সামাজিক মাধ্যমে দারুণ জনপ্রিতা শাম্মী ইসলাম নীলার। সোশ্যাল ইনফ্লুয়েন্সার হিসেবে রয়েছে তারকা খ্যাতি। অভিনয়ে পারদর্শী হলেও ‘মিস ওয়ার্ল্ড বাংলাদেশ-২০২৩’ পর্দায় নিয়মিত ছিলেন না। সম্পতি মুক্তি পেয়েছে তার অভিনীত ওয়েব ফিল্ম ‘ফার্স্ট লাভ’। সেই সূত্র ধরে গতকাল শুক্রবার ঢাকা মেইলের সঙ্গে ফোনালাপ জমেছিল নীলার।
‘ফার্স্ট লাভ’ মুক্তি পেল। কেমন সাড়া পাচ্ছেন?
বিজ্ঞাপন
আমার অভিনয়ে আসাটা সবাই খুব সুন্দরভাবে নিয়েছেন। এটা সবচেয়ে ভালো লাগছে। ভিউ-ও অনেক বেড়েছে। এত কম সময় এত মানুষ দেখবে ভাবিনি। রিলিজের কথা ছিল বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায়। কারিগরি ত্রুটির কারণে শুক্রবার আসে। আমি এবং টিমের অন্যরা ভাবছিলাম সময় বদলের কারণে সমস্যা হবে কি না। কেননা অনেকে ঘোষিত সময়ে ইউটিউবে চোখ রেখেছিলেন। কিন্তু দেখলাম প্রথম পাঁচ মিনিটে দশ হাজার মানুষ দেখেছে। এটা অবাক করার মতো ছিল। ক্রমশ ভিউ বাড়ছে। মানুষ পছন্দ করছে। সবকিছু মিলিয়ে ভালো লাগছে।

দর্শক হিসেবে আপনার কেমন লেগেছে ‘ফার্স্ট লাভ’?
আমার কাছে ভালো লেগেছে। কিন্তু দেখার সময় নিজের ভুলগুলো খুঁজে বের করা নিয়ে ব্যস্ত ছিলাম। কোন জায়গায় আরও ভালো যেত, কোন শটটা ভালো ছিল, কোথায় আরও ব্যতিক্রম হতে পারত— মাথায় এগুলো ঘুরছিল। তবে পরিবারের সদস্যদের প্রতিক্রিয়া দেখে মনে হলো তাদের অনেক ভালো লেগেছে।
বিজ্ঞাপন
‘মিস ওয়ার্ল্ড বাংলাদেশ’ হওয়ার কয়েক বছর হলো। অভিনয়ে এত দেরিতে কেন?
‘মিস ওয়ার্ল্ড বাংলাদেশ’ হওয়ার আগেও টেলিভিশনে টুকটাক কাজ করা হতো। হওয়ার পর বিভিন্ন সময় নাটক-সিনেমার প্রস্তাব এসেছে। কিন্তু শুরু করার মতো কিংবা নিজেকে যেরকমভাবে পর্দায় মেলে ধরতে চাই সেরকম গল্প পাইনি। তৌসিফ ভাইয়ার (তৌসিফ মাহবুব) সঙ্গে আগেও একটা কাজ হয়েছে। এবার ভাইয়া অ্যাপ্রোচ করলে আমি আমার ফ্যামিলি-ফ্রেন্ডস, পার্টনার— সবাইকে জিজ্ঞেস করি। তাছাড়া অভিনয়টা যেহেতু ছোটবেলা থেকেই পছন্দ সেহেতু ভাবলাম শুরু করা যাক। মানুষ পছন্দ করলে এবং ভালো কাজ পেলে আবার করব। এই কাজটি থেকে অনেক পজিটিভ রিভিউ পাচ্ছি। আগামীতে প্রত্যাশা থাকবে আরও ভালো কোনো কাজ আসুক। গতানুগতিক না, অল্প হলেও মানুষ যেন মনে রাখে এরকম কাজ করতে চাই। আমার কাছে কোয়ান্টিটির চেয়ে কোয়ালিটি গুরুত্বপূর্ণ।

