বাংলা সিনেমার কালজয়ী জুটি উত্তম কুমার ও সুচিত্রা সেন। সিনেমাপ্রেমীদের কাছে আজও সমাদৃত তারা। একসঙ্গে পর্দা ভাগ করে একের পর এক হিট সিনেমা উপহার দিয়েছেন। পর্দায় তাদের রসায়ন দেখে অনেকেই ভাবতেন বাস্তবেও একে অন্যের হৃদয়ের দায়িত্ব নিয়েছেন তারা। কিন্তু পর্দার পেছনে তাদের ছিল তুই-তোকারি সম্পর্ক, মহানায়কের ছোট ভাই তরুণ কুমারের কথায় উঠে এসেছে বিষয়টি।
সুচিত্রা সেন ছিলেন ছিমছাম ও পরিপাটি। নিজের চা নিজেই বানিয়ে খেতেন। শুটিং স্পটে থাকলে উত্তম কুমারের জন্যও বানাতেন। তরুণ কুমার বলেন, দুজনের ছিল তুই-তোকারি সম্পর্ক। হয়তো এমন হয়েছে কোনোদিন শুটিং থাকলে তারা মেকআপ রুমে গল্প করছেন। হঠাৎ সুচিত্রা সেনের চা খাওয়ার ইচ্ছা হয়েছে। উত্তম কুমারের কাছে জানতে চাইলেন, উত্তম তুই চা খাবি? উত্তমকুমার সম্মতি জানালেন। সুচিত্রা সেন বাইরের চা খেতে একদম পছন্দ করতেন না। সেজন্য গরম জল,চা পাতা,দুধ চিনি এইসব রেডি করে রাখা হতো। স্টুডিওতে তার জন্য আলাদা করে চা তৈরি হতো। চায়ের কাপ- প্লেটের ব্যাপারেও তিনি খুব খুঁতখুঁতে ছিলেন। টি পট, চায়ের কাপ, ডিশ দুধ চিনি সুন্দর করে একটা ট্রেতে নিয়ে আসে।
বিজ্ঞাপন
মহানায়কের অনুজের কথায়, সুচিত্রা সেন নিজের হাতে চা বানিয়ে উত্তম কুমারকে জিজ্ঞেস করতেন তার কতটা দুধ-চিনি লাগবে। চা তৈরির পর উত্তমকুমারের দিকে চা এগিয়ে কৌতুহলী দৃষ্টিতে প্রশ্ন, খেয়ে দেখ তো কেমন হয়েছে। বলা বাহুল্য এই মুহূর্তটা মহানায়ক ধরতে জানতেন। তিনি জানতেন চা যদি খারাপ হয়েছে বলেন তাহলে সুচিত্রা সেনের মুখের অভিব্যক্তি বদলে যাবে। কোনোদিন সত্যি সত্যি রসিকতা করার জন্য চায়ে চুমুক দিয়ে উত্তমকুমার বলতেন,ধুর এ চা মুখে দেওয়া যায় না। ব্যাস মুহুর্তের মধ্যে সুচিত্রা সেনের মুখ যেন আষাঢ়ের মেঘ। এইরকম অজস্র
তরুণ বলেন, সুচিত্রা সেন উত্তমকুমারকে বলতেন, তোকে আর একবার বানিয়ে দিই বল? সেই মুহূর্তে উত্তমকুমার নিজের প্রাণখোলা হাসি আর চাপতে পারতেন না। বলতেন, আরে না,তোর সঙ্গে এমনি মজা করছিলাম। তুই কি আজকাল মজা- টজাও বুঝিস না,তোর চায়ে চুমুক দিলেই মন তোফা। উত্তমকুমারের মুখে চায়ের প্রশংসা শুনে মন ভালো হয়ে যেত মহানায়িকার।

