শুক্রবার, ১৯ ডিসেম্বর, ২০২৫, ঢাকা

তাকদীর: ঢাকার আন্ডারওয়ার্ল্ড, মার্ডার মিস্ট্রি উঠে এসেছিল যে কনটেন্টে 

বিনোদন ডেস্ক
প্রকাশিত: ১৮ ডিসেম্বর ২০২৫, ০৪:০৮ পিএম

শেয়ার করুন:

তাকদীর: ঢাকার আন্ডারওয়ার্ল্ড, মার্ডার মিস্ট্রি উঠে এসেছিল যে কনটেন্টে 

সালটা ২০২০, সারা বিশ্বে করোনা। অদ্ভুত এক অস্থির সময়, যেখানে বিনোদনের সুযোগ খুব একটা নেই। আবার অন্যদিকে বাংলাদেশের ওটিটির উত্থান। আবার এই ওটিটি নিয়ে ভালো-মন্দ, শ্লীলতা-অশ্লীলতা নিয়ে চলছে তর্ক বিতর্ক। 

ঠিক সেই সময় রিলিজ হয় এমন এক কনটেন্ট যা বদলে দেয় বাংলাদেশের বিনোদনের বা বলা যায় ওটিটি কনটেন্টের তাকদীর। বলছি, হইচই অরিজিনাল ‘তাকদীর’-এর কথা। আজ থেকে ঠিক ৫ বছর আগে অর্থাৎ ১৮ ডিসেম্বর মুক্তি পেয়েছিল সৈয়দ আহমেদ শাওকী পরিচালিত ‘তাকদীর’।


বিজ্ঞাপন


তাকদীরের ৫ বছর: বাংলা ওয়েব কনটেন্টে এক মাইলফলক

হইচইয়ে মুক্তির পর থেকে সিরিজটি দর্শকদের মাঝে ব্যাপক আলোচনার জন্ম দেয়। বাংলাদেশের ক্রাইম-থ্রিলার ও স্লো-বার্ন ঘরানার ড্রামা হিসেবে আন্তর্জাতিক দর্শকের কাছেও বেশ পরিচিতি পায় কনটেন্টটি।

গল্প, নির্মাণশৈলী ও পারফরম্যান্স সব মিলিয়ে ‘তাকদীর’ এখনও দর্শকপ্রিয়তার শীর্ষে। ঢাকার আন্ডারওয়ার্ল্ড, দুর্নীতি, এবং মানবিক সিদ্ধান্তের জটিলতা, মার্ডার মিস্ট্রির এই সবকিছুকেই দক্ষভাবে ফুটিয়ে তোলা হয় সিরিজটি।

এই সিরিজে অভিনয় করেছেন চঞ্চল চৌধুরী, সোহেল মন্ডল, সানজিদা প্রীতি, পার্থ বড়ুয়া, মনোজ কুমার প্রামাণিক, ইন্তেখাব দিনার, সমু চৌধুরীসহ আরও অনেকে।


বিজ্ঞাপন


সংশ্লিষ্টদের কথা

‘তাকদীর’-এর স্ক্রিপ্টটা যখন রেডি হচ্ছিল, গল্পটা ছিল বেশ আনকনভেনশনাল এবং ডার্ক। কিন্তু রিলিজের পর দেখা গেলো এটা মাস-অডিয়েন্সের ইমোশনকে টাচ করে। একটি ক্রাইম থ্রিলারকে মানবিক গল্পে রূপান্তর করার প্রসেসটা কেমন ছিল- এমন প্রশ্নে পরিচালক সৈয়দ আহমেদ শাওকী বলেন, ‘গল্প লেখা বা নির্মাণ কোনো সময়ই মাথায় আসেনি যে দর্শক কনটেন্টটা কেমনভাবে নেবে। কিন্তু আমার বিশ্বাস ছিল, যদি গল্প বলার প্রক্রিয়াটা সৎ হয়, তবে গল্পের কেন্দ্রীয় মানবিক আবেদন ঠিকই দর্শকদের কাছে পৌঁছাবে। আমরা তাকদীরে একটি ক্রাইম থ্রিলারের কাঠামো ব্যবহার করেছি বটে, কিন্তু তার মূলে ছিল মানুষের নিঃশব্দ যন্ত্রণা এবং পরিস্থিতির শিকার হওয়ার গল্প। আমার মনে হয়, সেই হিউম্যান এলিমেন্টটাই এই ডার্ক থ্রিলারটিকে এত বড় সংখ্যক দর্শকের কাছে গ্রহণীয় করে তুলেছে।’

