রাজধানীর গুলশানের হলি আর্টিজানে সন্ত্রাসী হামলারর ঘটনাকে উপজীব্য করে নির্মাতা মোস্তফা সরয়ার ফারুকী ‘শনিবার বিকেল’ তথা ‘স্যাটারডে আফটারনুন’ নামে একটি সিনেমা বানিয়েছিলেন। ছবিটি বিদেশে প্রদর্শিত হলে বেশ প্রশংসিত হয়। কিন্তু সেন্সরে জমা দিতেই বাধে বিপত্তি। দেশের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ণ করতে পারে, এমন আশঙ্কায় ২০১৯ সালের শুরুর দিকে সেন্সর থেকে ছবিটির ছাড়পত্র স্থগিত করা হয়।
সেসময় সেন্সরের এই সিদ্ধান্তের বিপরীতে আপিল করে ‘শনিবার বিকেলে’ র অন্যতম প্রযোজনা প্রতিষ্ঠান জাজ মাল্টিমিডিয়া। এরপর পেরিয়ে গেছে সাড়ে তিন বছর। সিনেমাটি নিয়ে কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি। আজও তাকে নিষিদ্ধাদেশ বয়ে বেড়াতে হচ্ছে। কয়েকদিন ধরেই ছবিটির সঙ্গে এমন আচরণে ক্ষোভ প্রকাশ করছেন ফারুকী।
বিজ্ঞাপন
এবার প্রতিবাদমুখর হলেন দেশের নির্মাতা ও অভিনয়শিল্পীগণ। সেন্সরের গ্যাড়াকল থেকে ছবিটির মুক্তি চেয়ে সরব হয়েছেন তারা। অমিতাভ রেজা চৌধুরী, শিহাব শাহীন, চয়নিকা চৌধুরী, মোস্তফা কামাল রাজ, রেদয়ান রনি, আশফাক নিপুণ, রায়হান রাফীসহ এ সময়ে আরও অনেক নির্মাতা সিনেমাটি মুক্তির পক্ষে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে নিজেদের মত প্রকাশ করেছেন।
‘আয়নাবাজি’ খ্যাত নির্মাতা অমিতাভ রেজা চৌধুরী সরব হয়েছেন সিনেমাটির মুক্তি চেয়ে। তিনি লিখেছেন, ‘শনিবার বিকেল মুক্তি পাক।
নির্মাতা শিহাব শাহীন সিনেমাটির সঙ্গে এমন আচরণে বেশ অসন্তুষ্ট। এ প্রসঙ্গে নিজের ফেসবুকে তিনি লিখেছেন, ‘শনিবার বিকেল’ সিনেমার সেন্সর ছাড়পত্র দেয়া হোক।
চলচ্চিত্র ও নাট্য নির্মাতা চয়নিকা চৌধুরী ‘শনিবার বিকেল’ দেখতে দীর্ঘদিন ধরে অপেক্ষা করে আছেন উল্লেখ করে লিখেছেন, সেই শুটিং চলাকালীন সময় থেকে ‘শনিবার বিকেল’দেখার অপেক্ষায় আছি যা সেন্সর বোর্ড আটকে দিয়েছে। এই সিনেমাটি বিদেশে অনেক প্রশংসিত হয়েছে।মনে হচ্ছে, এই জোয়ারে সিনেমাটি যেন মুক্তি পায়,প্রার্থনা।
বিজ্ঞাপন
‘হাওয়া’ খ্যাত নির্মাতা মেজবাউর রহমান সুমনও সিনেমাটির মুক্তি পক্ষে। তিনি এ প্রসঙ্গে লিখেছেন, আঁকো ফুল আঁকো প্রজাপতি। এঁকো না কখনও স্বদেশের মুখ, থ্যাবড়ানো গাল ভেঙ্গে যাওয়া মুখ!! ‘শনিবার বিকেল’ মুক্তি পাক।
সময়ের আলোচিত নির্মাতা রায়হান রাফিও মুখ খুলেছেন এ বিষয়ে। নেট দুনিয়ায় অল্প কথায় জানিয়েছেন নিজের মতামত। লিখেছেন, ‘শনিবার বিকেল’ মুক্তি পাক।
নির্মাতা অনিমেষ আইচ লিখেছেন, লাইভে এসে আত্মহত্যা দেখি, বি ডি আর বিদ্রোহ লাইভ দেখি, বিশ্বজিতকে প্রকাশ্য দিবালোকে কুপিয়ে মেরে ফেলতে দেখি, পি কে হালদারের দূর্নীতি তাও দেখি শান্ত দু’চোখে। একটা সিনেমা দেখতে গেলেই হয়তো আমাদের ঘুমিয়ে থাকা গতজন্মে মৃত আত্মা জেগে উঠবে। তাই দেখি না, দেখাতে পারি না । ‘শনিবারের বিকেল’ তিন বছর ধরে পড়ে আছে তিমিরে। সিনেমার সঙ্গে কেন এমন ফ্যাসিস্ট আচরণ?
নির্মাতা মোস্তফা কামাল রাজ ও রেদয়ান রনি মনে করেন ‘শনিবার বিকেল কারাগারে বন্দী আছে। অচিরেই তারা এর মুক্তি কামনা করে লিখেছেন, চলচ্চিত্র কারাগারের তালা খুলে যাক। ‘শনিবার বিকেল’ মুক্তি পাক
নির্মাতা আশফাক নিপুন সিনেমাটির সঙ্গে এমন বিমাতাসুলভ আচরণকে স্বৈরাচারিতা বলে মনে করেন। এর অবসান চেয়ে তিনি লিখেছেন, সংস্কৃতিতে স্বৈরাচার নিপাত যাক ‘শনিবার বিকেল’ মুক্তি পাক।
সিনেমাটিতে অভিনয় করেছেন বেশ কয়েকটি দেশের অভিনয়শিল্পী। এদের মধ্যে রয়েছেন জাহিদ হাসান, নুসরাত ইমরোজ তিশা, মামুনুর রশিদ, ইরেশ যাকের, ইন্তেখাব দিনার, গাউসুল আলম শাওন, নাদের চৌধুরী, ভারতের পরমব্রত চট্টোপাধ্যায়, প্যালেস্টাইনের ইয়াদ হুরানি প্রমুখ।
আরআর

