বাংলাদেশের ব্যান্ডসংগীতের জনপ্রিয় শিল্পী সাইদুস সালেহীন খালেদ সুমন। সংগীতাঙ্গনে যিনি ‘বেজবাবা সুমন’ নামে পরিচিত। অর্থহীন ব্যান্ডের এই প্রধান ভোকাল এবং বেজিস্টকে নিয়ে বরাবরই একটু বাড়তি আগ্রহ ভক্ত শ্রোতাদের। কারণ তার মিউজিক ক্যারিয়ার ও ব্যক্তিজীবন বিচিত্র এবং ঘটনাবহুল। স্কুলজীবন পার হওয়ার আগেই ব্যান্ড শুরু করেন সুমন।
এসএসসি পরীক্ষার পরপরই ফিলিংস ব্যান্ডে যোগ দেন বেজিস্ট হিসেবে। ’৯০ থেকে ’৯৩ সাল পর্যন্ত ফিলিংস-এ ছিলেন। এরপর পর্যায়ক্রমে এইসেস, ইন ঢাকা, সুইট ভেনম, রক ব্রিগেড, জলি রজার, শব্দ, ওয়ারফেজ ব্যান্ডে বাজান।
বিজ্ঞাপন
১৯৯৭ সালে ওয়ারফেজে থাকাকালীন তার একক অ্যালবাম ‘সুমন ও অর্থহীন’ প্রকাশ হয়। অ্যালবামটি শ্রোতামহলে দারুণ সাড়া জাগায়। ’৯৯ সালে ওয়ারফেজ ছেড়ে ‘অর্থহীন’ নামে নতুন ব্যান্ড গঠন করেন। দ্রুততম সময়ে ব্যান্ডটি জনপ্রিয় হয়ে ওঠে।
ব্যান্ডের চারটি অ্যালবামের পাশাপাশি বেশ কিছু একক ও দ্বৈত অ্যালবাম করে শ্রোতাদের মন জয় করেন সুমন। ২০১১ সালে তার পাকস্থলীতে ক্যানসার ধরা পড়ে। দীর্ঘ চিকিৎসার মধ্য দিয়ে এক পর্যায়ে ক্যানসার জয় করে আবার গানে ফিরে আসেন। তবে বিপদ তার পিছু ছাড়েনি। এক সড়ক দুর্ঘটনায় মারাত্মকভাবে আহত হন। সবমিলিয়ে ৩৬ বার অস্ত্রোপচার হয় তার শরীরে।
এরপরও হার মানেননি তিনি। ফিরে এসেছেন গানে। সম্প্রতি মাছরাঙা টেলিভিশনের‘নাইনটিজ মিউজিক স্টোরি’ অনুষ্ঠানে সংগীতজীবনের বিচিত্র ঘটনা এবং অসুস্থতার সঙ্গে সংগ্রামের গল্প বলেছেন তিনি।
নব্বই দশকের স্মৃতিচারণ করতে গিয়ে তিনি বলেন, ‘এসএসসি পরীক্ষা শেষ হওয়ার পর এক বন্ধু আমাকে নিয়ে যান জেমস ভাইয়ের কাছে। জেমস ভাই আমাকে বেজ বাজাতে বলেন। একটু বাজিয়ে দেখানোর পর বলেন ফিলিংসে জয়েন করতে। বিষয়টা রীতিমতো বিস্ময়কর ছিল আমার জন্য।’
বিজ্ঞাপন
গভর্নমেন্ট ল্যাবরেটরি স্কুলে পড়ার সময় এক অনুষ্ঠানে ওয়ারফেজের কমলের বেজ বাজানো দেখে চমকে যান সুমন। সেই থেকে কমল তার অনুপ্রেরণা। বিভিন্ন ব্যান্ডে বাজানোর অভিজ্ঞতা, ফিতাওয়ালা ক্যাসেটের দিনগুলোর স্মৃতি, এলিফ্যান্ট রোডে আড্ডা, দাঁত দিয়ে গীটার বাজানো, বেজবাবা নামকরণসহ অনেক বিচিত্র গল্প বলেছেন তিনি এ অনুষ্ঠানে। রিয়াদ শিমুলের গ্রন্থনা ও এস এম হুমায়ুন কবিরের প্রযোজনায় অনুষ্ঠানটি প্রচার হবে ১৩ ডিসেম্বর, শনিবার রাত ১২ টায়।

