শুক্রবার, ২৯ মার্চ, ২০২৪, ঢাকা

কিশোর কুমার, জন্মদিনে শ্রদ্ধাঞ্জলি

বিনোদন ডেস্ক
প্রকাশিত: ০৪ আগস্ট ২০২২, ০১:১৮ পিএম

শেয়ার করুন:

কিশোর কুমার, জন্মদিনে শ্রদ্ধাঞ্জলি

মেধাবীদের কেউ কেউ কিছুটা খামখেয়ালি গোছের হন। নিজের মর্জিতে চলেন, জীবনযাপন করেন ইচ্ছামতো। তেমনই একজন ছিলেন উপমহাদেশের সঙ্গীতাঙ্গনের প্রবাদ পুরুষ কিশোর কুমার। মেজাজ যেদিন ভালো থাকত সেদিন নিজের ইচ্ছায় কণ্ঠে গান তুলে নিতেন। আর যেদিন মন ভালো থাকত না বা মুড আসত না সেদিন তাকে মাইক্রোফোনের সামনে হাজির করেন এমন সাধ্যি ছিল কার?

আজ ৪ আগস্ট এই কিংবদন্তি সংগীতশিল্পীর জন্মদিন। ১৯২৯ সালের এই দিনে মধ্যপ্রদেশের এক বাঙালি পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন তিনি। বাবা কুঞ্জলাল গঙ্গোপাধ্যায় ছিলেন একজন আইনজীবী। কুঞ্জলাল গঙ্গোপাধ্যায় ও গৌরী দেবীর কনিষ্ঠ সন্তান ছিলেন। তার পিতৃপ্রদত্ত নাম ছিল আভাস কুমার।


বিজ্ঞাপন


সংগীত কিশোর কুমারকে উপমহাদেশের বরেণ্যদের কাতারে নিয়ে এলেও তাকে নিয়ে তার পরিবারের ইচ্ছাটা সংগীত কেন্দ্রিক ছিল না। সেসময় বড় ভাই আশোক কুমার ছিলেন মুম্বাইয়ের ডাকসাইটে অভিনেতা। ইচ্ছা ছিল ছোট ভাই আভাসও সে পথে হাঁটবেন। কিন্তু কিশোর ক্যারিয়ার শুরু করেন গানের মানুষ হিসেবে। নাম লেখান বম্বে টকিজের কোরাস শিল্পী হিসেবে। সেইসঙ্গে পাল্টে ফেলেন নিজের নাম। আভাস কুমার গঙ্গোপাধ্যায় থেকে হন কিশোর কুমার।

প্রথমবার গান কণ্ঠে তুলে নেন ১৯৪৮ সালে। ‘জিদ্দি’ সিনেমায় প্লেব্যাকের মাধ্যমে যাত্রা শুরু হয় তার। পাশাপাশি অভিনয়ও করতেন তিনি। উপহার দিয়েছিলেন একাধিক হিট সিনেমা। কিন্তু গানের প্রতি টানটা ছিল বেশি। তাই ক্যারিয়ার হিসেবে বেছে নেন সংগীতকেই।

একজীবনে ২০০০ গানে কণ্ঠ দিয়েছেন এই গায়ক। তার মধ্যে অনেক গানই পেয়েছে জনপ্রিয়তার তকমা। এরমধ্যে ‘আমার মনের এই ময়ূর মহলে’, ‘আমার পূজার ফুল’, ‘এক পলকের একটু দেখা ’, ‘এ আমার গুরুদক্ষিণা’, ‘একদিন পাখি উড়ে যাবে যে আকাশে’, ‘এই যে নদী’, ‘চিতাতেই সব শেষ’, ‘হাওয়া মেঘ সরায়ে’, ‘কি আশায় বাঁধি খেলাঘর’, ‘কি উপহার সাজিয়ে দেব’, ‘তোমায় পড়েছে মনে’, ‘নীল নীল আকাশে’, ‘প্রেমের খেলা কে বুঝিতে পারে’, ‘শুনো শুনো গো সবে’, ‘সেদিনও আকাশে ছিল কত তারা’, ‘সেই রাতে রাত ছিলো পূর্ণিমা’ উল্লেখযোগ্য।

তার গানে ঠোঁট মিলিয়েছেন অমিতাভ বচ্চন, উত্তম কুমার, রাজেশ খান্না, সঞ্জীব কুমার, সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়সহ আরও অনেকে। সংগীত পরিচালকদের মধ্যে শচীন দেববর্মন, রাহুল দেববর্মন, গুলজার, গৌরীপ্রসন্ন মজুমদার, পুলক বন্দ্যোপাধ্য়ায়সহ অনেকেই নিয়মিত কাজ করতেন কিশোর কুমারের সঙ্গে।  


বিজ্ঞাপন


আপন কণ্ঠে সুরের যাদু তুলে কিশোর কুমার আবাস গড়েছেন সংগীতানুরাগীদের হৃদয়ে। নশ্বর দেহ থেকে প্রাণের অবসান ঘটলেও পেয়েছেন অমরত্ব। পাশাপাশি পুরষ্কার ও সম্মাননায় সিক্ত হয়েছেন তিনি। ৮ বার ফিল্ম ফেয়ার অ্যাওয়ার্ডসহ পেয়েছেন অসংখ্য সম্মাননা ও পুরস্কার।

বরেণ্য এই সংগীত ব্যক্তিত্ব ১৯৮৭ সালে ১৩ অক্টোবর সুরের তরী রেখে পাড়ি জমান অনন্তলোকে। কিন্তু থামেনি তার কণ্ঠে বিরাজমান পুষ্পক রথ। উড়ে বেড়ায় তা বাংলার আনাচে কানাচে। আজও সংগীতপ্রেমীদের হৃদয়ে ছড়িয়ে দেয় প্রশান্তি।

আরআর

ঢাকা মেইলের খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

সর্বশেষ
জনপ্রিয়

সব খবর