আপনার স্বামী ও পরিবারের সদস্যদের প্রতিক্রিয়া কী?
ফ্যামিলির সবাই খুবই খুশি অ্যান্ড সাপোর্টিভ। তারা চায় বিভিন্ন রকম ক্যারেক্টারে আমি কাজ করি। কেননা তারা জানে আমি কতটা ভার্সেটাইল। নিজেও রোমান্টিক ক্যারেক্টারে আটকে থাকতে চাই না। আমারও বিশ্বাস আমি অনেক ভার্সেটাইল একজন মানুষ। আমার কয়টা পার্সোনালিটি মাঝে মাঝে গুনতে গুনতে নিজেই কাউন্টলেস হয়ে যাই। সেগুলো স্ক্রিনে এলে বুঝতে পারব আমার মধ্যে কী কী আছে।
নির্দিষ্ট করে শুধু আপনার স্বামীর প্রতিক্রিয়া জানতে চাই…
কাজটি নিয়ে সে খুব খুশি। সে আমার পার্টনার প্লাস বন্ধু। অভিনয়ের ওপর আমার কত আগ্রহ সেটা ছোটবেলা থেকেই দেখছে। এবার স্ক্রিনে দেখল। এটা অন্যরকম অনুভূতি। তার হাসি আমার কাছে সবচেয়ে বড় পাওয়া ছিল।

ক্যামেরায় না বাস্তবের অভিনয় কঠিন?
বাস্তবের অভিনয়টা ক্যামেরার চেয়ে বেশি কঠিন। কেননা বাস্তবে মানুষ যেন ধরতে না পারে সেই চাপ থাকে।
আপনি দেশে পার্টনার বাইরে। দীর্ঘদিন যোজন দূরত্বে থেকেও ভালবাসার এই চাষাবাদ কেমন?
আমার মনে হয় এটাই আসল ভালোবাসা। সেটা আছে বলেই আমরা এত দূরে থেকেও কাছাকাছি। ছয়-সাত মাস বা এক-দেড় বছর পর আমাদের দেখা হয়। এটা অন্যরকম এক অনুভূতি। যাদের হাজব্যান্ড বা পার্টনার বাইরে থাকেন তারা বুঝতে পারবেন আমি কোন জায়গা থেকে কথাগুলো বলছি। তবে ভালোবাসতে কাছাকাছি থাকা লাগে না। ভালোবাসলে সে দুনিয়ায় থাকুক বা না থাকুক, পাশে থাকুক বা না থাকুক আপনি ভেতর থেকে বোধ করতে পারবেন।
আপনার বিবাহিত। কাজের ক্ষেত্রে প্রতিবন্ধকতার সম্মুখীন হতে হয় এ কারণে?
বিষয়টি সেরকম না। তবে নিজে থেকে আমি অনেক মেইনটেইন করি। অনেক সিন যোগ-বিয়োগ করি। আমার কিছু বিষয় থাকে। সেগুলো পূরণ হয়েছে বলে কাজটি করা। যেহেতু আমার সংসার আছে অতএব চিন্তা করতে হবে কেউ যেন কোনোভাবে কষ্ট না পায়। তাছাড়া দর্শকরাও খুব সেনসিটিভ। ভালো কাজ দেখতে গিয়ে আবার ব্যথিত না হন— ওই দিকটাও মাথায় রাখতে হয়। তবে আমার হাজব্যান্ড খুব সাপোর্টিভ। অনেকের তো বয়ফ্রেন্ড পর্যন্ত সাপোর্টিভ থাকে না। আমার হাজব্যান্ড জানে আমি অভিনয় পছন্দ করি। এ নিয়ে তার সঙ্গে আলোচনাও হয়। অনেক সময় বলি তুমি একটা স্ক্রিপ্ট দাও। আমি অভিনয় করে দেখাই। সে বিষয়গুলোকে রেসপেক্ট করে এবং কখনও আমাকে বদলানোর চেষ্টা করেনি। এ কারণে আমিও চাই সম্মানের সঙ্গে সুন্দরভাবে ভারসাম্য বজায় রেখে চলতে।
![nila] nila]](https://cdx.dhakamail.com/media/images/2025November/nila]_20251129_190637685.jpg)
কার অভিনয় সবচেয়ে ভালো লাগে?
সবচেয়ে বেশি কাজ দেখেছি তৌসিফ মাহবুব ভাইয়া ও আফরান নিশো ভাইয়ার। মজা পাই নিশো ভাইয়ার অভিনয় দেখে। অনুপ্রাণিত হই তৌসিফ ভাইয়ার পরিশ্রম দেখে। তিনি অনেক পরিশ্রমী অভিনেতা। যেহেতু নিশো ভাইয়ার সঙ্গে কাজ হয়নি তাই ওনার সম্পর্কে এরচেয়ে বেশি বলতে পারছি না। যদি কখনও সুযোগ হয় চেষ্টা করব নিশো ভাইয়ের সঙ্গে ভালো কিছু করার।
আরআর

