি। এসব পার্টি যে আমাদের কাজের জন্য কতটা জরুরি— সেটাও দেখেছি। তবে কীভাবে নেটওয়ার্কিং করতে হয়, তা ক্যারিয়ারের গোড়ায় জানতাম না।’
তিনি আরও বলেন, ‘আজকালের ট্রেন্ডই হলো, সকলের বন্ধু। আর সকলেই নিজেদের বন্ধুদের সঙ্গে কাজ করছেন। আমি কখনও ইন্ডাস্ট্রির কারও সঙ্গে বন্ধুত্ব পাতানোর চেষ্টা করিনি। ফলে কাজের সুযোগ হারিয়েছি।’
এ সময় প্রশ্ন রেখে জেরিন বলেন, ‘বলিউডে লোকজন যদি নিজেদের বন্ধুদেরই ছবিতে সুপারিশ করতে থাকেন, তবে আমাদের মতো মানুষ কীভাবে কাজ পাবেন?’
গত বছর একটি ওটিটি প্ল্যাটফর্মের জন্য অন্যরকমের কাজ করেছেন জারিন। নায়িকার খোলস ছেড়ে চরিত্রনির্ভর ‘হাম ভি একেলে তুম ভি একেলে’-তে মুখ দেখিয়েছেন। সমকামি নারী চরিত্রে অভিনয় করে প্রশংসা পেয়েছেন।
জেরিনের আকুতি, “প্রয়োজনে আমার অডিশন নিন। একটা সুযোগ দিন। ‘হাম ভি একেলে তুম ভি একেলে’তে আমার চরিত্রের ওপর বেশি জোর দেওয়া হয়েছে, তা ভালো লেগেছে। ওই ছবিতে আমি শুধুমাত্র হট, সুন্দর মুখ নই। আমি কী করতে পারি— তা দেখাতে পেরেছি।”
বলিউড সুন্দরীর দাবি, তাকে কেউ বলিউডে সুযোগ দিতে চান না। সবাই তাকে সুন্দর মুখ হিসেবেই চেনেন। এর বাইরে তাকাতে রাজি নন।
আরএসও

