একুশে পদকপ্রাপ্ত অভিনেতা আবুল হায়াতের জন্মদিন আজ। ৭৯ বছরে পার রাখলেন তিনি। তার কাছে জন্মদিন মানে নতুন জীবনের প্রথম দিন। জন্মদিনে তিনি কথা বলেছেন ঢাকা মেইলের সঙ্গে। জানিয়েছেন জীবনের উপলব্ধি, প্রাপ্তির কথা। সেই সঙ্গে বর্তমান সময়ের অভিনয়শিল্পীদের নিয়েও নিজের অভিমত জানিয়েছেন।
শুভ জন্মদিন...
ধন্যবাদ। প্রতিবছরই সময়ের চাকা ঘুরতে ঘুরতে জন্মদিন চলে আসে। আমার কাছে জন্মদিন মানে বাকি জীবনের প্রথম দিন মনে হয়।
আপনার কাছে জীবন মানে কী?
সবসময় আনন্দে থাকা। জীবনটাকে উপভোগ করতে হবে। আর আনন্দে থাকার একমাত্র উপায় হচ্ছে কাজ করা। এটাই আমি বিশ্বাস করি। এই বিশ্বাসের ওপর ভর করে আমি কাজ করে গেছি।
৭৯ বছরে পা দিলেন। দীর্ঘ জীবনে আপনার উপলব্ধির কথা জানতে চাই।
জীবনে আমার চাওয়ার থেকে বেশি পেয়েছি। খুব সীমিত চাওয়া ছিল আমার। এটাই আমার জীবনের সব থেকে বড় উপলব্ধি। এ জীবনে অনেক মানুষের ভালোবাসা পেয়েছি। মানুষ আমার অভিনয় পছন্দ করেন। জীবনের শেষদিন পর্যন্ত তাদের ভালোবাসা নিয়ে বেঁচে থাকতে চাই।

অভিনয় জীবনে কোনো অপ্রাপ্তি?
অপ্রাপ্তির কথা বললে অকৃজ্ঞের মতো কাজ হবে। আমার জীবনে প্রাপ্তির সংখ্যা বেশি। যা কাজ করেছি তার থেকে অনেক বেশি পেয়েছি।
এই সফলতার পেছনে জীবনে কার অবদান সব থেকে বেশি?
সব থেকে বেশি অবদান আমার বাবার। তিনি সংস্কৃতি জগতের মানুষ ছিলেন। অভিনয় করতেন না। একটি ক্লাবের সেক্রেটারি ছিলেন। সেখান থেকে আমার অভিনয়ের শুরু। বাবা আমাকে সবসময় অনুপ্রেরণা দিতেন। পাশপাশি মা ও অনুপ্রাণিত করতেন। পরবর্তী সময়ে আমার স্ত্রী পাশে থেকেছেন। সবসময় সাহস জুগিয়ে চলছেন এখনও।
অভিনয়ের পাশপাশি পরিচালনাও করেছেন। কোনটা উপভোগ করেন?
আমি পরিচালনা বেশি উপভোগ করি। আমার কাছে মনে হয়,পরিচালনায় সম্পূর্ণতা থাকে। তবে পরিচালনায় অনেক বেশি ভাবতে হয়, পরিশ্রম করতে হয়। সেকারণে খুব বেশি পরিচালনা করা হয়ে ওঠে না।

আপনাদের সময়ে টেলিভিশনে থিয়েটার থেকে অভিনয়শিল্পীরা আসতেন। এখন অনলাইন মাধ্যম থেকে অভিনয়শিল্পীরা আসছেন। এ বিষয়ে কী বলবেন?
এটা নিয়ে এখন কিছু বলাটাই বৃথা। নাটক এখন প্রাইভেট সেক্টরে চলে গেছে। টাকাওয়ালা মানুষরা প্রাইভেট সেক্টর পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণ করছেন। তাদের সাথে আছে চ্যানেল। তাদের চাহিদা মতো এখন সব পরিচালিত হচ্ছে। সুতরাং একজন পরিচালকের এখানে কিছুই করার থাকে না। এখন এখানে অনেক স্বজনপ্রীতি হচ্ছে ।
বর্তমান প্রজন্মের অভিনয়শিল্পীরা কেমন করছেন?
অনেকেই খুব ভালো অভিনয় করছেন। তবে এমন অনেক অভিনয়শিল্পী আছেন যারা স্বজনপ্রীতি আর গ্ল্যামারের কারণে অভিনয় করছেন। তাদের ভেতর দক্ষতার অভাব রয়েছে। যেহেতু তারা অভিনয়ে চলে এসেছেন সেহেতু তাদের অভিনয় শিখতে হবে। অভিনয়ের ওপর কর্মশালা করতে হবে। তাহলে অভিনয়ের ওপর ধীরে ধীরে দক্ষতা বাড়বে।
/আরএসও