সে সময় ট্র্যাডিশনাল মিডিয়ামের সুপারস্টার হয়েও ওটিটিতে এমন এক্সপেরিমেন্টাল কাজ করার ঝুঁকি কেন নিয়েছিলেন চঞ্চল চৌধুরী? কি কারণে এই প্রজেক্টে ‘হ্যাঁ’ বলেছিলেন তিনি-এমন প্রশ্নে চঞ্চল চৌধুরী বলেন, ‘আমি মনে করি, একজন শিল্পীর কাজ শুধু নিরাপদ চরিত্রে অভিনয় করা নয়; নতুন কিছু করার সাহস থাকাটাও জরুরি। যখন শাওকী আমাকে তাকদীর-এর গল্পটি শোনান, তখনই আমি কাজটার জন্য হ্যাঁ বলি। 

‘তাকদীর-এর গল্পটি ছিল থ্রিলার-ড্রাম কিন্তু এর মানবিক দিকটি আমাকে গভীরভাবে নাড়া দেয়। আমি কখনোই চরিত্র বাছাইয়ের ক্ষেত্রে মিডিয়াম দেখি না, দেখি গল্পটা কতখানি শক্তিশালী। তাকদীর-এর শক্তিশালী চিত্রনাট্য, শাওকীর ভিন্নধর্মী নির্মাণশৈলী এবং গোটা টিমের প্যাশন আমাকে নিশ্চিত করেছিল যে, এই ঝুঁকি নেওয়াটা বৃথা যাবে না। পাঁচ বছর পরও দর্শক যেভাবে এই চরিত্রটিকে মনে রেখেছে, তা শিল্পী হিসেবে আমাকে আনন্দ দেয়।’

সোহেল মন্ডলের জন্যও ‘তাকদীর’-এর জার্নিটা স্মরণীয়। মন্টু চরিত্রটা তার অভিনয়ের ক্যারিয়ারে কতটা বিশেষ তা জানিয়ে বলেন, ‘আমার কাছে তাকদীর কেবল একটি কাজ ছিল না, ছিল শেখার একটি বড় সুযোগ। মন্টু চরিত্রে অভিনয়ের জন্য আমাকে অনেক পরিশ্রম করতে হয়েছিল। বিশেষ করে চঞ্চল চৌধুরীর মতো অভিজ্ঞ অভিনেতার সঙ্গে কাজ করার অভিজ্ঞতা ছিল শিক্ষামূলক। মন্টু চরিত্রটি আমাদের দেখিয়েছিল, কঠিন পরিস্থিতিতেও বন্ধুত্ব এবং মানবিকতা কতটা গুরুত্বপূর্ণ। আজ পাঁচ বছর পর যখন পেছনে ফিরে তাকাই, মনে হয় ‘তাকদীর’ বাংলাদেশের ওয়েব কনটেন্টের ইতিহাসে যে ছাপ রেখেছে, তার ক্ষুদ্র অংশ হতে পারাটা আমার জন্য অনেক বড় অর্জন।’

তাকদীরের ৫ বছরপূর্তিতে হইচই বাংলাদেশের কান্ট্রি ডিরেক্টর সাকিব আর খান বলেন, ‘পাঁচ বছর আগে তাকদীর-এর মাধ্যমে আমরা শুধু একটি থ্রিলার নয়, বাংলাদেশের ওয়েব কনটেন্টের জন্য একটি নতুন মানদণ্ড তৈরি করেছিলাম। পরিচালক শাওকী এবং পুরো টিমের অসামান্য কাজের ফসল এটি। তাকদীর প্রমাণ করেছে যে, স্থানীয় গল্প বলার ক্ষমতা আন্তর্জাতিক স্তরের হতে পারে। একটি ফ্রিজার ভ্যান চালকের গল্প কীভাবে লক্ষ লক্ষ দর্শকের হৃদয় ছুঁয়েছে, তা হইচই-এর জন্য এক বিশাল গর্বের বিষয়। এই সফলতার পাঁচ বছর পূর্তিতে আমি টিমের সকলকে এবং আমাদের সব দর্শককে ধন্যবাদ জানাই; আপনারাই আমাদের এই যাত্রার আসল চালক।’

ঢাকা মেইলের খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

সর্বশেষ
জনপ্রিয়

সব খবর