উপমহাদেশের কিংবদন্তি সংগীতশিল্পী রুনা লায়লা। সংগীত জীবন শুরুর দিকে প্রস্তাব পেয়েছিলেন পাকিস্তান, ভারত ও বাংলাদেশের চলচ্চিত্রে অভিনয়ের। কিন্তু গানের প্রতি ভালোবাসার টানে অভিনয়ের সঙ্গে সম্পর্ক গড়েননি। তবে ১৯৯৫ সালে নির্মাতা চাষী নজরুলের কথা ফেলতে পারেননি রুনা লায়লা। গায়িকার জীবন অনুপ্রেরণায় নির্মিত হয় ’শিল্পী’ সিনেমা। এই ছবিতে তার বিপরীতে অভিনয় করে নন্দিত অভিনেতা আলমগীর। জানেন কি, ’শিল্পী’ ছবিতে গায়িকার সঙ্গে জুটি বাঁধতে প্রথমে রাজি ছিলেন না আলমগীর!

বেসরকারি টেলিভিশন দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে এ কথা প্রকাশ করেন আলমগীর নিজেই। অভিনেতার কথায়, ‘আমাকে যখন চাষী ভাই (চাষী নজরুল) বললেন তখন ছবিটি করতে আমি অনীহা প্রকাশ করি। আমি বলেছিলাম, ওনার সঙ্গে (রুনা লায়লা) কী অভিনয় করব? চাষী ভাই এটা হবে না।’ ওই সাক্ষাৎকারে আলমগীরের পাশেই ছিলেন রুনা লায়লা। অভিনেতার কথার মাঝে নিজের কথা ছুড়ে দিয়ে গায়িকা বলেন, ’ভেবেছিলে হয়তো আমি তোমার থেকে ভালো অভিনয় করে বেরিয়ে যেতে পারতাম।’ রুনার কথা শেষ হতেই আলমগীর বলেন, ’তখন কাজের কারণে এত ব্যস্ত ছিলাম। দিনে দুইটা শিফট তো থাকত-ই। সকাল ৬ টা থেকে রাত ১০টা পর্যন্ত একজন পরিচালকের কাজ করতাম। রাত ১০টা থেকে রাত ২টা অন্য একজন পরিচালকের। এভাবে কাজ করতাম।’

বিজ্ঞাপন
কথার সূত্র ধরে তিনি যোগ করেন, ‘তখন এই সিনেমার সঙ্গে যুক্ত হলে তার (রুনা লায়লা) মতো এমন পার্সোনালিটির মানুষকে সেটে বসিয়ে রাখতে হবে। এরকম অনেক কিছু চিন্তা করে ছবিটির প্রস্তাব ফিরিয়ে দিয়েছিলাম। পরে চাষী ভাই (চাষী নজরুল ইসলাম) আমাকে রাজি করাতে অনেক চেষ্টা করলেন। তারপর একদিন রুনা লায়লা আমাকে ফোন করেছিল। আমাকে বলল, আপনি কেন করবেন না? আমি বললাম, আচ্ছা যান আমি করব। আপনি যখন ফোন করেছেন তো ছবিটি করে দেব। শত কষ্ট হলেও করব। ছবিটি করে বেশ ভালোই লেগেছে। আর চাষী ভাই ভীষণ ফূর্তিবাজ লোক। তিনি হৈ হুল্লোড় করে কাজ করতেন৷ এটাই (শিল্পী) চাষী ভাইয়ের সঙ্গে আমার প্রথম সিনেমা।’

‘শিল্পী’ সিনেমায় অভিনয় করার অভিজ্ঞতা প্রসঙ্গে রুনা লায়লা বলেন, ”সিনেমা করে ভালো লেগেছে। নতুন একটা অভিজ্ঞতা হয়েছিল। কিন্তু অভিনয় খুবই কঠিন। যখন থেকে গান করছি তখন থেকেই পাকিস্তান, ভারত এবং বাংলাদেশের অনেক সিনেমায় কাজের প্রস্তাব পেয়েছি। তখন কাজ করিনি বলেছিলাম, গান নিয়েই থাকব। এক পর্যায়ে চাষী নজরুল ইসলাম ভাই অনেক রিকোয়েস্ট করলেন। একটা সিনেমা করেন। আপনার জীবনের ওপর নির্ভর করে সিনেমাটা করব। ছবির নাম দেব ’শিল্পী’। ওনার কথা শুনে বললাম আচ্ছা ঠিক আছে করি। সিনেমায় আলমগীর সাহেব আমার বডিগার্ড ছিলেন। খুব রুক্ষ স্বভাবের বডিগার্ড।”
ইএইচ/আরআর

